এফএনএস আন্তজার্তিক ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে আরেক ধাপ এগোচ্ছে ইসরায়েল। গত রোববার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজায় অভিযান আরও জোরদার ও বিস্তৃত করার পরিকল্পনা সর্বসম্মতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এই নতুন পরিকল্পনার আওতায় ইসরায়েল এবার গাজার কিছু অংশ স্থায়ীভাবে দখলে নেওয়ার এবং সেখানে নিজের উপস্থিতি ধরে রাখার কৌশল বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।
ইসরায়েল জানায়, এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে হামাসকে পরাস্ত করা এবং তাদের হাতে বন্দি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্ত করা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল আজমির রোববার জানান, গাজায় সামরিক তৎপরতা জোরদার করতে ইতোমধ্যেই হাজার হাজার রিজার্ভ সেনাকে তলব করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা প্রস্তুত; আমাদের লক্ষ্য সুস্পষ্টÑহামাসকে পরাজিত করে সকল জিম্মিকে মুক্ত করা।”
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইসরায়েল গাজার আরও কিছু এলাকা ধাপে ধাপে দখল করবে এবং মিশর ও ইসরায়েল সীমান্ত বরাবর ‘বাফার জোন’ সম্প্রসারিত করবে। হারেৎজ পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার ইসরায়েলের কৌশল হবে ভূখণ্ড দখল ও স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, যা আগের ‘আক্রমণ করে ফিরে যাওয়া’ কৌশল থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, “এবার অভিযান হবে দীর্ঘমেয়াদি; আমরা শুধু হামলা করেই থামবো না, এবার আমরা থেকে যাবো।”
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও গাজায় পূর্ণমাত্রার অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। তাদের অভিযোগ, হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করেছে। সেইসঙ্গে ইসরায়েল দাবি করেছে, গাজায় আসা মানবিক সহায়তা হামাস ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের সশস্ত্র শক্তি বাড়াতে ব্যবহার করছে। এজন্য মার্চ মাস থেকেই গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বিভিন্ন ধরনের বাধা আরোপ করে ইসরায়েল, যা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়ছে।
তবে একই বৈঠকে ইসরায়েল মানবিক সহায়তা বিতরণের জন্য একটি নতুন পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। যদিও কবে এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
গাজার প্রায় এক—তৃতীয়াংশ এখন ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই বাস্তবতায় গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে শঙ্কা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশে^র বহু দেশ যুদ্ধ থামিয়ে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানালেও ইসরায়েল বরং সামরিক অবস্থান আরও কঠোর করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী এক অস্থিরতা এবং মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়বে।