কেশবপুর (যশোর) পতিনিধি ॥ কেশবপুরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিজয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারছে না আওয়ামী লীগ প্রার্থী। জনপ্রিয়তা আর জনসমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নৌকার প্রার্থীর চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে। তবে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করার দিকদিয়ে নৌকার প্রার্থীর কর্মীরা সকলের চেয়ে এগিয়ে আছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচার প্রচারনায় কেশবপুর উপজেলার সর্বস্তরে এখন প্রচার মুখর । তবে একের পর এক আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে চলেছে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কর্মীরা। ইতিমধ্যে একাধিক নৌকার প্রচার কর্মীর নিকট থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। কোনো প্রার্থীর পক্ষে উপজেলায় ২০ টি নির্বাচন পরিচালনার অফিস তৈরী করার সুযোগ থাকলেও নৌকার নির্বাচন পরিচালনা অফিসে তৈরি করেছেন ৫১ টি। আওয়ামী লীগের মনোনীত শাহীন চাকলাদার (এমপি) হ্যাভীওয়েট প্রার্থী হওয়ায় তাঁর প্রচার কর্মীরা বহুবিধ আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে চলেছে। কেশবপুর উপজেলার মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ১৭ হাজার ৯২৪। যশোর-৬ কেশবপুর আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী বিজয় লাভ করে আসছে। এরমধ্যে ‘৯৬ ও ২০০১ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী এ এস এইচ কে সাদেক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৭ এর ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ শেখ আব্দুল ওহাব, ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ইসমত আরা সাদেক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে এই আসনটি শুন্য হওয়ায় ২০২০ সালে জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার দলীয়ও মনোনিত প্রার্থী হিসাবে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরে তাঁর কর্ম পরিচালনায় উপজেলায় অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। উপজেলা ব্যাপী লাগামহীন নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগে অনেক বিতর্কিত রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাছাড়া নাশকতার মামলায় বিএনপি জামাতের নেতাকর্মী সহ উপজেলা বাসীর নিকট থেকে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যাপক অর্থ বানিজ্যের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সর্বপরি নৌকার রিজার্ভ ৮০ হাজার দলীয়ও ভোটের বড়ো একটা অংশ শাহীন চাকলাদারের হাত ছাড়া হতে চলেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেশবপুরে ৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রচারনায় এখন মাঠে রয়েছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শাহীন চাকলাদার এমপি(নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন(কাঁচি), উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক যশোর জেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগকারী সদস্য খন্দকার আব্দুল আজিজ (ঈগলপাখী) ও জাপা মনোনীত প্রার্থী জি এম হাসান (লাঙ্গল)। এবছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে ছিলো তাদের । কিন্তু গত ৩ বছরে শাহীন চাকলাদারের নামে লাগামহীন নিয়োগ বানিজ্যের অভযোগ উঠায় উপজেলা বাসী খুব ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে আছে তাঁর উপরে। তাছাড়া নৌকার প্রার্থী শাহীন চাকলাদার একজন বহিরাগত প্রার্থী এই অভিযোগ তুলে তাঁকে মেনে নিতে পারছে না উপজেলা বাসী। তাছাড়া ভোটারদের মধ্যে একটা অংশ এবারের সংসদ নির্বাচনে তাঁকে বর্জনকরতে চেয়েছেন। সবমিলিয়ে নৌকা বিজয়ের ধারাবাহিকতা ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। সে ক্ষেত্রে জনমত জরিপে স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচ এম আমির হোসেন সকলের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে। কেশবপুর আসনে জাতীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী শাহীন চাকলাদার, এইচ এম আমির হোসেন, খন্দকার আব্দুল আজিজ ও জিএম হাসান।