আহম্মাদ উল্যাহ বাচ্চু কালিগঞ্জ থেকে\ কালিগঞ্জে দুই সন্তানের জননীকে নির্যাতন শ্বাসরোধ করে হত্যার পরে ঘরে রেখে দরজায় দিয়ে পালিয়েছে স্বামী। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের নিকটবর্তী চরদাহ গ্রামের বাসিন্দা ছবিলার রহমানের বাড়ির ভাড়া বাসা থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। নিহতের নাম রোজিনা খাতুন (৩৩) উপজেলা সদরের বাজারগ্রাম রহিমপুরের শেখ আবু রায়হানের মেয়ে ও ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। ফুলতলা মোড়ের মুরগি বিক্রেতা ও বাজারগ্রাম রহিমপুরের আবু হাসান জানান, তার বোন রোজিনা খাতুনের সঙ্গে ২০০৭ সালে একই উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের শেখ রবিউল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। খুশী ও হাসি নামে তাদের দু’টি কন্যা সন্তান থাকাকালিন বোন ও ভগ্নিপতির মধ্যে আড়াই বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। সেখান থেকে রোজিনা তাদের বাড়িতে থেকে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও ছাত্রাবাসে কাজ করে নিজের খরচ চালাতো। খুশী রঘুরামপুর কলেজিয়েট স্কুলে নবম শ্রেণীতে ও হাসি ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। আবু হাসান আরো জানান, মোবাইল ফোনে পরিচয় সূত্রে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরের মোহনপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে বাসচালক শফিকুল ইসামের (৩৩) সঙ্গে রোজিনার বিয়ে হয় দেড় বছর আগে। বিয়ের পর থেকে তারা যশোর জেলার ঝিকরগাছায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতো। উপার্জন ভাল না হওয়ায় সংসারে অভাবকে ঘিরে তার বোন রোজিনা বাপের বাড়িতে ফিরে আসে পাঁচ মাস পূর্বে। কয়েকদিন পর শফিকুলও তাদের বাড়িতে এসে উপজেলা পরিষদের নিকটবর্তী চরদাহ গ্রামের বাসিন্দা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছবিলার রহমানের বাড়ি ভাড়া নেয়। সংসারে অভাব নিয়ে রোজিনা ও শফিকুলের মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া হতো বলে ছবিলার রহমানের অন্য ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে তারা জানতে পারেন। রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে ছবিলার রহমানের বাড়ির একজন ভাড়াটিয়া আম ব্যবসায়ি আব্দুর রব তাকে মোবাইল ফোনে জানায় যে, রোজিনাকে সকাল থেকে তারা বের হতে দেখেননি। দেখা যায়নি শফিকুলকে। শনিবার রাতে ঝড়বৃষ্টির সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল গন্ডগোলের আওয়াজ তারা শুনেছিলেন। রাত ১০টার দিকে থানা পুলিশ ও ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলামের সহায়তায় তারা দরজার ছিকল খুলে রোজিনাকে ঘরের মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। রোজিনার গলায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। স্বামী তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। পরে লাশ ঘরের ফেলে রেখে দরজায় ছিকল টেনে দিয়ে পালিয়ে গেছে। চরদাহ গ্রামের বাসিন্দা ছবিলার রহমান জানান, মাসিক এক হাজার ২০০‘শ টাকায় পাঁচ মাস যাবৎ রোজিনা ও শফিকুল তার বাসায় ভাড়া থাকতো। থানার ওসি মোহাম্মাদ গোলাম মোস্তফা জানান, ঘটনায় সত্যতা স্বীকার করে বলেন রাশ ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভাবের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে রোজিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ মেঝেতে ফেলে দরজায় ছিকল দিয়ে স্বামী শফিকুল পালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মামলার প্রস্তুতি চলছিল।