বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ন

খুলনা শিশু হাসপাতালে ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে শত শত রুগী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩

সিরাজুল ইসলাম খুলনা থেকে \ খুলনায় তাপমাত্রা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। গত ৩৮ বছরের ইতিহাসে এবারই খুলনায় তাপমাত্রা ৪১.৩ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠেছে। এরপর কখনো ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আবার কখনো একটু নিচে অবস্থান করছে। প্রচণ্ড তাবদাহে খুলনায় বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ। এছাড়া প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে শত শত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরেও ফের আক্রান্ত হচ্ছে অনেকে। খুলনা শিশু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই হাসপাতালে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু। হাসপাতালের আন্তঃবিভাগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য ৫৭টি শয্যার একটিও খালি নেই। একই সঙ্গে বহির্বিভাগে প্রতিদিন সেবা নিচ্ছে গড়ে ৫০০ জন। গত এক মাসে ভর্তি হয়েছে চার শতাধিক রোগী। যার বেশির ভাগই গত ১৫ দিনের গরমের মধ্যকার সময়ে ভর্তি হয়েছে। একই অবস্থা খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে। খুলনার শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক শিশুর মা সাবিনা বেগম বলেন, ‘মেয়ে খুব দুর্বল হয়ে গেছে। বারবার পাতলা পায়খানা হচ্ছে এবং শরীর ঘামছে। বাড়িতে থেকে বেশি দুর্বল হয়ে পড়ছে, তাই হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।’ পাশের ওয়ার্ডের বাঁধন মণ্ডলের (৩) বাবা সুকুমার মণ্ডল বলেন, জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে ছেলের। সঙ্গে বমি ও পাতলা পায়খানাও আছে। চিকিৎসক বলেছেন, ঠিক হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। খুলনা শিশু হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, শিশু হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দিজ্বরে আক্রান্ত ও পানিশূন্যতা রোগী বেশি আসছে। চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন আউটডোরে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশুকে নিয়ে আসেন অভিভাবকরা। গত ২৫ দিন ধরে রোগীর চাপের এমন পরিস্থিতি চলছে। সেই ক্ষেত্রে শিশুদের খাওয়ানোর ব্যাপারে অভিভাবকদের আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে। খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন,তাবদাহে যেমন বায়ুদূষণ হচ্ছে, তেমনি পানিদূষণও হচ্ছে। ফলে ডায়েরিয়া রোগী বেশি পাওয়া যাচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে সর্বস্তরের মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের পাশাপাশি বৃদ্ধ ও অন্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে নানা রোগে। এই সময়ে খাল-বিল-পুকুরের পানি শুকিয়ে যায়। একই সঙ্গে এই অঞ্চলের নদীগুলোর পানিতে অতিরিক্ত মাত্রায় লবণাক্ততা বাড়ে। তাই শিশুদের পানি ফুটিয়ে পান করাতে হবে। অন্যদিকে উপজেলা হাসপাতালগুলোতেও চিকিৎসকেরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। এদিকে খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ জানান, গতকাল শুক্রবার খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের বেলায় তাপমাত্রা বাড়লেও সন্ধ্যার পর থেকে প্রায় গড়ে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে আসে। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। তবে স্বাভাবিক হতে আরও এক-দুই দিন সমায় লাগবে।।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com