সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শুল্কমুক্ত সুবিধায় হাজার হাজার টন চাল আমদানিতেও বাজারে প্রভাব পড়েনি বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ শীতজনিত রোগীর চাপ রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি হাসপাতালে বাড়ছে সাতক্ষীরা পৌর—মেয়রের বরখাস্তের আদেশ অবৈধ: হাইকোর্ট স্কুল থেকে ফেরার পথে ট্রেনে কাটা পড়ে শিশুর মৃত্যু সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কিশোরগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বিএনপি নেতা নিহত মোবাইল—ইন্টারনেটে কর প্রত্যাহার না হলে এনবিআর ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি ভারত থেকে এলো ২৭ হাজার মেট্রিক টন চাল টিউলিপের উচিত ক্ষমা চাওয়া: ইউনূস বিজিবি—জনগণ ‘শক্ত অবস্থান’ নেওয়ায় ভারত পিছু হটেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

খুলনা নদী বন্দরের আড়াই কোটি টাকা জলে ; ২ বছরের মাথায় আবার ভাঙন শুরু।

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৩

সিরাজুল ইসলাম খুলনা থেকে ॥ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভাঙন মেরামতে বরাদ্দ দেওয়া আড়াই কোটি টাকা দিয়ে মেরামতের কাজ শেষ করে ২০২১ সালে মাত্র ২ বছর পার হতে আবার শুরু হয়েছে নতুন ভাঙন।
খুলনা নদী বন্দরের ৫ নম্বর ঘাট এলাকার প্রতিরক্ষা প্রাচীরে প্রথম ভাঙন দেখা দেয় ২০১৮ সালে। সময়মতো মেরামত না করায় ২০ ফুটের ভাঙন প্রায় ১০০ ফুট এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এক বছর যাওয়ার আগেই গতবছর একই স্থানে ফের ভাঙন দেখা দেয়। এবারও সময়মতো মেরামত না করায় ভাঙন ৩০০ ফুট এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। যতো দিন যাচ্ছে ভাঙন বাড়ছে।
বন্দরের বড় এলাকায় ভাঙন শুরু হওয়ায় পণ্য ওঠানামার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ভাঙন মেরামতের জন্য গত দুই বছর অসংখ্যবার চিঠি দিয়েছে নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ঘাট ইজারাদার। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধ ও মেরামতের কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, ভাঙন ছোট থাকলে মেরামতের জন্য অল্প টাকা বরাদ্দ হয়। সামান্য ওই টাকা ঠিকাদার, প্রকৌশল, কর্মকর্তারা কেউ লাভবান হন না। ভাঙন বড় হলে বরাদ্দও বেশি আসে। এতে সব পক্ষই লাভবান হন। মূলত এ কারণেই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রকৌশল বিভাগ জানায়, খুলনা নদী বন্দর এলাকার ঘাট ভিন্ন প্রযুক্তিতে নির্মিত। ১৯৬৩ সালে লোহার পাত দিয়ে পাইলিং, পরে কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ওই সময়ের নকশা খুঁজে পাওয়া যায় না। যার কারণে ভাঙন দেখা দিলে মেরামতে সময় লাগে। সম্প্রতি ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, লোহার পাত ও কংক্রিটের প্রাচীর ধসে গিয়ে ঘাটের প্রায় ৩০০ ফুট এলাকা দেবে গেছে। দুই বেলা জোয়ারের পানিতে ওই অংশ ডুবে থাকায় প্রতিদিনই আশপাশের জায়গা একটু একটু করে দেবে যাচ্ছে। ভাঙা অংশের চারপাশে পণ্য লোড আনলোড বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিন ঘাটে ২৫-৩০টি কার্গোতে সার ও সিমেন্টসহ বিভিন্ন মালামাল মালামাল লোড-আনলোড করা হয়। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ঘাটে প্রথম বার ভাঙন দেখা দেয়। এরপর থেকে ঘাটের ওই অংশে মালামাল ওঠা-নামা বন্ধ রয়েছে। এতে শ্রমিকদের আয় কমে যাচ্ছে। মেরামত না করায় ভাঙন দিন দিন বাড়ছে। ভাঙন কবলিত এলাকা মেরামতের জন্য সর্বশেষ গত ৬ আগস্ট বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশল বিভাগে চিঠি দিয়েছেন খুলনা নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মাসুদ পারভেজ। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০১৮ সালে সিট পাইংলি ভেঙ্গে যাওয়ার পর দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ দিয়ে ঘাট মেরামত করা হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালে ঘাটের প্রায় ৩০০ ফুট সিট পাইলিং ধসে নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। এতে লোড আনলোডের ইয়ার্ড ভেঙ্গে নদীতে চলে যাচ্ছে। অসংখ্য জায়গায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে নির্বিঘ্নে মালামাল লোড-আনলোড করা সম্ভব হচ্ছে না। সিট পাইলিং ভেঙ্গে যাওয়ায় বন্দর ভবনও হুমকির সম্মুখীন।’ মাসুদ পারভেজ বলেন, ভাঙন পরিস্থিতি গুরুতর। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আমি এবং আগের কর্মকর্তা প্রকৌশল বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। এখন কেন মেরামত হচ্ছে না-এটা তারাই ভালো বলতে পারবেন। ঘাটের ইজারাদার চৌধুরী মিনহাজ-উজ জামান সজল বলেন, ভাঙন মেরামতের পর কয়েক দফা বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের জানানো হয়। তারাও ক্ষতিগ্রস্ত স্থান ঘুরে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তিনি বলেন, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঘাটটি ১৭ লাখ ৫১ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। লোড আনলোড না হওয়ায় আয় হচ্ছে না। ঘাট মেরামত না হওয়ায় বিপুল অংকের টাকা ক্ষতির সম্মুখিন হবো। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র খুলনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, আগে কি কি হয়েছে আমি জানি না। সম্প্রতি আমি দায়িত্বগ্রহণের পর ভাঙনের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাই। গত ৬ অক্টোবর সিনিয়র প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরি করেছি। সেটি অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন হলে দ্রুত দরপত্র আহ্বান করে ভাঙন মেরামত কাজ শুরু হবে। খুলনা নদী বন্দর ৫ নং ঘাট এলাকায় আবার ভাঙন শুরু।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com