বিলাল হুসাইন নগরঘাটা থেকে ঃ দুই বছর ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মৎস্য চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন নগরঘাটা ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষকরা। প্রাকৃতিক ক্ষতি পুষিয়ে উঠতেই তাই কৃষকরা বেছে নিয়েছেন বিকল্প পদ্ধতিতে ঘেরের ভেড়িতে সবজি চাষ। সে কারণে সবজি চাষে কৃষকদের কোন প্রকার আগ্রহের কমতি নেই। মাঠে প্রান্তরে কৃষকদের এমন অবলোকন দৃশ্যায়িত হচ্ছে প্রতিনিয়ত । চোখ খুললেই ঘেরের ভেড়িতে দেখা মেলে সবজি আর সবজি। প্রাকৃতিক এমন দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যায়। তাই ঘেরের ভেড়িতে সবজি চাষে কৃষকরা অনেকটা আগ্রহী হয়েছেন। উৎপাদনকৃত বিভিন্ন প্রজাতির সবজি মধ্যে রয়েছে যেমন উচ্ছে, ঢেঁড়স, প্যাচেঞ্জা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, সিম, খিরাই, বরবটি, তরমুজ, শসা ইত্যাদি। সকাল হলেই কৃষকদের সবজি উঠাতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় । তড়িঘড়ি করে সবজি উঠিয়ে কৃষকরা এলাকার বিভিন্ন হাটবাজার কিংবা পাইকারি আঁড়োতে নিয়ে যায়। এলাকাবাসী জানান এতদাঞ্চলের সবচেয়ে বড় পাইকারি কাঁচা বাজারের আড়ত হলো ধানদিয়ার মৌলভীবাজার। বাজারটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এই এলাকার নতুন করে পরিচিত লাভ করে। এছাড়া নগরঘাটা রাইস মিল মোড়, মিঠাবাড়ি উত্তরপাড়া ঈদগাহ মাঠ, ভৈরবনগর মোড় এবং কাপড়ডাঙ্গা মোড়ে বসে অস্থায়ীভাবে কাঁচা মালের বাজার। বিকল্প পদ্ধতিতে সবজি চাষ কৃষকরা কেমন লাভবান হচ্ছেন সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয় তালা উপজেলার কাপাসডাঙ্গা গ্রামের বাবু প্রহ্লাদ গাইনের সাথে তিনি দৈনিক দৃষ্টিপাতকে জানান মোট ৭ বিঘা জমির ঘেরের ভেড়িতে উচ্ছে চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে দামও পাচ্ছেন ভালো। তবে শেষ পর্যন্ত বাজার দর যদি এইভাবে ঠিকঠাক মত থাকে তাহলে এবছর উচ্ছে বিক্রি করে ভালো টাকা উপার্জন করা সম্ভব হবে। এছাড়া মিঠাবাড়ি গ্রামের উচ্ছে চাষী মোঃ মিঠু জানান ১০ বিঘা মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে তিনি হাইব্রিড জাতের করলা চাষ করেছেন। এই উচ্ছে চাষাবাদ করতে গিয়ে তার সর্বমোট খরচ হয়েছে আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো। তবে বাজার দর যদি এভাবে স্থিতিশীল থাকে তাহলে এবছর ঘেরের ভেড়ি থেকে লক্ষাধীক টাকার মত করলা বেচাকেনা সম্ভব হবে। তিনি জানান অল্প কয়েকদিনের মধ্যে অন্যান্য ঘের থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে করলা বাজারজাত করা সম্ভব হবে। কুমড়া চাষী মোঃ ইমদাদুল ইসলাম জানান এবছর তিনি সাড়ে তিন বিঘা ঘেরের জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কুমড়ার ধরণ এসেছে। প্রথম এক চালান কুমড়া বিক্রি করা হয়েছে। বাজারে দামও পাচ্ছেন ভালো। তার এই কুমড়া চাষ দেখে অনেকই চাষীরা আগ্রহী হচ্ছেন। এছাড়া কৃষক বাবু জানান বর্তমানে মিঠাবাড়ী এলাকায় প্রত্যেক ঘেরের ভেড়িতে কমবেশি সবজি চাষ হয়েছে। সবজি চাষে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় মৎস্য চাষের পাশাপাশি সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। অত্র ইউনিয়নসহ আশপাশ এলাকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই সবজি চাষ।