শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১১ পূর্বাহ্ন

গাজায় গন কবরে সমাহিত হচ্ছে নিহত ফিলিস্তিনিরা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৪

দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ফ্রান্স বৈঠক কি ব্যর্থ হতে চলেছে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধান, কাতারের প্রধানমন্ত্রী ইসরাইলের মোসাদ গোয়েন্দা প্রদান এবং মিশরের গোয়েন্দা প্রধানরা রবিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈঠক করে উক্ত বৈঠকে গাজায় যুদ্ধ বিরতি, বন্দী ইসরাইলিদের মুক্তি এবং গাজায় মানবিক সহায়তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহনের জন্য বসেছিল, কিন্তু বৈঠক সফল হইনি অথবা আরও বেশকিছু আলোচনা বাকি আছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে বৈঠক এর উদ্যোক্তা জানিয়েছে। বিশ্বের শত শত কোটি মানুষের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দু ছিল ফ্রান্স যেহেতু উক্ত বৈঠকেই গাজার যুদ্ধ বিরতির বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল। উল্লেখ্য হামাসের দ্বিতীয় প্রধান নেতা মৌক্তাবির সহ সাত শীর্ষ হামাস কমান্ডারকে লেবাননের রাজধানী বৈরনতের একটি আবাসিক ভবনে বোমা হামলা পরিচালনা করে হত্যা করলে হামাসের পক্ষ হতে ঘোষনা দেওয়া হয় যে কোন অবস্থাতেই তারা ইসরাইলের সাথে কোন ধরনের আলোচনায় বসবে না, পক্ষান্তরে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের পক্ষ হতে ব্যাপক ভিত্তিক দেন দরবারের পর হামাস শর্ত যুক্ত আলোচনা ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা হতে ইসরাইলের সেনা অভ্যন্তরের ব্যবস্থা করতে হবে। রবিবারের বৈঠকে ফলাফল, সম্পূর্ণ না হলেও অনেকগুলো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পরবর্তিতে আবারও বৈঠকের মাধ্যমে যুদ্ধ বিরতিতে পৌছানো সম্ভব বলে সংশ্লিস্টরা জানিয়েছে। আল জাজিরা টেলিভশন জানায় ইসরাইলের প্রস্তাব ইসরাইলি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে দুই মাসের জন্য যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে তাদের প্রত্যাশা স্থায়ী যুদ্ধ বিরতি। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে আলোচনার অগ্রগতি হলে অনেক কিছু ফাঁক আছে। চলতি সপ্তাহে আবারও বৈঠক হবে, আপাতত যুদ্ধ বিরতির কোন সিদ্ধান্ত হইনি, গতকালও গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরাইলি বাহিনী ব্যাপক ভিত্তিক বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। বিশেষ করে গাজার দক্ষিন এলাকার আবাসিক ভবন গুলোতে নির্বিচারে বিমান হামলায় শতাধিক নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। গাজার দক্ষিনে একমাত্র সচল চিকিৎসা কেন্দ্র আল আমাল হাসপাতাল অবরোধ করে রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা জানিয়েছে হাসপাতালটির চারিদিক ইসরাইলের ট্রাংঙ্ক অবস্থান নিয়েছে, অন্যদিকে প্রচন্ড চলড়াইয়ের ময়দান খ্যাত খান ইউনিসেও চলছে তুমুল লড়াই। দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যররা। খান ইউনিসের নিয়ন্ত্রন নিতে প্রাণপন যুদ্ধ করলেও হামাস যোদ্ধাদের তুমুল প্রতিরোধের মুখে ইসরাইলি সেনারা বারবার পিছু হটছে। এখানেই শেষ কথা নয় দখলদার বাহিনীর জন্য খান ইউনিস দৃশ্যতঃ মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এই অঞ্চলে ইহুদী সেনারা তাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা হারিয়েছে। হামাস যোদ্ধাদের সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড জানায় প্যারিস বৈঠকের ইসরাইলি প্রতিনিধি যখন উপস্থিত হয়ে যুদ্ধ বিরতির বিষয়ে আলোচনা করছিল সেই সময়ে গাজার নিরীহ জন সমষ্টির উপর বিশন হামলা পরিচালনা করছিল। হামাসের পক্ষ হতে আরও বলা হয়েছে যে ইসরাইল কেবল অবৈধ রাষ্ট্র না তাদের সামগ্রীক কর্মকান্ড অবৈধ, অন্যায় এবং মানবতা বিরোধী। এদিকে লোহিত সাগরে আবারও হুতি যোদ্ধারা মার্কিন জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এবার হুতি যোদ্ধাদের হামলার ধরন ও প্রকৃতি ছিল ভয়ানক। তারা মার্কিন বানিজ্যিক জাহাজে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস জানিয়েছে হুতিরা আমাদের জাহাজ ড্রোন হামলা পরিচালনা করলেও সি ওয়াইপার মিসাইলের সাহায্যে ওই ড্রোনটি ধ্বংস করা হয়। হুতিদের হামলায় ক্ষয়ক্ষতি না হলেও বাস্তবতা হলো হুতিদের শক্তিখর্ব করনে এবং তাদের হামলা রোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক জোট ভূক্ত দশ দেশ হুতিদের নির্মূল করতে পারেনি। এদিকে জর্দানের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। উক্ত ড্রোন হামলায় তিন মার্কিন সেনার মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উক্ত ড্রোন হামলার সাথে ইরানের জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযোগ করেছে পক্ষান্তরে ইরানের পক্ষ হতে উক্ত হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন হামলাকারিদের চিহিৃত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আবারও ইসরাইলের উগ্রপন্থীরা গাজায় প্রবেশ মুখে ত্রানবাহী যানবাহন আটকিয়ে দিয়েছে। উগ্রপন্থী ইহুদীরা চাইছে গাজাবাসি অনাহারে এবং বোমা হামলায় মৃত্যুরবন করুক। গাজা যুদ্ধের শেষ পরিনতি আঞ্চলিক যুদ্ধের ব্যাপকতা সেই দিকেই ধাবিত হচ্ছে। এদিকে খান ইউনিসের সড়কে সড়কে লাশ গত কয়েকদিন যাবৎ আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সদস্যরা লাশ সংগ্রহ করে গনকবরে দাফন করছিল গতকাল খান ইউনিসের নামের মেডিকেলের অভ্যন্তরে পয়ত্রিশ জন মৃত ফিলিস্তিনির লাশ দাফন করছে। গাজায় যতই দিন যাচ্ছে ততোই ক্ষুধার্থ ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। হাসপাতাল গুলোর অধিকাংশ ধ্বংস হওয়ায় চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে গাজাবাসি, সুপেয় পানির তীব্র অভাব নানান ধরনের রোগ ব্যধিকে উসকে দিচ্ছে। সর্বশেষ খবরে জানাগেছে হিজবুল্লাল পক্ষ হতে বলা হয়েছে যতদিন পর্যন্ত ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের হত্যা করবে ততোদিন পর্যন্ত তারা ইসরাইলে হামলা পরিচালনা করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com