কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় নিজ মেয়েকে ঘরে আটকে জানালার সাথে দুই হাত বেঁেধ নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে পাশের লোকজন ছুটে এসে ওই দৃশ্য দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে তাৎক্ষনিকভাবে থানা পুলিশ ও কলারোয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মরত সদস্যরা যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ওই ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে মেয়েটিকে হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে কলারোয়া পৌর সদরের মির্জাপুর গ্রামে। এলাকাবাসী যায়, ওই গ্রামের রফিকুজ্জামানের স্ত্রী সদ্য অবসর প্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিকা আফরোজা খাতুন (৬০) ও তাঁর একমাত্র মেয়ে মৌমিতা খাতুন (৩০) দুই তলা বিশিষ্ঠ একটি বাড়ীতে দীর্ঘ দিন যাবত বসবাস করে আসছিল। গত ২/৩ দিন ধরে ভূতুড়ে বাড়ীটির ভেতর থেকে তালাবদ্ধ রেখে ওই শিক্ষিকার একমাত্র মেয়েকে ঘরে আটকে তিনি অমানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকেন। এক পর্যায়ে গত গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর ঘরের মধ্যে মেয়েটির দুই হাত জানালার সাথে বেঁধে নির্যাতন চালাতে থাকে। এ সময় মেয়েটির ডাক চিৎকার শুনে তারা পাশের বাড়ীর লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ওই স্থানে পৌঁছে প্রথমে বাড়ীতে ঢুকতে ব্যর্থ হয়। পরে কলারোয়া ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভির্সের কর্মরত সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসার পর ওসি নাছির উদ্দীন মৃধার নেতৃত্বে এস,আই রঞ্জন কুমার, এস,আই আশিক হোসেন, এ,এস,আই সেলিম রেজা ও ফায়ার স্টেশান ইনচার্জ অপু বিশ^াসসহ সঙ্ঘীয় সদস্যরা প্রায় আড়াই ঘন্টা রুদ্ধশ^াস অভিযান চালিয়ে ঘরের ছয়টি দরজা ভেঙ্গে মেয়েটিকে দুই হাত জানালার সাথে বাঁধা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। একই সাথে মেয়েটির মা আফরোজাকে আটক করে। নির্যাতনের শিকার মৌমিতা জানান, তাকে প্রায় সময় এভাবে শারীরীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করে তার মা। ওই দিন মোবাইলে কথা বলায় তাকে এভাবে বেঁে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত নির্যাতনের শিকার মৌমিতার মা আফরোজা খাতুন জানান, আমার মেয়ে জিনের দৃষ্টি রয়েছে। তাকে জিন ঝাড়ানোর জন্য এভাবে বেঁেধ সমস্ত শরীরে তেল মাখাচ্ছিলাম। এছাড়া আর কিছু না। কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ নাছির উদ্দীন মৃধা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক আমরা থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদেরকে ( মা- মেয়েকে) উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দুই জনকেই মানসিক প্রতিবন্ধি মনে হয়েছে। বিধায় তাদেরকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। উলেখ্য,আফরোজা খাতুন ২০১৫ সাল থেকে স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় তিনি এবং তার মেয়ে এই বাড়ীতে বসবাস করতেন। তাঁর শ^শুর বাড়ী যশোর জেলার শার্শা উপজেলার পাঁচ কায়বা গ্রামে। তিনি কলারোয়ার কয়লা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তাঁর স্বামী এখন প্যারালাইজড হয়ে গ্রামের বাড়ীতে থাকেন।