কে এম আনিছুর রহমান, কলারোয়া (সাতক্ষীরা) থেকে \ শীতের শিশির ভেজা সকালে কুয়াশার চাদরে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় দিগন্ত জুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। উপজেলার বিস্তীর্ন মাঠের পর মাঠ যেন হলুদ বর্ণে ঘেরা এক সপ্নীল পৃথিবী। প্রান্তর জুড়ে উঁকি মারছে শীতের শিশির ভেজা সরিষা ফুলের দোল খাওয়া গাছগুলো। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুল শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ এক অপরুপ সৌন্দর্য। বসন্তের আগমনী বার্তা পেয়েই যেন প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ বরণ সাজে। চারপাশের মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণিল সমারোহ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পন এ অপরুপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মূহুর্ত। ভোরের বিন্দু বিন্দু শিশির আর সকালের মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যায় সেই ফুলগুলোকে। গত কয়েক বছর ধরে সরিষার তেলের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। অনেক কৃষকরা এ বছর আমন ধান কাটার পর পরই বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষ শুরু করেছেন। উপজেলায় কোথাও পতিত জমি পড়ে নেই। চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এখন শুধু ভালো ফলনের আশায় উপজেলা কৃষকরা রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কৃষকের পাশাপাশি বসে নেই কৃষি কর্মকর্তারাও। এদিকে চলতি রবিশস্য মৌসুমে কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দ্ওেয়ায় এবং সরিষা চাষের পরিবেশ অনুকূলে থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলর ১২টি ইউনিয়নে ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শুরুতেই সরিষা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আনাগোনা দেখা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। যথা সময়ে সরকারী পর্যায় থেকে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে মান সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে সরিষার বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হলেও মাঠ পর্যায়ে বেশ কিছু জমি চাষের উপযুগী না হওয়ায় কিছু কৃষক ঠিক সময়ে সরিষা বপণ করতে পারেনি। তবে উপজেলারদেয়াড়া,কেঁড়াগাছি,বোয়ালিয়া,ভাদিয়ালী,পাচপোতা,সোনাবাড়িয়া, চন্দনপুর ও চান্দুড়িয়া সবচেয়ে বেশি সরিষা চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবুল হোসেন মিয়া জানান, এ বছর কলারোয়ায় ব্যাপকহারে সরিষার চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে। সাথে সাথে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা পাবে বলেও তিনি আশা করেন।