বিলাল হুসাইন কেশবপুর থেকে ফিরে ঃ গর্ভধারিনী মাকে বাগানে ফেলে রেখে ছেলেদের রাজকীয় জীবন যাপন রীতিমত এলাকা জুড়ে সমালচনার ঝড় উঠেছে। ঘটনাটি কেশবপুর উপজেলা বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের বাউশলা গ্রামে ঘটেছে। জানা গেছে বাউশলা গ্রামের মৃত্যু মোছাব্দী গাজীর স্ত্রী হাসিনা বেগম (৬৫) দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থ্যতার কারণে বাড়ীতে পড়ে থাকেন। স্বামী মোছাব্দী গাজী মারা যাওয়ার পূর্বে তার সংসারে ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে সন্তান রেখে যান। ৩ ছেলেরা হলেন যথাক্রমে মোঃ মশিয়ার রহমান, মোঃ মতিয়ার রহমান, মোঃ হাবিবুর রহমান এবং দুই মেয়ে মাজিদা খাতুন,ও সাজিদা খাতুন। ছোট ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। সরেজমিনে গিয়ে জানাগেছে গত ১ মাস পূর্বে হাসিনা বেগমকে তার ছেলে এবং পুত্রবধূরা মিলে মাকে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী একটি বাগানে গর্তের পাশে ফেলে রেখে যান। এ সময় হাসিনা বেগমেকে সেখানে থাকার জন্য একটি বিছানা বিহীন ভাঙ্গা খাট, একটি ছেড়া মশারী, একটি ভাঙ্গা বদনা, একটি স্টীলের প্লেট আর একটি নোংড়া প্ল্যাস্টিকের জগ রেখে যায়। দায় এড়াতে মাথার উপর টিনের ছাউনি যেনো তেনো করে দিয়ে দেয়। শোয়ার খাটের চারপাশ দিয়ে ছেড়া পলিথিনের বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। রাত দিন ২৪ ঘন্টা হাসিনা বেগম ঐ খাটের উপর একাকিত্ব ভাবে শুয়ে শুয়ে আতœচিৎকার করতে থাকে। প্রসাব পায়খানা লাগলে অসড়ে করে ফেলেন খাটের উপর। কিন্ত নিজের এমন ক্ষমতা নেই যে সে ময়লা নিজেই পরিস্কার করতে পারে। এমন বাস্তবতার পরিস্থিতে দূর্গন্ধযুক্ত প্রসাব পায়খানার উপর সার্বক্ষণিকভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় দূর্ভাগা অসহায় হাসিনা বেগমকে। ছেলে পুত্রবধূরা কাছাকাছি থাকলেও হাসিনা বেগমের বুক ভরা বেদনার আত্মচিৎকারে ডাক তাদের কান পর্যন্ত পৌছায় না। রাস্তা দিয়ে কেউ হেটে যেতে গেলে তাকে উদ্দেশ্যে করে পানি চেয়ে আর্তনাদ করতে থাকে। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসে না শুধু মাত্র ছেলে পুত্রবধূদের ভয়ে। এলাকাবাসী জানান হাসিনা বেগমের ছেলেরা অত্যন্ত মামলাবাজ কথায় কথায় তারা মামলার ভয় দেখায়। মামলা করার ভয়তে তাদের সাথে তর্ক পর্যন্ত কেউ করতে চাই না। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বর ও এলাকাবাসী বহুবার শালিষ মীমাংসা করলেও তাতে কোন কাজে আসেনি। এমতাবস্থায় উক্ত দূর্ভাগা অসহায় মহিলাকে তার নিজস্ব বাড়ীতে ফিরিয়ে দেওয়াসহ দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পুলিশ প্রসাশনের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।