কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি \ খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের বতুল বাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটারের ইট বিছানো সড়ক নির্মাণে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় চার মাস পর তা ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় এলাকাবাসীর দূর্ভোগ বেড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ইট বিছানো সড়কটি নির্মানে ঠিকাদার খরচ কমাতে বালুর পরিবর্তে সড়কের পাশের ধুলাবালু ব্যবহার করেছেন। ইট বিছানোর আগে ছয় ইঞ্চি উঁচু বালু ভরাটের কথা থাকলেও কোথাও তিন ফুট, আবার কোথাও চার ফুট ভরাট করা হয়েছে। ফলে সড়কটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর দূর্ভোগ বেড়েছে। ইউপি সদস্য আবুল হাসান বলেন, সড়কটি গত জুন মাসে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কিন্তু চার মাস যেতে না যেতেই সড়কের গাইড ওয়াল হেলে পড়ে বর্তমানে সব রকম যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, সড়কের নির্মাণকাজ নিম্মমানের হওয়ায় আমরা কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিলাম। একই সঙ্গে সড়কের দুই পাশে মাটি ভরাট ও প্যালাসাইডিং করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু ঠিকাদার তা শোনেন নি। একই ভাবে কাজ শেষ করে চলে গেছেন। তবে কাজের ঠিকাদার কনক সরকার জানান, সড়ক নির্মাণে অনিয়ম হয়নি। ওই সড়কের এক পাশে বড় খাল রয়েছে। কাজ শেষ করার পর ভারী বৃষ্টি হওয়ায় দুই পাশ ধ্বসে পড়েছে।বর্ষার পর শুকনা মৌসুমে ওই সড়ক ফের সংস্কার করা হবে। স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঠিকাদার যখন কাজ করছিল তখন খালে পানি বেশি ছিল তাকে বলা হয়েছিল পানি কমিয়ে পাইলিংটা বেশি করে মাটির ভিতরে দিতে হবে তাহলে রাস্তার কোন ক্ষতি হবে না। ঠিকাদার পানিতে কোন রকম দায়সারা পাইলিং করে। বাঁধা দিলে আমার সাথে ঝগড়া করে। এমনকি কারোর কথা না শুনে কাজ করে চলে যায়। তিনি আরও বলেন, এক কিলোমিটার রাস্তায় এক জায়গায় না এরকম আরও ৫ থেকে ৭ জায়গায় এভাবে ধ্বসে পড়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, রাস্তায় নিম্মমানের সামগ্রী দেয়া হয়েছে বিধায় পাইলিং হেলে পড়ায় রাস্তা ধ্বসে পড়েছে। ঠিকাদরের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার বলে আজ করব কাল করব এই বলে সময় পার করছে। আদৌ করবে কিনা তা জানি না। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার বতুল বাজার এলাকায় এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে(এইচবিবি) দরপত্র আহবান করা হয়। কাজটি পায় মেসার্স সরকার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের মার্চ মাসে কার্যাদেশ পেয়ে জুন মাসে কাজ শেষ করেন ঠিকাদার। দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্ধে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। ইমরুল কায়েস আরও বলে, কাজের চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ হওয়ার সময় থেকে এক বছর সড়কটির কোথাও ক্ষতি গ্রস্থ হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেরামত করতে বাধ্য থাকবে।