কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি ॥ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ঢাকা নবাব বিরিয়ানি হাউজের বিরিয়ানি খেয়ে তিন গ্রামের নারী-শিশুসহ ২৫০ জনের অধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের তাৎক্ষনিকভাবে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা অবস্থায় যাদের অবস্থা আশংঙ্খাজনক তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়া কিছু অসুস্থ রোগী স্থানীয় ক্লিনিকেও ভর্তি হয়েছেন।এ ঘটনায় বিরিয়ানি হাউজের মালিক রবিউল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অসুস্থ্য রোগিরা হলেন- উপজেলার বাটরা,সিংহলাল ও শংকুর গ্রামের তানভির আহম্মেদ, লামিয়া খাতুন,তানিসা খাতুন, জিয়াউর রহমান, আব্দুল্লাহ, হযরত আলী, বিল্লাল হোসেন, আসমা খাতুন, আকছেদ আলী, সাদিয়া খাতুন, আবু হানিফা, মাসুদ রানা, সিরাজুল ইসলাম, খোকন, লালবানু, ফারাদুল ইসলাম, মুন্নী খাতুন, শিশু সামিয়া, আখিয়ারা, রোজিনা খাতুন,শিশু হিরা মনি, খাদিজা খাতুন, সেলিম হোসেন, রাজিয়া খাতুন, শিশু তাজমিরা, তাজিমা খাতুন, রেহেনা খাতুন, আবির হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, ইকরামুল ও আব্দুল্লাহসহ ২৫০ জনের অধিক। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগি সিরাজুল ইসলাম, ইকরামুল হোসেন, মুন্নী খাতুন যথাক্রমে জানান, উপজেলার ২ নং জালালবাদ ইউনিয়নের সিংহলাল বাজারের ইউপি সদস্য আফতাবুজ্জামানের দোকানে শনিবার (৬ জুলাই) বেলা ১০টা থেকে মাছের খাদ্য আগাতা ফিড কোম্পানীর এর বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলার সিংহলাল, শংকরপুর ও বাটরা গ্রামের ১২০ জন ঘের ব্যবসায়ী মাছ চাষী অংশ গ্রহন করেন। অনুষ্ঠান শেষে বেলা দেড়টার দিকে কলারোয়া বাজারের ঢাকা নবাব বিরিয়ানি হাউজ থেকে ১২০ প্যাকেট বিরিয়ানি এনে অংশ গ্রহন করা মাছ চাষিদের হাতে দেওয়া হয়। পরে চাষিরা ওই বিরিয়ানি বাড়িতে নিয়ে পরিবারের সকলে মিলে খায়। খাওয়ার দুই থেকে আড়াই ঘন্টা পরেই তাদের পেটে ব্যাথা,বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। পরবর্তীতে তারা অবস্থা বেগতিক দেখে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে একে একে কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেেেক্স ভর্র্তি হয়। আগাতা ফিস ফিডের ডিলার জালালাবাদের ইউপি সদস্য আফতাবুজ্জামান জানান, তাদের সম্মেলন শেষে কলারোয়া উপজেলার চৌরাস্তা মোড় ঢাকা নবাব বিরিয়ানি হাউস থেকে ১২০ প্যাকেট বিরিয়ানি নিয়ে অনুষ্ঠানের শেষে সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়। সন্ধ্যার পর থেকে একের পর এক ফোন আসতে থাকে বমি পেটে ব্যথা এবং পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তিনি বলেন, সম্মেলনে অংশ গ্রহন করাসহ তিন গ্রামের প্রায় আড়াইশর বেশি নারী, পুরুষ ও শিশু ফুড পয়জনিং এ আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের কলারোয়া সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে ওষুধ, স্যালাইন দেওয়া হয় এবং বর্থমান তাদের চিকিৎসা চলছে। কলারোয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় ডায়রিয়ার স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছিল না। একই সঙ্গে হাসপাতালে বেড খালি নেই। তার পরে অধিকাংশ রোগিদের ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমান তাদের অবস্থা অনেক ভালো। এদিকে, কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঢাকা নবাব বিরিয়ানি হাউজের মালিক রবিউল ইসলামকে আটক করে। পরবর্তীতে অসুস্থ রোগীদের অবস্থা দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ ঘটনায় কেউ থানায় এখন পর্যন্ত অভিযোগ দেয়নি।