কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি \ বিশাল দেহের অধিকারী কালছে ফিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরুটি হাঁটে হেলে দুলে। তবে বেশ শান্তশিষ্ট। কাউকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে না। তিনবেলা কেবলমাত্র ভুষি, ভুট্টা ও খৈলসহ মোট ১০ থেকে ১২ কেজি খাদ্য কায়। সাথে থাকে মাঠের ঘাস, বাড়ির বিচলী। নাম তার রাজাবাবু। আর তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন ছোট একটি মিস্টির দোকানদার জাহাঙ্গীর হোসেন। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ৫নং কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বাকসা গ্রামের মৃত শওকত আলী ছেলে গ্রাম্য বালিয়াডাঙ্গা বাজারের মিস্টির দোকানদার জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়িতে রয়েছে এ ষাঁড় গরুটি। আদর করে নাম রেখেছেন ‘ রাজাবাবু’। তিন বছর ধরে লালন পালন করছেন তিনি। জাহাঙ্গীরের দাবি দুই দাঁতওয়ালা গরুটির ওজন হবে আনুমানিক ২৭ মণ। বিক্রির জন্য তিনি দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকা। গরুটি দেখতে বাড়িতে ভীড় করছে অনেকেই। আলাপকালে দোকানদার জাঙ্ঘীর হোসেন বলেন, পৈত্রিক সূত্রে তারা গরুর চাষ করেন। ছোটবেলা থেকেই গরু লালন পালন করেন। তিন বছর আগে তিনি পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে বাছুর গরুটি কিনেন। এরপর তিনি বাড়িতে খুব যতœ করে লালন পালন করতে থাকেন। তার সঙ্গে স্ত্রী মাহমুদা খাতুনও বেশ পরিশ্রম করেন। বড় হতে থাকে ষাঁড়টি। সেইসঙ্গে বড় হতে থাকে দোকানদার দম্পতির স্বপ্ন। গরুটি শান্ত প্রকৃতির হওয়ায় আদর করে তারা গরুটির নাম রাখেন রাখেন ‘রাজাবাবু’। জাহাঙ্গীর জানান, তিন বছরে রাজাবাবু এখন বিশাল দেহের অধিকারী হয়েছে। ফিতা দিয়ে গরুর দৈর্ঘ্য ব্যসার্ধ মেপে ধারণা, রাজাবাবুর ওজন অন্তত ২৭ মণ হবে। এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন ১৫ লাখ টাকা। কোনো হাটে নিয়ে নয়, বাড়ি থেকেই বিক্রির আশা করছেন তিনি। তবে ক্রেতা-বিক্রেতা দরাদাম করতে পারবেন। গত বছর কোরবানির আগে রাজাবাবুর ওজন ছিল ১৫/১৬ মণ। তখন দাম উঠেছিল ৪ লাখ টাকা। কিন্তু ওই দামে বিক্রি করেননি তিনি। তবে, এবার রাজাবাবুকে বিক্রির মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চান। জাহাঙ্গীর বলেন, রাজাবাবুকে লালন পালনে মোটাতাজা করতে তিনি কোনো মেডিসিন বা ইনজেকশন ব্যবহার করেননি, তিনবেলা সুষম খাবার দিয়েছেন। প্রতিদিন ১০-১২ কেজি খাবার খায় রাজাবাবু। খাবারের তালিকায় রয়েছে ভুষি, ভুট্টা ও খৈলসহ বিচলী,মাঠের ঘাস। এ ছাড়া অন্য খাদ্য রাজাবাবুর পছন্দ না। জাহাঙ্গীরের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন বলেন, তিনটি বছর ধরে রাজাবাবুকে আমার নিজের দুই কন্যা সন্তানের মতো লালন পালন করেছি। মানুষ সন্তানকে যেমন আগলে রাখে, আমিও তেমনভাবে আগলে রেখেছি রাজাবাবুকে। নিজের হাতে খাইয়েছি, যতœ করেছি। এখন বিক্রি করে দিতে হবে শুনে সন্তান হারানোর মতো কষ্ট পাচ্ছি। এদিকে, এত বড় ষাঁড় গরু দেখতে দোকানদার জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ভীড় করছেন অনেকেই। গরু দেখতে আসা গোয়ালচাতর গ্রামের ইমদাদুল ও তার বন্ধু ফরহাদ হোসেন বলেন, এখানে বিশাল গরু আছে শুনে দেখতে আসছি। এত বড় গরু এর আগে দেখিনি। দেখলাম বেশ বড়। ওজন শুনলাম ২৭ মণ। আশা করি দোকানদার কাকা গরুটি বিক্রি করে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. অমল কুমার সরকার বলেন, বড় গরুর চাহিদা আর আগের মতো নেই। আমরা কৃষককে এত বড় করতে উৎসাহিত করি না। জাহাঙ্গীরের বড় ষাঁড় গরুর বিষয়টি জানি। আশা করি কোরবানিকে সামনে রেখে তিনি গরুটি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন।