এফএনএস বিদেশ : ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদে প্রবেশাধিকার চেয়ে আলোচনার সময় স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ার সম্ভাবনার কথা উত্থাপন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা। গত বৃহস্পতিবার বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যখন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের প্রাথমিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তখন থেকেই স্টারলিংকের ভবিষ্যৎ নিয়ে মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনায় হয়। ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করে। আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে,গত বৃহস্পতিবার মার্কিন বিশেষ ইউক্রেনবিষয়ক দূত কিথ কেলোগ জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের সমঙ বিষয়টি আবারও তোলা হয়। বৈঠকে ইউক্রেনকে জানানো হয়, যদি তারা গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে না আসে, তাহলে স্টারলিংক সেবা শিগগিরই বন্ধ করে দেওয়া হবে। আলোচনাটি গোপন ছিল বলে সূত্রটি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথাগুলো বলেছে। সূত্রটি বলেছে, ‘ইউক্রেন স্টারলিংকের উপর নির্ভরশীল। তারা এটিকে তাদের ‘নর্থ স্টার’ বলে মনে করে। স্টারলিংক হারানো তাদের জন্য বিশাল ধাক্কা হবে।’ জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ যুদ্ধকালীন সহায়তার বিনিময়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ৫০ হাজার কোটি ডলারের খনিজ সম্পদ চেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। জেলেনস্কি বলেছেন, এই বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনও নির্দিষ্ট নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেয়নি। গত শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের দলগুলো একটি চুক্তির বিষয়ে কাজ করছে। ট্রাম্প বলেছেন, শিগগিরই একটি চুক্তি হবে বলে তিনি আশা করছেন। ট্রাম্প চান ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রকে বিরল মৃত্তিকা ধাতু ও অন্য খনিজ পদার্থ সরবরাহ করুক। এসব পদার্থের মধ্যে আছে গ্রাফাইট, ইউরেনিয়াম, টাইটানিয়াম এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান লিথিয়াম। যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সহায়তার প্রতিদান হিসেবে তিনি এসব পদার্থ চেয়েছেন। এদিকে আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র ফেলো মেলিন্ডা হারিং বলেছেন, ড্রোন ব্যবহার এবং গোলাবারুদের ক্ষেত্রে ইউক্রেন এখন রাশিয়ার সঙ্গে ১ অনুপাত ১ সমতায় রয়েছে। ফলে ড্রোন পরিচালনা করতে ইউক্রেনের জন্য স্টারলিংক অপরিহার্য। ইউক্রেনের সামরিক কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ হলো ড্রোন।