আলমগীর হোসেন খুলনা থেকে ॥ চিংড়ি চাষে আগ্রহ হারিয়ে চাষিরা ভিন্ন পেশায় চলে যান বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়। সূত্র জানায়, ভাইরাস, মড়ক, ন্যায্য মুল্য না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে চিংড়ি চাষিরা যখন হতাশায় দিন পার করছে ঠিক তখনই মৎস্য অধিদপ্তর চাষিদের দেখিয়েছেন নতুন সম্ভাবনা ও আশার আলো। মৎস্য অধিদপ্তর ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষের জন্য মৎস চাষিদের সংগঠিত করেন চিংড়ি চাষিদের (সিআইজি) সমবায় সমিতির মাধ্যমে। চিংড়ি চাষিদের নিয়ে ক্লাস্টার গঠন করা হয়। প্রতি ক্লাস্টারে ২৫ জন করে প্রথমে ১৩ টি ক্লাস্টার গঠন করলেও বর্তমানে এর সংখ্যা ১০ এ দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৫ টি ক্লাস্টার সরকারি প্রণোদন পেয়েছে। বাকী ৫ টাও আগামীতে পাবে বলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার দিঘলিয়া মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান। ক্লাস্টার পদ্ধতির প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাদের মৎস্য খামারে শুধু চিংড়ি মাছই নয় সাথে কার্ফ জাতীয়সহ আরো দেশীয় মাছ চাষ করা হয় । বর্তমানে ব্রহ্মগাতী ও পানিগাতীসহ যোগীপোল অঞ্চলের ২ ৫০ জন চাষি (তন্মধ্যে ৫৮ জন নারী সদস্য ) প্রাথমিক অবস্থায় ১৫৩২ টি ঘের ও জলাশয়ে চিংড়ি চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে দিঘলিয়ায় ৯৭২ জনসহ ৪৮৪২ জন চাষি মাছ চাষের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। দিঘলিয়ার চিংড়ি চাষিরা এখন পর্যন্ত খাবার উৎপাদনে যেতে পারেনি। তারা বাজার থেকে খাবার কিনে ঘেরে ব্যবহার করছে। তবে খুলনার অন্যান্য উপজেলায় ক্লাস্টার চাষিরা খাবার নিজেরাই উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। পূর্বে যেখানে শতক প্রতি মাছের গড় উৎপাদন ছিল ২/১ কেজি। বর্তমানে ক্লাস্টার পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে শতক প্রতি গড় মাছের উৎপাদন দাঁড়িয়েছে গলদা, বাগদা ও কার্প জাতীয় মাছ ৪ কেজি যা ক্ষেত্র বিশেষে পূর্বের উৎপাদনের দ্বিগুনেরও বেশী। শুধু উৎপাদন বৃদ্ধিই নয় তাদের আয়ও বেড়েছে। ক্লাস্টার পদ্ধতিতে মাছ চাষাবাদ করার ফলে চাষিরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে, পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দিঘলিয়া অঞ্চলে দারিদ্র বিমোচনও ঘটছে। ফলে চিংড়ি চাষীদের মধ্যে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হচ্ছে। ব্রহ্মাগাতী, পানিগাতী ও যোগীপোল অঞ্চলের চাষিদের দেখা দেখি উপজেলার আরো প্রায় আট শতাধিক চাষি চিংড়ি চাষ শুরু করেছেন। ৫৮ জন নারী চিংড়ি চাষি ক্লাস্টার পদ্ধতির চিংড়ি চাষের প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন।