এফএনএস আন্তর্জাতিক: যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গত ১০ দিনে প্রবল ঝড় ও ব্যাপক বৃষ্টিপাতে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং চার লাখের বেশি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। অঙ্গরাজ্যটি আরও তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য গত রোববার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগের আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তর ও মধ্যাঞ্চল এখনও ঘূর্ণিঝড়ের ‘অবিরাম মিছিলের’ পথে রয়েছে আর সপ্তাহের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ পরিস্থিতি বজায় থাকবে। মহাসাগর থেকে আসা ঘন জলীয়বাষ্পের বায়ুবাহিত একটি ব্যাপক ¯্রােত যাকে ‘বায়ুমণ্ডলীয় নদী’ বলা হচ্ছে এবং বোম্ব সাইক্লোন নামে পরিচিত ঘূর্ণিঝড়ের শক্তিসম্পন্ন নিম্নচাপ চক্র একসঙ্গে সক্রিয় থাকার ফলে গত সপ্তাহজুড়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় ধ্বংসাত্মক বন্যা ও রেকর্ড তুষারপাত হয়। সর্বশেষ ঝড়গুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উষ্ণ হয়ে ওঠা সাগর ও বায়ুমন্ডলীয় তাপমাত্রার ফলাফল হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রী ওয়েড ক্রোফুট বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড়গুলো অতিরিক্ত শক্তিসম্পন্ন হচ্ছে।” ব্যাপক প্লাবন সত্তে¡ও যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলগুলো দুই দশক ধরে খরায় ভুগছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তীব্র গরম, খরা ও বন্যা দেখা দিলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ‚গর্ভস্থ ও অন্যান্য জলাধারগুলোর ফের পরিপূর্ণ করতে বৃষ্টিবহুল বেশ কয়েকটি বছর দরকার। এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম জানান, গত ১০ দিনে আবহাওয়াজনিত বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অঙ্গরাজ্যটির কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সময় গত রোববার বিকাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় চার লাখ ২৪ হাজার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎবিহীন ছিল। আরেকটি ঝড় গতকাল সোমবার আঘাত হানবে বলে অনুমান করা হচ্ছে আর আরেকটি বায়ুমণ্ডলীয় নদী (চলতি ঋতুর ষষ্ঠটি) চলতি সপ্তাহের পরের দিকে হানা দেবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। “এর সবচেয়ে খারাপ পরিণতি সামনে দেখবো বলে বলে ধারণা করছি আমরা,” বলেছেন নিউজম। চলতি সপ্তাহের পরবর্তী ঝড়টি আরও বন্যার হুমকি বয়ে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ। মঙ্গলবারের মধ্যে সিয়েরা নেভাদা পর্বতমালায় দেড় মিটার পর্যন্ত তুষারপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। এসব পরিস্থিতি সামনে রেখে বুধবার জরুরি অবস্থা জারি করেছেন গভর্নর নিউজম।