এফএনএস বিদেশ: ইউক্রেন কৃষ্ণ সাগরের তীরে রাশিয়ার নৌঘাঁটির ওপর ড্রোন হামলা চালিয়েছে। রাশিয়া ক্ষয়ক্ষতি অস্বীকার করলেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সেনাবাহিনীতে আরো মানুষ যোগ দিচ্ছে বলে মস্কো দাবি করছে। গত কয়েকদিন একাধিক শহরের ওপর রাশিয়ার হামলার শিকারহবার পর ইউক্রেন আবার পালটা হামলা চালাতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেন ইরানে তৈরি ১৫টি শাহেদ ড্রোন ধ্বংস করেছে। অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী মস্কো থেকে প্রায় ১৯০ কিলোমিটার দূরে কালুগা এলাকায় ৬টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে ইউক্রেনের সমুদ্রভিত্তিক ড্রোন কৃষ্ণ সাগরের তীরে নভোরোসিয়েক শহরে রুশ নৌঘাঁটির ওপর হামলা চালিয়েছে। তবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, রাশিয়ার রণতরী সেই ড্রোন ধ্বংস করে দিয়েছে। রাশিয়ার রপ্তানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরের কাজকর্ম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পাইপলাইনের মাধ্যমে পেট্রোলিয়াম এনে রপ্তানির জন্য জাহাজে ভরার কাজ চালু আছে বলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি দাবি করছে। আপাতত রাশিয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার সকালে সেই শহরে বিস্ফোরণ ও বন্দুকের শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু গতকাল শুক্রবার সকালেই অধিকৃত ক্রাইমিয়া উপদ্বীপের উপর ইউক্রেনের দশটি সি-ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে রাশিয়া দাবি করছে। ডাতিসংঘের উদ্যোগে খাদ্যশস্য রপ্তানি সংক্রান্ত চুক্তি থেকে রাশিয়া স¤প্রতি বেরিয়ে আসার পর থেকে কৃষ্ণ সাগর ও আশেপাশের বন্দরে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে। রাশিয়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি বন্দর ও শস্যভাÐারের উপর হামলা চালিয়ে আসছে। ইউক্রেনও সি-ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার এক রণতরির উপর হামলা চালাচ্ছে বলে মস্কো অভিযোগ করছে। ইউক্রেনের ওপর হামলা চালাতে গিয়ে রাশিয়ার অসংখ্য সৈন্য হতাহত হওয়ায় নতুন করে আরো সৈন্য নিয়োগের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেন, সামরিক বাহিনীর নিয়োগ অভিযানে সাড়া দিয়ে গত জানুয়ারি থেকে ২ লাখ ৩১ হাজারের বেশি রুশ নাগরিক সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে বাধ্যতামূলক নির্দেশ না এলেও জনসাধারণের মধ্যে এমন আশঙ্কা বাড়ছে। উল্লেখ্য, গত বছর প্রায় তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে এভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর জন্য ডাকা হয়েছিল। সেই নির্দেশ এড়াতে হাজার হাজার পুরুষ দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার-এর সূত্র অনুযায়ী ক্রেমলিন ও রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীর সমালোচনা নিয়ন্ত্রণ করতে স¤প্রতি মিলিটারি বøগারদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের প্রকাশ্য সমালোচনা পোস্ট করা বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে অধিকৃত ক্রাইমিয়া উপদ্বীপের ওপর ইউক্রেনের হামলার মুখে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল ভালেরি গেরাসিমভের বিরুদ্ধে ক্ষোভে রাশ টানতে এমন নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা হয়েছে।