দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ হামলা চলছে তো চলছেই, দখলদার ইসরাইল বেপরোয়া গতিতে, বেহিসেবী পরিমানে গাজায় একের পর বোমা ফেলছে আর উক্ত বোমার আঘাতে, বিস্ফরনে প্রতিদিনই নিহত হচ্ছে অগনিত ফিলিস্তিনি। একেবল হত্যাকান্ড নয়, গণহত্যা বটে। বিশ্বের ইতিহাসে এমন ভাবে বিনা বাধায় মর্মান্তিক ভাবে হত্যাকান্ড ঘটনা ঘটানোর নজির কেবলমাত্র ইহুদীরাষ্ট্র ইসরাইলের পক্ষেই সম্ভব হলো। গতকালও উত্তর গাজার অন্তত পাঁচটি আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনীর বিমান সেনারা। বিশ্ব নেতারা আজ স্বস্তির ঢেকুর তুলছে তাদের সামনে এবং তাদেরই ইন্ধনে গাজার নিরীহ ফিলিস্তীনিদেরকে গণহত্যায় পরিনত করছে অথচ তারা আবার মানবাধিকারের কথা বলে গাজা যুদ্ধ বা হামাস নির্মূলই শেষ কথা নয় ইহুদীদের তারা চাইছে ফিলিস্তীনি নামক জাতিকে নিশ্চিহৃ করা, বিশ্ব মানচিত্র হতে এই জাতিকে মুছে দেওয়া। যতই দিন যাচ্ছে ততোই দখলদার বাহিনী তাদের হামলার তীব্রতা বৃদ্ধি করছে। কোথায় যাবে গাজা বাসি? তারা কি সত্যিকার অর্থে নিশ্চিহৃ হবে বিশ্বের পবিত্রভূমি জেরুজালেমের মাটিতে কি ফিলিস্তীনিদের বসতি থাকবে না? এমন প্রশ্ন যেমন মানবতাবাদী বিশ্বের শত শত কোটি মানুষের অন্তরে রেখাপাত করছে অনুরুপ ভাবে এমন প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে তাহলে ফিলিস্তিনিরা কোথায় যাবে? কে দেবে তাদের আশ্রয়। গাজার সর্বস্ব হারানো বাস্তচ্যুত ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় শিবির গুলো আশ্রয় নিলেও তাঁরা বাঁচতে পারছে না। আশ্রয় শিবির গুলোতে আশ্রয় গ্রহণকারী মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে চাওয়া ফিলিস্তিনিরাও বাঁচতে পারছে না দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলা সেখানেও চলছে তো চলছে। মৃত্যুর পরেও দাফনের ব্যবস্থা নেই। যেখানে হামলায় ফিলিস্তিনিদের মৃত্যু হচ্ছে সেখানেই নিথর, নিরব লাশ পড়ে থাকছে। কে তাদের লাশ তুলবে সকলেই তো মৃত্যুপথ যাত্রী। পৃথিবীর এমন কেন দেশ বা এলাকা কি আছে যে এলাকার অধিবাসিরা সর্বদা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত, বাঁচতে চাইলেও বাঁচতে পারছে না ফিলিস্তিনিরা। রাস্তায়, হাসপাতাল, আশ্রয় শিবির ও বসতবাড়ীর ধ্বংস স্তুপে পড়ে থাকা লাশ কুকুরে খাচ্ছে। এদৃশ্য আধুনিক সভ্যতা দেখছে এর চাইতে আর কত বিভষ্য দৃশ্য দেখবে পৃথিবী? ইসরাইল এর লক্ষ লক্ষ সেনা বাহিনী গাজায় যুদ্ধ করছে আর তাদের প্রধান শক্তি বিমান ও অত্যাধুনিক ট্রাঙ্কও সাজোয়া যান অন্যদিকে হামাস অস্ত্র কয়েক হাজার এবং তাদের অত্যাধুনিক অস্ত্র নেই কিন্তু ইহুদী সেনারা সর্বশক্তি নিয়োগ করেও হামাসদের নির্মূল করতে পারছে না, হামাস যোদ্ধারা কেবলমাত্র বিমান হামলা মোকাবিলা করতে হিমসিম খাচ্ছে, সামান্য অস্ত্র আর দেশ প্রেমকে সঙ্গী করে প্রতিরোধ হামলা চালিয়ে যাচেছ হামাস। প্রতিদিনই গাজার মাটিতে দখলদার সেনারা হামাস যোদ্ধাদের হাতে নিহত হচ্ছে এবং আহত হচ্ছে। দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর ঐতিহ্য আর মর্যাদার প্রতিক ট্রাংক গুলোকে ধ্বংস করে চলেছে। হামাস যোদ্ধারা। এদিকে দখলদার ইসরাইল এর দখল করে নেওয়া পশ্চিমতীরে ও হামাস যোদ্ধাদের তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করায় গতকাল তীব্র প্রতিরোধ হামলার মুখে পড়েছে ইসরাইলি সেনারা। পশ্চিম তীরে হামলা এবং পাল্টা হামলার ঘটনায় সেখানে বসবাসরত ইহুদীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসরাইল এর হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে মানবতা বাদীরা। এদিকে হামাসের হাতে বন্দী তিন ইসরাইলি নাগরিকের ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছে হামাস যোদ্ধারা। উক্ত ভিডিও বার্তায় তিন ইসরাইলি বন্দী তার দেশের সরকারের কাছে বিনীত ভাবে দাবী জানিয়েছেন তাদেরকে সমঝোতার মাধ্যমে মুক্ত করতে। ভিডিও বার্তায় যে তিন জন ইসরাইল বন্দী মুক্তির আকুতি জানায় তারা হলো নোয়া আরগামানি, নোশি শারাবাদি ও ইতাই সাভিরস্কি। তারা নিজেরা নিজেদের নাম পরিচয় প্রকাশ করে। এদিকে গাজায় ব্যাপক হামলার পর যোগাযোগ ব্যবস্থায় বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। গত ৪৮ ঘন্টা যাবৎ গাজায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন আছে। ধারনা করা হচ্ছে ইসরাইল গাজার নেট ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাকে অচল করে দিয়েছে। উল্লেখ্য ইতিপূর্বেও ইসরাইল বাহিনী গাজার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল। গাজায় ফিলিস্তিনি নয় জাতি হত্যা চলছে আর এ কারনে দখলদার বাহিনী নারী এবং শিশুদেরকেও হত্যা করছে। এদিকে লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের ক্ষেপনাস্ত্র হামলায় ইসরাইলের এক সেনা নিহত হয়েছে। ইসরাইলের অব্যাহত হামলার মুখে হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা প্রতিদিনই হামলা চালিয়ে আসছে গতকাল হামলায় এক সেনা ও তার মায়ের মৃত্যু ঘটেছে। ইসরাইলের পক্ষ হতে উক্ত সেনা ও তার মায়ের মৃত্যুর খবর স্বীকার করা হয়েছে। সাগরে হুতিদের অবস্থানের পরিবর্তন ঘটাতে ব্যর্থ হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন দশ দেশের জোট। গতকালও হুতি যোদ্ধারা ইসরাইলগামী ও ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নসরুল্লাহ হুতিদের উপর হামলার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদেরকে মুর্খের কাজ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে। তাদের দমন করা সম্ভব নয়, হুতিদের সংগ্রহে অত্যাধুনিক অস্ত্র বিধায় হামলা মোকাবিলা ও হামলা পরিচালনার যথেষ্ট পরিমান সক্ষমতা তাদের আছে। এদিকে মধ্য গাজায় ইসরাইল যুদ্ধ বিরতি পালন করলেও উত্তরে চলছে ভয়াবহ হামলা সেই সাথে হামাসের সশস্ত্র প্রতিরোধ। গতকালের হামলায় কয়েকটি পরিবারের সত্তর অধিক মৃত্যু ঘটেছে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিন আফ্রিকার আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার পক্ষে বাংলাদেশ ও সমর্থন জানিয়েছেন। অতিদ্রুত রায় প্রদান করা হবে বলে পশ্চিমা মিডিয়া জানিয়েছে। গতকাল হামাসের টেলিগ্রাম পোষ্টে জানানো হয়েছে গাজা ছাড়বে না। হামাস যোদ্ধারা, এমনকি গাজাকে ধুলায় মিশিয়ে দিলেও তারা গাজায় থাকবেন এবং দখলদারদের প্রতিহত করবেন।