কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নে করোনার টিকা ক্যাম্পের ভ্যাকসেনেটর ও স্বেচ্ছাসেবকদের কয়েক লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে করোনার ভ্যাকসিন ক্যাম্পের জন্য ভ্যাকসেনেটর ও স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। বরাদ্দ অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিয়নের সাবেক ৩ টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডের ৮ টি ইউনিটে ২ জন করে ভ্যাকসেনেটর ও ৩ জন করে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে। তাহলে ইউনিয়ন প্রতি ১ম ডোজ এবং ২য় ডোজ মিলে ১৬ টি সেশনে ভ্যাকসেনেটরের ডিউটি করবে ৯৬ জন এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ডিউটি করবে ১৪৪ জন। এভাবে উপজেলার ১২টি ইউণিয়নে মোট ভ্যাকসেনেটর হিসেবে ডিউটি করবে ১ হাজার ১৫২ জন ও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ডিউটি করবে ১ হাজার ৭২৮ জন। ফলে বরাদ্দ অনুযায়ী প্রতিটি ডিউটিতে ৫০০ টাকা হারে ভ্যাকসেনেটররা পাবেন ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং স্বেচ্ছাসেবকরা পাবেন প্রতিটি ডিউটিতে ৩৫০ টাকা হারে ৬ লক্ষ ৪ হাজার ৮শত টাকা। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, করোনার টিকা ক্যাম্পের অধিকাংশ জায়গায় সংশ্লিষ্ট ইউনিটের স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যান সহকারী দুই জন মিলে ক্যাম্প পরিচালনা করেছেন। অথচ কাগজে কলমে প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি ইউনিটে ৩ জন করে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেখিয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা লুটপাট করা হয়েছে। আরো জানা যায়, উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নে আবেদা খাতুন, কয়লা ইউনিয়নে শিরিনা খাতুন, দেয়াড়া ইউনিয়নে নাসিমা খাতুন ও মনোয়ারা খাতুন, কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নে কোন পরিবার কল্যান সহকারী নামে কেউ না থাকলেও ওই সমস্ত ভূয়া ভ্যাকসেনেটর নাম দেখিয়ে টাকা লোপাট করা হয়েছে। এ দিকে স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের করোনা ভ্যাকসিন ক্যাম্পের কোনো টাকা বরাদ্দ না থাকলেও এ সমস্ত টাকা করোনা টিকা সংশ্লিষ্ট সকলে মিলে ভাগ বাটোয়ার করে নিয়েছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে যে সমস্ত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা করোনা ভ্যাকসিনের কাজ করেছেন অধিকাংশ কর্মীরা জানিয়েছেন কোন স্বেচ্ছাসেবক না নিয়েই তাঁরা স্বেচ্ছাসেবকদের টাকা ভাগ করে নিয়েছেন। এমনকি তাঁরা সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট এ বিষয়টি তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান। এ বিষয়ে ইপিআই টেকনেশিয়ান কাজী নাজমুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সকলের টাকা স্বাস্থ্য সহকারীদের নিকট বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা কি করেছেন সেটা তারা ভাল বলতে পারবেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান জানান, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা না। তবে আপনার মাধ্যমে জানলাম বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা: হুসাইন শাফায়েত এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এখন জরুরী কাজে কর্মস্থলের বাহিরে থাকায় এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। তবে আসার পরে বিসয়টি শুনে বলতে পারব।