এফএনএস আন্তার্জাতিক ডেস্ক: কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এক নতুন সংকটে পড়েছেন সেখানে আটকে থাকা দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। ভয়াবহ সেই ঘটনার পর শ্রীনগর থেকে ভারতের বড় শহরগুলোতে ফ্লাইট ভাড়া এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বাড়তি চাহিদা, সীমিত ফ্লাইট এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এই ভাড়া বৃদ্ধিকে ‘‘অপ্রত্যাশিত ও চাপ সৃষ্টিকারী’’ বলে মন্তব্য করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও এয়ারলাইনের ওয়েবসাইটগুলোর তথ্যমতে, ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার খবর প্রকাশের পরপরই শ্রীনগর থেকে দিল্লি, মুম্বাইসহ বড় শহরগুলোর ফ্লাইটের টিকিট হু হু করে বিক্রি হয়ে যায়। ফ্লাইট বুকিংয়ের সময় এখন যাত্রীদের সামনে ভেসে উঠছে বার্তাÑ ‘‘সব ফ্লাইট ছাড়ার কাছাকাছি’’, ‘‘সব টিকিট বিক্রি’’, অথবা ‘‘দুঃখিত, কোনো ফ্লাইট নেই।’’
সাধারণ সময়ে ইন্ডিগোর শ্রীনগর-দিল্লি ইকোনমি ক্লাসের টিকিট পাওয়া যেত ৫ থেকে ৮ হাজার রুপিতে। এখন সেই টিকিটের দাম দাঁড়িয়েছে ১১ থেকে ১৩ হাজার রুপিতে। স্পাইসজেটেও একই অবস্থাÑ ভাড়া বেড়ে ১১-১২ হাজার। আর এয়ার ইন্ডিয়ার টিকিট মিলছে ২১ থেকে ২৩ হাজার রুপিতে, যা সাধারণ সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
শুধু দিল্লি নয়, মুম্বাই রুটেও একই চিত্র। এই অতিরিক্ত খরচ সামাল দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক পর্যটক, বিশেষ করে যারা স্বল্প বাজেটে ভ্রমণে গিয়েছিলেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ একযোগে কাজ শুরু করেছে। মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে দিল্লি ও মুম্বাই রুটে অতিরিক্ত চারটি ফ্লাইট যুক্ত করা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী আরও ফ্লাইট যুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ডিজিসিএ জানিয়েছে, অতিরিক্ত যাত্রীচাপ সামাল দিতে এয়ারলাইনগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যাতে তারা দ্রæত পদক্ষেপ নেয়। একইসঙ্গে বাতিল বা পুনঃনির্ধারিত ফ্লাইটের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত চার্জ যেন না নেওয়া হয়, সে বিষয়েও অনুরোধ করা হয়েছে।
উপত্যকায় আটকে থাকা পর্যটকরা বলছেন, তাঁরা ইতিমধ্যে আতঙ্কে আছেন, তার ওপর বাড়তি ফ্লাইট ভাড়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। কেউ কেউ নিরাপত্তার কারণে সড়কপথেও যাত্রার ঝুঁকি নিতে রাজি নন।
অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যেন অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়া হয় এবং পর্যাপ্ত ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হয়।
কাশ্মীর অতীতে একাধিকবার সহিংসতার শিকার হয়েছে, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে পর্যটন ধীরে ধীরে চাঙ্গা হচ্ছিল। এই হামলার প্রভাব সেই পুনরুত্থানে ছায়া ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।