শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:২৮ অপরাহ্ন

গাজার সর্বত্র ইসরাইলি বাহিনীর হামলা: খান ইউনুসে বর্বর বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধের হামাস

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস ঃ প্রাণ বাঁচাতে গাজা ছাড়ছে হাজার হাজার ফিলিস্তীনি ঃ হামাসের বন্দীদের যে কোন মূল্যে উদ্ধারে বদ্ধপরিকর ইসরাইল ঃ স্কুলে বোমা হামলায় পঞ্চাশ শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঃ গাজা জ্বলছে এবং মানিবক বিপর্যয়ে ফিলিস্তীনিরা
দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ গাজার সর্বত্র হামলা শুরু করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এক দিকে বিমান হামলা অন্যদিকে স্থল হামলা, নির্বিচারে নির্মম ভাবে হত্যার শিকার হচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তীনিরা। বর্বর ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ব্যাপক ভাবে হত্যাকান্ডের শিকার হচ্ছে নারী ও শিশুরা। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ভয়াবহ হামলা ও হত্যাকান্ডের শিকার কেবল মাত্র ফিলিস্তীনিরা বরন করলো। নির্দয় ইসরাইলের হামলাকে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করে চলেছে ফিলিস্তিন মুক্তি সংগ্রামের আলোকিত ও দেশ প্রেমিক সংগঠন হামাস। গাজার দক্ষিন এলাকায় গত তিনদিন যাবৎ ইসরাইরি বাহিনীূর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অবতীর্ণ হামাস যোদ্ধারা। হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীকে প্রতিরোধ করছে তারা দক্ষিন গাজায় ইতিমধ্যে ইসরাইলের দুই সেনাকে তারা হত্যা করেছে। তিনটি অত্যাদুনিক ট্রাঙ্ক এবং কয়েকটি সামরিক খান ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। যে ট্যাংক ইসরাইলের গৌরব ও সম্মানের ক্ষেত্র ছিল সেই ট্যাংক হামাস যোদ্ধারা ধ্বংস করেছে। সোমবার হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের রাজধানী তেল আবিব সংলগ্ন একটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা পরিচালনা করলে ষাট ইসরাইলি সেনার নিহত হওয়ার যে খবর দিয়েছে হামাস তা তেল আবিব স্বীকার না করলেও তারা তাদের সামরিক ঘাঁটিতে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ইসরাইলের হামলায় এ যাবৎ প্রায় সতের হাজার ফিলিস্তীনির নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অন্য দিকে হামাসের হামলায় চার শতাধিক ইসরাইল সেনার নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানাগেছে। গত দিন দিন যাবৎ ইতিহাসের যে ভয়াবহ গণহত্যা পরিচালনা করছে ইসরাইল গাজায় তা থেকে বাঁচতে দলে দলে ফিলিস্তীনিরা গাজা ত্যাগ করছে। গাজার এমন কোন স্থান নেই, এমন কোন এলাকা নেই যে এলাকায় ইসরাইলি সেনারা বিমান হামলা ও স্থল অভিযান পরিচালনা করছে না। হামাসের কাসেম ব্রিডেগের পক্ষ হতে বলা হয়েছে ইসরাইলি সেনারা দৃশ্যতঃ নিজেদের ফাঁদে পড়তে শুরু করেছে। গাজার মানবিক বিপর্যয় যে কতটুকু মর্মান্তিক এবং বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মাঝে পৌছেছে তা জাতিসংঘের বয়ানে স্পষ্ট। জাতিসংঘের পক্ষ হতে বলা হয়েছে ইসরাইলের হামলা কেবল দখলদারিত্বকে প্রধান্য দেওয়ার বহিঃপ্রকাশ। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইয়েফ এরদোগান বলেছেন ইসরাইল চোর এবং ডাকাত এই চোর ডাকাতদের নির্মূল করতেহ সব কিছু করা হবে। তিনি এর পূর্বে ইসরাইলকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে অবহিত করেছিলেন। ইসরাইলের অভ্যন্তরে ইহুদীদের মাঝে একদিকে ক্ষোভ এবং অন্যদিকে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদিনই ইসরাইলের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করছে। সাধারণ ইহুদীদের মাঝে সব সময় হামাস আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারন সাধারন ইহুদীদের মাঝে যে কোন সময় হামাস হামলা পরিচালনা করতে পারেন। এদিকে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর গতকাল আবারও গাজার একটি স্কুলে বোমা হামলা পরিচালনা করে অন্তত পঞ্চাশ জন শিক্ষার্থীকে হত্যা করেছে। ছয় দিনের যুদ্ধ বিরতির পর বন্ধ থাকা গাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে শুরু করে এরই মধ্যে স্কুলে বোমা হামলার ঘটনা ঘটালো বর্বর ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল হাসপাতালেও বোমা হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে দখলদাররা। হামাসের তুমুল প্রতিরোধের মুখে ইসরাইল তাদের ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। হামাসের সাথে যুদ্ধের পাশাপাশি ইসরাইলি সেনারা হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সাথে লড়াই করছে। হুযি বিদ্রোহীরা ও ইসরাইলের অভ্যন্তরে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা পরিচালনা করছে। লোহিত সাগরে মার্কিন এবং ইসরাইলের পক্ষ হতে দাবী করা হয়েছে যে তারা গাজার অন্তত সত্তরটি সুড়ঙ্গে ধ্বংস করেছে। কিন্তু হামাসের পক্ষ হতে ইসরাইলের উক্তিকে সত্য নয় বলে দাবী করা হয়েছে। ইসরাইল হামাসের দুর্ভেদ্য ঘাটি গুলো ধ্বংস করতে এবার সাগরের পানির সহযোগিতা নিতে চাইছে ইতিমধ্যে ইসরাইল এর সেনারা গাজার একাধিক স্থানে অগনিত পাম্প বসিয়েছে এ সকল পাম্পের মাধ্যমে সাগর হতে পানি উত্তোলন পরবর্তি হামাসের সুড়ঙ্গ ধ্বংস করবে বলে জানিয়েছে দখলদার ইসরাইল বিদ্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত পঞ্চাশ শিক্ষার্থী লাশ সংগ্রহে ও বাঁধা দিচ্ছে দখলদার সেনারা। গতকাল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকার একাধিক দেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে ইসরাইলের বর্বরতা যেন বিশ্ববাসিকে জানাতে না পারে সে কারনে ইতিমধ্যে ষাট জনের অধিক সাংবাদিককে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনীর সদস্যরা। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোতে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে হামাস যোদ্ধারা ইসরাইলের পরমানু কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে তবে উক্ত হামলায় খুব বেশী ক্ষয়ক্ষতি হইনি। সর্বশেষ খবরে জানাগেছে বর্বর বাহিনী গাজার খান ইউনুস এলাকা তাদের ট্যাংক ও সাজোয়া যান নিয়ে ঘেরাও করে রেখেছে। অন্যদিকে হামাস যোদ্ধারা খান ইউনুসের উত্তর ও পশ্চিম প্রান্তে ইসরাইল সেনাদের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ করছ। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কুদম ব্রিগেড টেলিগ্রাফ বার্তায় জানিয়েছে তাদের যোদ্ধারা খান ইউনুসে সংগ্রামের পাশাপাশি ইসরাইলের তেল আবিবেও হামলা চালিয়েছে। এদিকে হামাসের হাতে আটক ইসরাইলের সামরিক ও বেসামরিক সদস্যদের পরিবারের পক্ষ হতে নেতানিয়াহু সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছে এই বলে যে ইসরাইলি মন্ত্রীসভা যদি অবিলম্বে বন্দীদের মুক্তির ব্যবস্থা না করে তাহলে আগামী দিনে যা যা করার তাই তাই করবে। গাজায় কেবল চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে তা নয় ত্রানের অভাবে ফিলিস্তীনি অত্যন্ত মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। কখন কে নিহত হবে তা জানে না ফিলিস্তীনিরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com