সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন

কুয়েট ঘিরে আবার উত্তেজনা, পুলিশ মোতায়েন

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

এফএনএস: কতৃর্পক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বন্ধ ক্যাম্পাসে প্রবেশের ঘোষণা দিয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় ক্যাম্পাসের বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শিক্ষার্থীরা যাতে বন্ধ ক্যাম্পাসে না ফেরেন, সে ব্যাপারে তৎপরতা শুরু করেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল রোববার বেলা ২টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের হলে প্রবেশ করবেন বলে ফেইসবুকে ঘোষণা দেন। ‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। গত শনিবার রাতে ওই পেইজে বলা হয়, “সকল কুয়েটিয়ানকে রোববার ঠিক দুপুর ২ ঘটিকায় কুয়েট মেইন গেটে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সবাই আইডি কার্ড বা লাইব্রেরি কার্ড সাথে রাখবো। “কো—অর্ডিনেট করার জন্য ক্যাম্পাসে যারা আছি এবং দুপুরের ভেতর চলে আসবো, সবাই ফর্মটা অবশ্যই ফিলাপ করবো।” গতকাল রোববার বেলা ২টার পর থেকে বিশ^বিদ্যালয়ের বন্ধ প্রধান ফটকের সামানে বেশ শিক্ষার্থীদের জড়ো হতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে আউডি কার্ড দেখিয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (নর্থ) আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, কুয়েটের পরিস্থিতি তারা অবগত আছেন। বিশ^বিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে দুটি গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা যাতে বন্ধ ক্যাম্পাসে না ফেরেন, সে ব্যাপারে বিশ^বিদ্যালয় কতৃর্পক্ষ একাধিক সভা, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি, বিজ্ঞপ্তি জারি ও অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে বার্তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে না পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে; পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ঠেকাতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে ক্যাম্পাসে ফিরতে না পারেন, সে জন্য কুয়েট কতৃর্পক্ষ নানা তৎরপরতা চালাচ্ছে। ২২ জন শিক্ষার্থীর নামে এবং অজ্ঞাত পরিচয় ১৫ থেকে ২০ জনকে মামলা দিয়ে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন দমানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কুয়েট প্রশাসন ও তদন্ত কমিটির ‘যোগসাজশে’ এই প্রহসন চলছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেছেন নগরের মহেশ^রপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোচেন আলী নামের এক ব্যক্তি। আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে খানজাহান আলী থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। গত শনিবার ওই মামলার বিষয়ে জানাজানি হয়। মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হোচেন আলী কুয়েট রোড দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পকেট গেটের সামনে গেলে আসামিরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করে এবং সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন। ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়; এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটিও করা হয়েছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ২৩ ফেব্রুয়ারি খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ^বিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com