শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

ক্ষুধার যন্ত্রনায় অপরিপক্ক পশু মাংস খাচ্ছে ফিলিস্তীনিরা ঃ সাগরে অনড় হুতি যোদ্ধারা,

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইল গাজা যুদ্ধে চরম বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মুখে। হামাস যোদ্ধাদের হাতে একের পর এক সেনা নিহত হওয়ার পর যুদ্ধক্ষেত্রে রিতিমত এক অস্থিকর পরিস্থিতির মুখে, গত তিন দিনের ব্যবধানে ত্রিশ এর অধিক ইসরাইল তার সেনাকে হারিয়ে একাধিক এলাকা হতে পালিয়ে জীবনে বেঁচে আছে। একের পরএসনা নিহত হলেও ইসরাইল তা স্বীকার না করে ভূয়া সাফল্য কাহিনী প্রচার করছে। ইসরাইল যে কতটুকু বিপর্যয়কর পরিস্থিতি অতিক্রম করছে গতকাল দেশটির মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেছে। বৃটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু মন্ত্রীসভার বৈঠকে বলেছেন, গাজা যুদ্ধের জন্য আমাদেরকে চড়ামূল্য দিতে হচ্ছে যুদ্ধ মাঠে অগনিত সেনা মৃত্যু বরন করছে। গত শনিবার পুনরায় চৌদ্দ সেনা নিহত হয়েছে। ইতিমধ্যে হামাস সন্ত্রাসীদের হাতে আমাদের এক শত তিপ্পান্ন জন সেনা নিহত হয়েছে। ইসরাইলের স্বীকারোক্তি এবং হামাসের দাবী ভিন্ন, হামাস এর সশস্ত্র শাখা ক্যাম্পে ব্রিগেড জানিয়েছে আমাদের বীর যোদ্ধাদের প্রতিরোধ হামলায় ইসরাইলের ছয়শতাধীক সেনা নিহত হয়েছে। ইসরাইল এতোদিনে তার সেনাদের হত্যার কথা স্বীকার করেনি। শনিবার নিহত সেনাদের নাম ছবি প্রকাশ করেছে ইসরাইল। এদিকে ইসরাইলের বিমান হামলায় গতকাল আরও দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছে”। এই নিয়ে ইসরাইলের হাতে শতাধীক সাংবাদিক নিহত হলো। গাজায় ইসরাইলি পাঁচ বন্দীর মৃত্যু এবং জিম্মিদের মুক্তি করতে না পারায় গতকালও ইসরাইলের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। সাধারন ইসরাইলিরা স্বতস্ফুর্ত ভাবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে সাধারন ইসরাইলিরা স্বতস্ফুর্ত ভাবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ গ্রহন করে। লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলে। হিজবুল্লাহর ব্যাপক হামলার পর এবার ইসরাইল গ্যালিলের একাধিক এলাকা হতে বসতি সরিয়ে নিয়েছে। ইসরাইলের সেনা বাহিনীর পক্ষ হতে বলা হয়েছে তারা ইতিমধ্যে লেবানন মুখি একটি সুন্দর ফ্রন্ট খুলেছে। ইরানের হুশিয়ারী ও হুমকির মুখে ভুমধ্যসাগরে পশ্চিমা জাহাজ যাচ্ছে না। এর পূর্বে লোহিত সাগর ও ভারত সাগরে বানিজ্যিক জাহাজে ড্রোন হামলার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানকে দায়ী করেছিল। ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সাগরে অবস্থান নিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। পশ্চিমা মিডিয়াগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত দশ দেশের সমন্বয় টিমকে অকার্যকর বলে দাবী করে সমালোচনা করছে। পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর ভাষ্য হুতিরা একের পর এক হামলা চালিয়ে গেলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট কিছু করতে পারছে না। তাদের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। এখানেই শেষ নয়, পশ্চিমা মিডিয়াগুলো অত্যন্ত নগ্ন ভাবে ইসরাইলকে সমর্থন করে চলেছে আর তারই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই বলে দোষারোপ করেছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুদ্ধ বিরতি আহবান জানিয়েছেন। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোট যেন ইসরাইলকে আরও অধিক পরিমানে সহায়তা করে এজন্যই দৃশ্যতঃ পশ্চিমা মিডিয়া জুড়ে বাইডেন কে সমালোচনায় মুখর। গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলা কোন ভাবেই প্রতিরোধ করতে পারছে না হামাস যোদ্ধারা। গত চব্বিশ ঘন্টায় আড়াই শতাধিক নিরীহ ফিলিস্তীনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব পাশের পর থেকে গাজায় জাতিসংঘ পরিচালিত ত্রান সরবরাহ করলেও গাজা অধিবাসির ক্ষুধা নিবারনে তা যথেষ্ট নয়। গত কয়েকদিন যাবৎ ফিলিস্তীনিরা ক্ষুধার যন্ত্রনা লাঘবে অপরিপক্ক পশু জবাই দিয়ে সেই মাংস রান্না করে খাচ্ছে। মিশর সীমান্ত ফিলিস্তিীনিদের জন্য কিছুটা উন্মুক্ত হওয়ায় ফিলিস্তীনিরা জরুরী প্রয়োজন সারছে। এদিকে মিশরের প্রেসিডেন্ট জেনারেল সিসি অবিলম্বে গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধের আহবান জানিয়ে বলেছে অবিলম্বে হামলা বন্ধ ও যুদ্ধ বিরতিতে না আসলে আগামী দিন গুলোতে ইসরাইল কে তার জন্য কঠিন ও কঠোর পরিনতি ভোগ করতে হবে। ইরানের পক্ষ থেকে ভুমধ্যসাগর বন্দ করে দেওয়ার হুমকির পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ ধরনের অস্বস্থিতে ভুগছে। কারন ইরান যদি ভূমধ্যসাগরে বন্ধ করে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ পশ্চিমা বিশ্বের জাহাজ চলাচল প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বে। এদিকে গতকাল পুরো গাজা উপত্যকার সর্বত্র ইসরাইলি বাহিনী তাদের সামরিক যানের উপস্থিতি ঘটিয়েছে। দখলদার বাহিনীর মুল লক্ষ্য হামাসের সুড়ঙ্গের সন্ধান এবং বন্দীদের মুক্ত করা কিন্তু বাস্তবতা হলো হামাস যোদ্ধারা তাদের সুরক্ষিত সুড়ঙ্গে অবস্থান করে দখলদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধরত। গতকাল ইসরাইলি বাহিনী গাজার আশ্রয় শিবিরে আবারও হামলা চালিয়েছে এবং উক্ত হামলায় অন্তত শতাধীক আশ্রয় প্রার্থী নির্মম ভাবে নিহত হয়েছে। ইসরাইলির একাধিক দুর্ধর্ষ ব্রিগেড হামাস যোদ্ধাদের প্রতিরোধ হামলায় পিছু হটছে। হুতি বিদ্রোহী এবং হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের দ্বারা হামলাকারী ইসরাইলি বাহিনী এতটুকু বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মুখে পড়বে তা তাদের অজানা ছিল। গাজা যুদ্ধের যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততোই ইসরাইলি বাহিনী মর্মে মর্মে উপলব্ধি করছে হামাসের সক্ষমতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর মধ্যে কেবল মাত্র কাতার ভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশন গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর পরাজয়ের তথ্য প্রকাশ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com