কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া সনচিতা হোসেন সেজ্যোতি (১৩) নামের এক ছাত্রীকে গভীর রাতে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার (২৮ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে নিহতের মা লায়লা পারভীন বাদি হয়ে অজ্ঞাত নামে আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৪৫, তারিখ-২৮/৩/২০২২ইং। তবে হত্যার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনও এ হত্যা কান্ডের প্রকৃত ক্লু উৎঘাটন করতে পারেনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলারোয়া থানার উপ-পরিদর্শক সোহরাব হোসেন জানান, সোমবার ২৮ মার্চ স্থানীয় গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের মাষ্টার পাড়ার মাঠে আলাউদ্দিন সরদারের কুল বাগানের ড্রেন থেকে উপুড় করা অবস্থায় সেজ্যোতির মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। নিহত স্কুল ছাত্রী ওই গ্রামের মাষ্টার পাড়ার কৃষক সোহরাব হোসেন পলাশের দ্বিতীয় স্ত্রী লায়লা পারভীনের মেয়ে ও কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুলের ছাত্রী। নিহতের বাবা পলাশ হোসেন জানান, গত ১ বছর আগে প্রতিবেশী আলতাফ হোসেনের ছেলে কলারোয়া সরকারী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুর রহমানের সাথে তার মেয়ে সেজ্যেতির সক্ষতা গড়ে ওঠে । এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য ও থানা পুলিশের সহযোগিতায় মীমাংসা করা হলেও তার রেশ কাটেনি। তার ধারণা এরই জের ধরেই পরিকল্পিত ভাবে এই হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রোববার (২৭ মার্চ) এশার নামাজের পর থেকে তার মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। অনেক খোজাখুজির পরে মেয়েকে না পেয়ে রাত দেড়টার দিকে থানায় গিয়ে মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে বাড়ি ফিরে আসি। ভোরে খবর পান মেয়ের মৃতদেহ পার্শ্ববর্তী খেতের ড্রেনে পড়ে আছে। স্থানীয়রা বলেন, মেয়েটির বাবা পলাশ একাধিক বিবাহ করেছেন। নতুন করে তিনি আরও একটি বিয়ে করেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে । তার দ্বিতীয় স্ত্রী লায়লা পারভীনের মেয়ে আজ পরিকল্পিত ভাবে হত্যার শিকার হয়েছে। স্থাণীয়রা আরো বলেন, মেয়েটির সাথে প্রতিবেশী ওই ছেলের যে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তা এলাকাবাসী সবাই জানে। তারা একে অপরকে ভালোবাসতো। তারা একে অপরকে বিবাহ করতেও চেয়েছিল। এমনকি তারা একবার পালিয়েও গিয়েছিল। কিন্তু মেয়েটির পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেইনি। পারিবারিক কলহ নাকি সম্পর্কের টানাপোড়নে হত্যার শিকার অল্প বয়সী স্কুল পড়ুয়া এই মেয়েটি সেজ্যোতি। এ হত্যার বিচার চায় তারা। নিহত সেজ্যোতির প্রেমিক আব্দুর রহমানের বাবা আলতাফ হোসেন বলেন, আমার ছেলে কখনোই হত্যা করতে পারে না। অন্য কেহ হত্যা করে দোষ আমার ছেলের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করবে। তবে এই হত্যা কান্ডের সাথে যেই জড়িত থাকুক তার অবশ্যই শান্তি হওয়া উচিত। কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দীন মৃধা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তরে এ ঘটনার সাথে জড়িত কে বা কারা সেটা এখনও শনাক্ত করা যায়নি। তবে প্রকৃত ঘটনা উৎঘটন করার জন্য পুলিশের একাধিক টিম ৩-৪ ক্লু নিয়ে দিন-রাত কাজ করছেন। আশা করা যায়, খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ হত্যা কান্ডের সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারবো।