দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ ইসরাইলী বাহিনীর বিমান হামলা এবং একই সাথে স্থল অভিযান চলছেই। গাজা বর্তমান সময়ে এক ধ্বংস স্তুপ এবং শ্মশানে পরিনত হওয়া এক শহর। ঐতিহাসিক এই গাজাকে বর্বর ইসরাইলী বাহিনী কবরস্থানে পরিনত করেছে। প্রতিটি প্রান্তযেন এক একটি গোরস্থান। আধুনিক সভ্যতার এই সময়গুলো মানুষ হত্যা আবার তা শত শত, সহস্র মানবতাকে বোমা মেরে হত্যা করা সত্যিই এক নতুন অধ্যায়। ইসরাইলী হামলা এবং আগ্রসনের বিরুদ্ধে বীর বিক্রমে জীবনের মায়াত্যাগ করে লড়ছে হামাস যোদ্ধারা। তাদের সাফকথা হয় মরবো নতুবা মারবো তবুও প্রিয় জন্মস্থান গাজা ছেড়ে যাব না। গত কয়েকদিন যাবৎ দখলদার ইসরাইলী বাহিনী হামাসের প্রতিরোধ হামলায় চরমভাবে বিপর্যস্থ। প্রতিদিনই দখলদার ইসরাইলী বাহিনীর সৈন্যের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। গাজায় ইসরাইলী সেনার নিহত হওয়ার ঘটনায় ইসরাইলীদের মাঝে বাড়ছে ক্ষোভ, দশটির প্রধানমন্ত্রী নেতা নিহানু ইসরাইলীদের অত্যন্ত চাপে আছে। ইসরাইলের সংবাদপত্র গুলো খবর দিচ্ছে যে প্রধানমন্ত্রী নেতা নিহানুর জনপ্রিয়তা শুন্যের কোঠায় পৌছেছে। নিজের সেনাদের নিহত হওয়ার বিষয়টি কোন ভাবেই মানতে পারছে না ইসরাইলীরা। গতকাল ও নেতা নিহানু সরকারের বিরুদ্ধে রাজধানী তেল আবিতে ব্যাপক ভিত্তিক বিক্ষোভ দেখিয়েছে ইসরাইলীরা। আন্তজাতিক মিডিয়া গুলো খবর দিয়েছেযে বিশ্বের সব প্রান্তে বসবাস কারী ইহুদীরা বর্তমান সময়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় যে কোন সময়ে হামলার আশঙ্কা করছে। এদিকে রাশিয়া আবারও ফিলিস্তীনিদের জন্য জ্বালানী, খাদ্য পানীয় ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রেরন করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ−দিমীর পুতিন বলেছেন ইসরাইলের হামলা মানবতা বিরোধী অবশ্যই ইসরালকে হত্যাকান্ডের জন্য কঠিন পরিনতি ভোগ করতে হবে। গতকাল দখলদার ইসরাইলের গনমাধ্যম একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশ করেছে। গনমাধ্যম এর খবরে বলা হয়েছে ইসরাইল সরকার হামাসের সাথে সমঝোতায় যেতে চলেছে। খবরের অভ্যন্তরে খবর থাকে বলে যে কথা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রচারিত সেই খবর হলো বর্বর বাহিনী হামাসের দেশ প্রেম আর বিরত্বের কাছে দৃশ্যতঃ পরাজিত হয়েছে। ইসরাইলের গনমাধ্যম গুলো জানাচ্ছে সমঝোতার বিষয়টি যে ভাবে সামনে আসলো তা হলো হামাসের হাতে অন্তত দুই শতাধিক ইসরাইলী সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্যদেশের নাগরিকরা জিম্মি আছে। যেহেতু ইসরাইল হামাসের আস্তানায় সন্ধান পাইনি এবং তাদের নাগরিকদের জীবন যেকোন সময়ে বিপন্ন হতে পারে যে কারনে দেশটি হামাসের সাথে সমঝোতায় যেতে চাইছে। ইসরাইলের মনোভাব প্রকাশ পেলেও হামাসের অবস্থান এখন ও প্রকাশ পাইনি। অবশ্য হামাস গত সাত অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা ও জিম্মি করার পর থেকে বলে আসছে যে ইসরাইলের কারাগারে আটক হামাস যোদ্ধাদের মুক্তির বিনিময়ে কেবল মাত্র ইসরাইলী জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে। হুযি কর্তৃক আটক ইসরাইলের জাহাজ অবমুক্ত করলে গত দুই দিন যাবৎ জাপান সরকার কাতারের মধ্যস্থতায় হামাস যোদ্ধাদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আরব নেতাদের চীনে একত্রিত হওয়ার পর এবার আরবলীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বসতে যাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে ১৯৫৩ সালে ইসরাইল ও আরব যুদ্ধের সময়গুলোতে আরবলীগ একযোগে দখলদার ও তার সহযোগিদেরকে তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। এবারও কি পূর্বের সেই দৃশ্যের অবতরনা হতে যাচ্ছে? এমন আলোচনা বিশ্বের সর্বত্র। এদিকে ইরান ইসরাইলকে হামলার হুমকির পাশাপাশি কুটনৈতিক প্রচেষ্টাও শুরু করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট হামান রাইসি বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশকে চিঠি লিখে জানিয়েছে ফিলিস্তিনীদের অবরুদ্ধ করে রেখে ইসরাইল গাজায় নৃশংস ভাবে গনহত্যা পরিচালনা করছে আর এ কারনে ইসরাইলের সাথে রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক সহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার বিকল্প নেই, রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, কাজাস্তন, দক্ষিন আফ্রিকা, কেনিয়া, জর্দান সহ অন্যান্য দেশ গুলোকে চিঠি লিখেছে ইরান। গত তিন/চার দিন যাবৎ হিজবুল−াহ যোদ্ধারা ইসরাইলের ভূখন্ডে একের পর এক ক্ষেপনাস্ত্র ও ড্রোন হামলা পরিচালনা করছে। গতকাল ইসরাইলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায় হিজবুল−াহ যোদ্ধারা, পনের শত কিলোমিটার দুরবর্তী দেশ ইয়েমেন থেকে হুযি বিদ্রোহীরাও হামাসের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ক্ষেপনাস্ত্র হামলা পরিচালনা করছে। এদিকে কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার সর্বশেষ খবরে বলা হয়েছে হামাস প্রধান ইসমাইল জানিরাহ টেলিগ্রামের একটি পোস্টে বলেছেন যে আমরা গাজায় যুদ্ধ বিরতি নিয়ে একটি চুক্তির কাছাকাছি আছি। কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইসরাইলের কারাগারে আটক নারী, শিশু ও কয়েকজন হাসাম যোদ্ধার মুক্তির বিষয়টি প্রধান্য পাচ্ছে। গাজায় যুদ্ধ বিরতি পালিত হোক আর এমন আশা ও প্রত্যাশা বিশ্বের শত শত কোটি মানবতার।