শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন

কালনা সেতুতে টোল হার নির্ধারণ

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

এফএনএস: নড়াইলের লোহাগড়ায় নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতুর টোলের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সেতুতে বাইসাইকেল ও ভ্যানের টোল দিতে হবে পাঁচ টাকা। এ ছাড়া বড় বাসের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৫ টাকা। সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বড় ট্রেইলার ৫৬৫ টাকা, তিন বা ততোধিক এক্সসেলবিশিষ্ট ট্রাক ৪৫০, দুই এক্সসেলবিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫, ছোট ট্রাক ১৭০, কৃষিকাজে ব্যবহৃত পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫, বড় বাস ২০৫, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫, মাইক্রোবাস, পিকআপ, কনভারশন করা জিপ ও রে-কার ৯০, প্রাইভেটকার ৫৫, অটোটেম্পো, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যান ২৫, মোটরসাইকেল ১০ এবং পায়েচালিত রিকশা, ভ্যান ও বাইসাইকেলের টোল পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। টোল নির্ধারণের বিষয়টি নিশ্চিত করে সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, গত ৩০ আগস্টের মধ্যে সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেতুতে লাইটিংয়ের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তারিখ ঘোষণা হলেই চ‚ড়ান্ত হবে উদ্বোধনের দিনক্ষণ। সেই অপেক্ষায় আছেন সেতু কর্তৃপক্ষসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ। মুখিয়ে আছেন যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন সংশ্লিষ্টরা। তিনি বলেন, কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয়পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভ‚মিকা রাখবে সেতুটি। তবে এতদিন কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদী ধারা বিছিন্ন ছিল। সেতু নির্মাণের ফলে সেই বিছিন্নতা আর রইলো না। কালনা সেতু চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভ‚মিকা রাখবে। ভারত, কলকাতা, আসামসহ দেশের মধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর, বেনাপোল ও নোয়াপাড়া নদীবন্দরের মধ্যে যোগাযোগের মাইলফলক রচিত হবে। নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের স¤প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কালনাঘাটে স্থাপিত নামফলক থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কালনা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ই¤প্র“ভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে সেতুটি নির্মিত হয়েছে। এদিকে, কালনাঘাট থেকে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশেপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে। যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু বলেন, কালনা সেতু চালু হলে যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, মাগুরাসহ পাশের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বদলে যাবে। খুব সহজেই রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যাতায়াত করা যাবে। আমরা কালনা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি। এদিকে, কালনা সেতু চালু না হওয়ায় নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, নোয়াপাড়া শিল্পনগর, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরসহ আশেপাশের কয়েকটি জেলার লোকজন পদ্মা সেতুর সরাসরি সুফলও পাচ্ছেন না। কারণ, কালনাঘাটে এসে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সব ধরনের যানবাহনকে। তাই এ অঞ্চলের সবাই তাকিয়ে আছেন কালনা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন-এমন প্রত্যাশা সবার।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com