কৃষ্ণনগর (কালিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ খাস খাল দখল করে লবণাক্ত পানি উত্তোলন করে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে। মিষ্টি পানি না দিতে পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খাল ধারের কৃষি ফসলের প্রায় ১০ একর জমি। উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের আদুয়া খালি খাস খালে এ অবস্থা বিদ্যমান। অভিযোগের পরি প্রেক্ষিতে সরেজমিনে দেখা যায় খালটিতে দীর্ঘদিন যাবত কৃষকেরা, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি আটকে রেখে বিভিন্ন ধরনের ফসলাদি উৎপাদন করতো। হঠাৎ স্থানীয় কৃষকদের চক্ষু ফাঁকি দিয়ে খালটির পশ্চিম পাশের অন্য একটি খাল থেকে জোয়ার ভাটার স্রোত যুক্ত লবন পানি উঠিয়ে দেওয়ায় মজুদ পানি লবণাক্ত হওয়ায় কৃষি ফসল করা সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এবিষয়ে স্থানীয় কৃষক মাসুম বিলাহ, মামুন, পরিমল হালদার, ইউনুস আলী দৈনিক দৃষ্টিপাত কে বলেন আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই খালটির পানি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফসলাদি আবাদ করে আসছি। হঠাৎ সাহাপুর গ্রামের জহির ঢালীর পুত্র প্রভাবশালী আব্দুল মাজেদ দখল করে নিয়ে পার্শ্ববর্তী লবণাক্ত খালের সাথে সংযোগ করেছে। ফলে সম্পূর্ণ খালের পানি লবণাক্ত হয়ে গেছে। আমরা যদি ফসল উৎপাদন না করতে পারি তাহলে পরিবার নিয়ে কি খেয়ে থাকবো। এ বিষয়ে কথা হয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন ও কৃষ্ণনগর ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য নূর হোসেন দৃষ্টিপাতকে জানান এ খাল থেকে কৃষকরা সেচের মাধ্যমে তাদের ফসলের প্রয়োজনীয় পানি দিয়ে থাকেন কিন্তু সেখানে লবন পানির মিশ্রণের কারণে কৃষকদের ফসল উৎপাদন হুমকির মুখে। এই লবণ পানির প্রভাবে খালের দু-পারে প্রায় ১০ একর জমির ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার ফসল ক্ষতির সম্মুখিন হবে বলে আমরা মনে করি। খোজ খবর নিয়ে জানাগেছে শাহাপুর ও কৃষ্ণনগর মৌজার আদুয়াখালি খালের ৮.৫ একর খাস খালের মধ্য দক্ষিন দিকের শাহাপুর মৌজার ১ থেকে ২ একর জায়গা স্থানীয় প্রভাব শালী আব্দুল মাজেদ ঢালী প্রভাব খাটিয়ে ভোগ দখল করে আসছে। খাস খালটি ১৯৭৯ সালে বন্দবস্ত পায় মানপুর গ্রামের সোবহান ও মুকুন্দ পুর গ্রামের শহর আলী। ১৯৮৪ সালে, শহর আলী ও সোবাহান দখলে আসলে স্থানীয় কৃষকেরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ১৯৯৪ সালে মামলার রায়ে জনস্বার্থে পুনরায় খালটি খাস খতিয়ান ভুক্ত করে। বিজ্ঞ আদালতে পুনরায় বাদী পক্ষ আপিল করলেও দীর্ঘ শুনানি শেষে সকল আপিল না মঞ্জুর করে, আদালত জনস্বার্থে খালটি খাস খতিয়ানভূক্তই রাখে। খাস জায়গা দখল ও লবণ পানি উঠানোর বিষয়ে দখলদার আব্দুল মাজেদ ঢালীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি দীর্ঘদিন যাবত এই যায়গাটি ভোগ দখল করে আসছি এখানে অল্প কিছু খাস যায়গা রয়েছে সেটি বাবদ শহিদ মাদানী জামে মসজিদে প্রতি বছরে ৫০০০ টাকা করে দিয়ে থাকি। লবণ পানি উঠানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন। খাস খাল দখলের বিষয়ে জয় পত্রকাটি ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা, জালাল উদ্দিন আহম্মেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন দখলের বিষয়টি আমার জানা নেই, যদি কেউ অবৈধ ভাবে দখল করে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। খালটি দখল মুক্ত ও লবণাক্ত পানি উত্তোলন বন্ধ রাখার জন্য উদ্বোতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক জন প্রতিনিধি সহ এলাকাবাসী।