কালিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ কালিগঞ্জ উপজেলার নাজিমগঞ্জ বাজারে সরকারি পেরিফেরি সম্পত্তির উপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান কালে সরকারি কাজে বাঁধা, এসিল্যান্ডসহ তার অফিসের কর্মচারীদের উপর হামলাসহ মারপিটের ঘটনায় অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তির নামে থানায় মামলা দায়েরের পর শনিবার রাতে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলো উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক সিদ্দিকুর রহমান (৪৫), শীতলপুর গ্রামের শেখ নুর আলীর ছেলে সাইদুর বস্ত্রালয়ের কর্মচারী বিল্লাল হোসেন (৩০) এবং একই গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে লেদ খোকন (৪৫)। আটককৃত আসামীদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। সরকারি কাজে বাঁধা প্রদান, সরকারি কর্মচারীদের ওপর হামলা, মারপিটের ঘটনায় ১৪ জন নামীয় এবং অজ্ঞাত নামা ৩০/৪০ জন ব্যক্তিদেরকে আসামি করে উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন থানায় মামলা দায়ের করে মামলা নং-৬। উল্লেখ্য উপজেলা পরিষদের সন্নিকটে নাজিমগঞ্জ বাজারে সাইদুর বস্ত্রালয়ের মালিক পক্ষ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাসের নির্দেশ অমান্য করে রাতারাতি অবৈধভাবে দোকান ভবনের ছাদ নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে। এর প্রেক্ষিতে গত ২১ নভেম্বর উপজেলা ভূমি অফিসের ১৬০৯, ১৬১১, ১৬১২ নং স্মারকে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে নেওয়ার জন্য সাইদুর বস্ত্রালয়ের মালিক সাইদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, গ্রাম্য ডাক্তার সিদ্দিকুর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ৬ ব্যাবসায়িকে লিখিত নোটিশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে নোটিশ অমান্য করায় গত ৩ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাস পুলিশ ফোর্স নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ ভবন অপসারনের সময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ব্যবসায়িরা ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ তার অফিসের কর্মচারীদের উপরে অতর্কিত হামলা ও মারপিট চালায়। এ ঘটনার পরপরই ঐ সকল ব্যাবসায়িরা ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের সামনে গিয়ে দেড় কোটি টাকা লুটপাট এবং ১০টা দোকানের তালা ভাঙার গল্প সাজিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও অপসারণ দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেয়। পর দিন ৪ নভেম্বর দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট শাহা, থানার অফিসার্স ইনচার্জ হাফিজুর রহমানসহ নাজিমগঞ্জ বাজারের সাইদুর বস্ত্রালয়ের অবৈধ স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। ওই সময় জনসমক্ষে সাইদুর বস্ত্রালয়ের মালিক ব্যাবসায়ি সাইদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম জনসমক্ষে তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপরও উপজেলা ভূমি অফিসের দায়ের করা মামলায় শনিবার রাতে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের দায়ের করা মামলায় তিন ব্যাক্তিকে আটক করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।