শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৪ অপরাহ্ন

কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৯৮তম বিশেষ জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিছুর রহমান জানান, সিন্ডিকেট সভায় প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য প্রফেসর ড. এমএমএ হাসেমকে সভাপতি করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কুয়েটে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, শিক্ষক—শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা—কর্মচারীদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের তদন্তসাপেক্ষে ছাত্রত্ব বাতিল, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার, বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মামলা, আহতদের চিকিৎসা খরচসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সভায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ—উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম জানান, গত মঙ্গলবারের ঘটনায় জড়িত বহিরাগতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আর জড়িত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করবে। আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। গত কয়েকদিন ধরে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে ছাত্রদলের কমিটি গঠন নিয়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া চলছিল। সোমবার তারা ক্যাম্পাসে লিফলেট বিতরণ করে। গত মঙ্গলবার সকালে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করে। পরে উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করলে ছাত্রদল নেতা—কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। গত মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা ‘এই ক্যাম্পাসে হবে না, ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা’, ‘ছাত্র রাজনীতি ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘দাবি মোদের একটাই, রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস চাই’—সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলগুলো প্রদক্ষিণ করেন। পরে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে ধাওয়া—পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়, যা কুয়েটের বাহিরেও ছড়িয়ে পড়ে। নগরীর রেলিগেট, তেলিগাতিসহ আশপাশের বিএনপির নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের সঙ্গে এবং সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নেয়। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের অধিকাংশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্র হাতে বেশ কয়েকজনকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দেখা যায়। কুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে উপাচার্য, উপ—উপাচার্য ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টায় প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com