আহম্মাদ উল্যাহ বাচ্চ ও ফরিদুল কবীর \ কালিগঞ্জের বসন্তপুর ও ভারতের হিঙ্গলগঞ্জ সীমান্ত নদীর ত্রিমোহনায় শুভ বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে দূর্গাউৎসব। দুই বছর পর বিজয়া দশমীতে মিলনমেলা উপভোগ করার জন্য বসন্তপুর বিজিবি ক্যাম্প এলাকায় কালিন্দী, ইছামতি ও কাঁকশিয়ালী নদীর ত্রি-মোহনায় গতকাল বিকেল থেকে ভীড় জমতে থাকে সকল ধর্মের নারী, পুরুষ, শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষের। বসন্তপুরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ছিল কঠোর নজরদারি। এর মধ্যেই অনেক আবেগ ও উচ্ছ¡াসে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে তিন নদীর মোহনায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা, কার্গো ও স্যালো ইঞ্জিনচালিত ও ছোট ছোট নৌকা। কিন্তু বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জনে ভাড়াশিমলা সার্বজনীন পুজা মন্দিরের একটি মাত্র প্রতীমা ছাড়া আর কোন প্রতীমা নদীতে নামেনি। প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকা গুলো নিজ নিজ সীমানার মধ্যে চক্কর দিতে থাকে। নিরাপত্তার কড়াকড়িতে মিলনমেলার আনন্দের কিছুটা কমতি হলেও যেটুকু প্রাপ্তি ঘটেছে তাতেই সবার চোখে মুখে ছিল আনন্দের তৃপ্তি। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম, কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুকোনুজ জ্জামান বাপ্পি, থানার ওসি হালিমুর রহমান বাবু, ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হকিম, উপজেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার মানুষ নদীর পাড়ে সমবেত হয়ে বিজয়া দশমীর আনন্দ উপভোগ করেন। উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি ব্যাংকার রনজিত সরকার বলেন, হিন্দু স¤প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে এবছর উপজেলার ১২ ইউনিয়নে ৫২টি মন্ডপে দুর্গাপূজার প্রতীমা তৈরী করা হয়। অধিকাংশ পূজামন্ডপে ধর্মীয় যাত্রাপালা, আরতি প্রতিযোগিতা, উলুধ্বনি ও শঙ্খবাজানো প্রতিযোগিতা, বস্ত্র বিতরণসহ নানা ধরণের অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে। বিজয়া দশমী উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে মন্ডপে মন্ডপে উপস্থিত ভক্তদের মধ্যে ছিল বিষাদের সুর। সকালে যাত্রামঙ্গলের মধ্যদিয়ে শুরু হয় মা দুর্গাকে বিদায়ের বার্তা। পঞ্জিকা মতে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে বিজয়া দশমী পুজা শেষ হয়। এরপর থেকে মায়ের পায়ে ফুল, বেল পাতা ও চন্দন দিয়ে আশীর্বাদ নেয় ভক্তবৃন্দ। এসময় মায়েরা মায়ের কপালে ছাড়াও একে অপরের কপালে সিঁন্দুর পরিয়ে দেন। এবছর দেবী দুর্গা গজে চড়ে মর্ত্যালোকে পিতৃগৃহে এসেছিলেন। আবার কৈলাশে স্বামীর গৃহে ফিরেছেন নৌকায় চড়ে।