কালিগঞ্জ প্রতিনিধি \ কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের বালাপোতা গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী শীবলীলা মহোৎসব। (১২ এপ্রিল) শনিবার বিকেল ৩টায় মহোৎসব উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল। বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও সন্ন্যাসীর উপস্থিতিতে (ইউএনও) শীব মন্দিরে পূজা দেন এবং শীবের মাথায় জল প্রদান করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী ডা: অতীশ কুমার বাছাড়, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত কুমার বিশ্বাস, সাংবাদিক সুকুমার দাশ বাচ্চু ও ইশারাত আলী, চাম্পাফুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোড়ল, ইউপি সদস্য সাইলুজ্জামান সায়লু, মন্দির কমিটির সভাপতি প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক সুব্রত সরকার ও সুকুমার সরকারসহ অনেকে। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ইউএনওকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং মন্দির সংস্কার ও উন্নয়ন বিষয়ক বিভিন্ন দাবি জানানো হয়। তিনি মন্দিরের পাশে জেলা পরিষদের পুকুরে সন্ন্যাসীদের স্নানের জায়গার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং মন্দির সংস্কারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। উল্লেখ্য, ১৯৮০ সালে অলৌকিকভাবে শ্রী শ্রী বাবা তারকনাথের আবির্ভাবের স্মৃতিতে বালাপোতায় প্রতিষ্ঠিত হয় শীব মন্দির। এরপর থেকে প্রতিবছর চৈত্র মাসে এখানে পালিত হয় শীবলীলা মহোৎসব। শীব মন্দির ছাড়াও এলাকায় রয়েছে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির, কালী মন্দির, গঙ্গা মন্দির, লোকনাথ মন্দিরসহ একাধিক ধর্মীয় উপাসনালয়, যেগুলো ইউএনও ঘুরে দেখেন। বিকেলে তিনি ভক্তদের অংশগ্রহণে আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী ‘কাটা ঝাঁপ’ অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এসময় উলুধ্বনি, শঙ্খ ধ্বনি ও সন্ন্যাসীদের তপস্যা দর্শনে মুখরিত হয় পুরো এলাকা। হাজার হাজার নারী—পুরুষ, শিশু, যুবক—যুবতীসহ নানা বয়সী মানুষ এই আধ্যাত্মিক মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করেন। মেলা উপলক্ষে এখানে মাসব্যাপি বসে বিশাল বাজার, চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভক্তদের দান—অনুদানে নির্মাণাধীন নাট মন্দিরের কাজ চলমান রয়েছে। তবে সরকারি সহায়তা না থাকায় মন্দির কর্তৃপক্ষ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন। এই শীবলীলা মহোৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বালাপোতার মানুষের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং মিলনমেলার এক উজ্জ্বল নিদর্শন।