রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শান্তি আলোচনার পর ইউক্রেনে বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া সিরিয়ায় পুনরায় কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মন্তব্য, ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গ্রেফতার সৌদি আরবে অবৈধদের ধরতে অভিযান, গ্রেফতার ১৫ হাজার হায়দরাবাদের চারমিনারের কাছে ভবনে আগুন, শিশুসহ নিহত ১৭ যে কারণে ব্যর্থ হলো ভারতের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ভারতের জন্য আকাশসীমা আরও এক মাস বন্ধ রাখবে পাকিস্তান: রিপোর্ট ইরানে শিয়া মাজারে হামলার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ—মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ টর্নেডোয় ২৭ জনের প্রাণহানি যে কারণে পেনাল্টি নেননি হালান্ড

খুলনা বিভাগের ইতিহাস ঐতিহ্য (৪)

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৩

সবচেয়ে আধুনিক মসজিদ বায়তুন নুর

খুলনা প্রতিনিধি ॥ গরীর সবচেয়ে আধুনিক মসজিদ হচ্ছে বায়তুন নূর মসজিদ কমপ্লেক্স। মসজিদটি ১৯৮০ সালের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. নূরুল ইসলামকে সভাপতি করে এই মসজিদ নির্মাণের প্রথম কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৯২ সালের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.এস. এম মোস্তাফিজুর রহমান মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ মসজিদে এক সাথে ৬ হাজার মুসল্লি নামায আদায় করতে পারেন। মহিলাদের জন্য আলাদা নামাযের স্থান রয়েছে। এছাড়া মসজিদটির তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আছে মাদরাসা ও ইসলামী পাঠাগার। মসজিদটির মিনার ১৩৮ফুট উচ্চতা। ঈদ জামাতের ইতিহাস : পবিত্র রমজান শেষে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর মদিনায় হিযরতের পর থেকে ঈদ উৎসব পালিত শুরু হয়। আর আজকের বাংলাদেশের প্রথম কোথায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল তার সঠিক কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না। ইদ্রিসুর রহমান ‘ঈদুল ফিতর’ বাংলার প্রাচীন উৎসবগুলোর অন্যতম। কিন্তু প্রাচীনকালে ঈদের দিনটি কিভাবে পালন করতো সে সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। ১৭শ’ শতকের দিকে বাংলার নবাবরা এবং বিত্তবানরা ঈদ উৎসব জাঁকজমকভাবে পালন করতেন। মোগল আমলে মোগলরা ঈদ উৎসব পালন করতেন। এসময় গ্রামের মুসলমানরা ছিলো দরিদ্র। ইসলাম সম্পর্কে তাদের বিশুদ্ধ জ্ঞানও ছিলো না। ফরায়জী আন্দোলনের পর থেকে ইসলাম সম্পর্কে সাধারণ মুসলমানরা জানতে শেখে। ইংরেজ আমলের প্রধান উৎসব ছিলো ক্রিসমাস। ওই সময় বিত্ত-বিদ্যার দিক দিয়ে তুলনামূলকভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা হিসেবে অনেক এগিয়ে ছিলো। ফলে দুর্গাপূজাও সম্প্রদায়গত আধিপত্য এবং ঐতিহ্যের কারণে হয়ে উঠলো সবচেয়ে জাঁকালো এবং গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এরপর মুসলমান সম্প্রদায় রাজনীতিতে এলে ঈদ উৎসব নতুন মর্যাদা পায়। ১৯৪৭ সালে পাক-ভারত বিভক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশে দু’টি ঈদই জাতীয় ধর্মোৎসব রূপান্তরিত হয় এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। আর খুলনা মহানগরীর এলাকার মধ্যে প্রথম কোথায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় তার কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। তবে বৃটিশ আমলের আগে থেকে খোলা জায়গায় ঈদের জামাত হতো বলে জানা যায়। হযরত খানজাহান আলী (র.) খুলনা অঞ্চলের ইসলাম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তখন থেকেই খুলনা মহানগরী এলাকার মধ্যে মুসলমানদের বসবাস শুরু হয়েছিলো। মহানগরীর দৌলতপুর ও খালিশপুর একটি প্রাচীন স্থান। এ দু’টি নামের সাথে দু’জন মুসলিমের নাম জড়িত। দৌলত খাঁ থেকে নাকি দৌলতপুর নাম হয়েছিলো। আর হযরত উলুগ খান-ই-জাহানের একজন বিশেষ সহচর ছিলেন খালাশ খান। তিনি নাকি আজকের খালিশপুর এলাকায় বসতি স্থাপন করে অনেক লোককে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার নামানুসারে নাকি খালাশ খান থেকে খালিশপুর নাম হয়েছে। তবে সে সময়ে মুসলমানরা এখানে কিভাবে ঈদ উৎসব পালন করতেন তার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। অপরদিকে মহানগরী এলাকার মধ্যে কখন প্রথম মুসলমানদের বসবাস শুরু হয় তার ইতিহাসও ধূসর। খুলনা মহানগরীর প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানে। এটি মহানগরীর সবচেয়ে বড় জামাত। লক্ষাধিক মুসল্লি এ জামাতে ঈদের নামায আদায় করেন। খুলনা সার্কিট হাউস ময়দানের ঈদের জামাতে মন্ত্রী, মেয়র, এমপি, খুলনা মহানগরীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মুসলমান শরীক হন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা মহানগরী এলাকায় বৃটিশ আমলে যেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতো তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : খুলনা টাউন জামে মসজিদ (১৮৫৪)। ১৮৬৫ সাথে টাউন জামে মসজিদে খুলনায় প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া টুটপাড়া বড় পুরানো জামে মসজিদে(১৮৮০), শেখপাড়া আস্তানা মসজিদ, হাজি বাড়ি মসজিদে, বানিয়া খামার পশ্চিম পাড়া মসজিদে ও দৌলতপুরের সাহিত্যিক ডা. আব্দুল কাসেমের বাড়ির কাছের ঈদগাহসহ আরো কয়েকটি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হতো। শিক্ষা : শিক্ষার প্রসারেও খুলনা জেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এ জেলায় ৬২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৬১টি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৪টি কমিউনিটি বিদ্যালয়, ৯টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬৪টি বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬টি সরকারি কলেজ, ১০৪টি দাখিল মাদরাসা, ১৬টি আলিম মাদরাসা, ১২টি ফাজিল মাদরাসা, ৩টি কামিল মাদরাসা, একটি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, একটি সরকারি কৃষি কলেজ, একটি মেডিকেল কলেজ ও ২টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এছাড়া বেসরকারি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট রয়েছে। খুলনা শহরে প্রথম প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৮৮০ সালে ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ‘খুলনা জিলা স্কুল’ ১৮৮৫ সালে স্থাপিত হয়। শুরুতে প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নাম ছিল কালাচাঁদের পাঠশালা (টুটপাড়া)। এ শহরে ১৯০২ সালে প্রথম কলেজ স্থাপিত হয়। আজকের সরকারি বিএল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটির নাম ছিল ‘হিন্দু একাডেমী’। নগরীর অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আযমখান সরকারি কমার্স কলেজ। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর লেঃ জেনারেল আযম খানের নামে কলেজটি স্থাপিত হয়। দেশের বাণিজ্য শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলেছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com