এম এম নুর আলম ॥ আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী গুনাকরকাটি খানকায়ে নকশবন্দীয়া মোজাদ্দেদীয়া আজিজীয়া দরবার শরীফে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে হযরত গাওছুল আযম খুলনবী (রহঃ) এর ওরছ শরীফ এবং হযরত শাহ মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম নকশবন্দী মোজাদ্দেদী খুলনবী (রহঃ) এর ফাতেহা শরীফ আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ আব্দুর রহীম নকশবন্দী মোজাদ্দেদী খুলনবী (রহঃ) এর জন্য খতমে কুরআন পাঠ ও ফাতেহা শরীফ শেষে সকাল ৮.৩৮ মিনিটে মানবজাতির কল্যাণ, সমৃদ্ধি, ইহকালে শান্তি ও পরকালে মাগফিরাত এবং বাংলাদেশ সহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন, হযরত গাওছুল আযম খুলনবী (রহঃ) এর আওলাদ হযরতুলহাজ্ব আল্লামা খাজা শফিক আহমদ (মাঃজিঃআঃ)। এসময় হযরত গাওছুল আজম খুলনবী (রহঃ) এর আওলাদবৃন্দ, চট্টগ্রাম ধর্মপুর দরবার শরীফ এর বর্তমান সাজ্জাদানশীন হযরতুলহাজ্ব আল্লামা কাযী সৈয়্যদ মুহাম্মাদ আবদুশ শাকুর রায়হান আজিজী (মাঃজিঃআঃ) সহ বিভিন্নস্থান থেকে আগত হাক্কানী আলেম ওলামা, সরকারী কর্মকর্তা, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সর্বস্তরের মুসল্লীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, আখেরী মোনাজাতকে কেন্দ্র করে গুনাকরকাটি খানকা শরীফ এলাকা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের নগরীতে পরিণত হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুরিদান, আশেকান ভক্তবৃন্দ ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিবৃন্দের আমিন, আমিন ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে খানকা শরীফ। মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দু’হাত তুলে আমিন, আমিন ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে পরম করুনাময় আল্লাহু রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় মুসল্লিবৃন্দ আকুতি জানান। জীবনের সব পাপ-তাপ থেকে মুক্তির জন্য, পরম দয়াময় আল্লাহর দরবারে অনুনয়-বিনয়ের সাথে পানাহ চেয়েছেন তারা। ফজরের নামাজের পরে মোনাজতে শরীক হওয়ার জন্য আসা মুসল্লীবৃন্দের চাপে খানকা শরীফসহ আশপাশ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পুরুষদের পাশাপাশি হাজার হাজার নারীরাও মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন। মোনাজাত শেষে সকল মুসল্লীবৃন্দের মাঝে খানকা শরীফের খায়ের ও বরকত মিশ্রিত তাবারক বিতরণ করা হয়। তাবারক বিতরণ শেষ হওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষ নিজ গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা শুরু করে। এতে বাঁকা-দরগাহপুর সড়ক ও আশাশুনি-সাতক্ষীরা সড়ক এবং সংযোগ সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে এই যানজট নিরাসনে কঠোর পরিশ্রম করতে দেখা গেছে।