এফএনএস স্পোর্টস: বুনো, খ্যাপাটে কিংবা বাঁধনহারা উদযাপন তো কতবারই দেখা গেছে বিরাট কোহলির। কিন্তু এবার ভিন্ন। সেঞ্চুরি ছুঁয়ে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল মুখে। হেলমেট খুললেন আলতো করে, ব্যাট উঁচিয়ে ধরলেন একটু করে। জামার ভেতর থেকে লকেট বের করে এঁকে দিলেন চুম্বন চিহ্ন। ব্যস, এই টুকুই। উল্লাস বা উচ্ছ¡াসের চেয়ে তার শরীরী ভাষায় বেশি চোখে পড়ল স্বস্তি। দীর্ঘ খরার পর বর্ষণে সিক্ত হওয়ার শান্তি যেন! খরা তো বটেই। কোহলির মতো একজন ৩ বছরের বেশি সময় ধরে টেস্ট সেঞ্চুরি পাননি, এটা গোটা ক্রিকেট জগতের জন্যই ছিল বড় এক বিস্ময়। অবশেষে সেই খরার অবসান। কোহলির মুক্তি। ৪১ ইনিংস পর আবার সাদা পোশাকে শতরানের স্বাদ পেলেন ভারতীয় ব্যাটিং গ্রেট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলতি আহমেদাবাদ টেস্টের চতুর্থ দিন দ্বিতীয় সেশনে ন্যাথান লায়নের বলে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি। তার ২৮তম টেস্ট সেঞ্চুরি এটি। ২৭তম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে কলকাতায়। এরপর দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ৪১ ইনিংস পর আবার দেখতে পেলেন তিনি তিন অঙ্কের মুখ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই সেঞ্চুরির পর তিন সংস্করণ মিলিয়েই সেঞ্চুরি করতে যেন ভুলে গিয়েছিলেন কোহলি। তার সেই দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হয় গত সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি উপহার দেন তিনি, এই সংস্করণের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যা ছিল তার প্রথম সেঞ্চুরি। পরে ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি করে খরা কাটে ওয়ানডেতে। কিন্তু টেস্টে সুসময়ের দেখা পাচ্ছিলেন না কোনোভাবেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলতি সিরিজের প্রথম তিন টেস্টে তো ফিফটিই করতে পারেননি। কলকাতায় সেই সেঞ্চুরির পর এই আহমেদাবাদ টেস্টের আগ পর্যন্ত ২৩ টেস্টে ৪১ ইনিংস খেলে তার রান ছিল ¯্রফে ১ হাজার ২৮, ব্যাটিং গড় ২৫.৭০। ফিফটি ছুতে পেরেছিলেন ¯্রফে ৬বার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই সেঞ্চুরির টেস্ট শেষে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৫৪.৯৭। এবার এই টেস্টের আগে তা কমে হয়েছে ৪৮.১২। অবশেষে নিজেকে ফিরে পাওয়ার সেই অভিযানে বড় পদক্ষেপ তিনি নিতে পারলেন। নিজের সঙ্গে লড়াই কম করতে হয়নি তাকে। অনেক ধৈর্য আর নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা দিয়ে এই সেঞ্চুরিটি করলেন তিনি ২৪১ বল খেলে। তাতে বাউন্ডারি ছিল ¯্রফে ৫টি। নিশ্চিতভাবেই তার সেরা সেঞ্চুরি নয়। খুব সাবলিল বা স্ট্রোকের ছটায় উজ্জ্বল ইনিংস নয়। তবে নিশ্চিতভাবেই তার ক্যারিয়ারের স্মরণীয় কিংবা স্বস্তিদায়ক এক সেঞ্চুরি।