এম এম নুর আলম ॥ প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত মহানবী হযরত মোহাম্মাদ (সঃ) এর জন্মদিবস তথা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উদযাপন উপলক্ষে আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের গুনাকরকাটি দরবার শরীফ ও গুনাকরকাটি খাইরিয়া আজিজীয়া কামিল মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ফাতেহা শরীফ, মিলাদ শরীফ, দোয়া ও বিশাল জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় গুনাকরকাটি খাইরিয়া আজিজীয়া কামিল মাদ্রাসার সামনে থেকে সহস্রাধিক মোটর সাইকেল, পিকআপ, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, লেগুনা, ইজিবাইক, নজিমন, আলম সাধু ও ভ্যানযোগে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে একটি বিশাল জুলুস বের করা হয়। জুলুসটি কুল্যার মোড় হয়ে সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূণরায় মাদ্রাসার সামনে এসে শেষ হয়। এরপর মাদ্রাসা চত্বরে মিলাদ শরীফ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় হযরত গাওছুল আজম খুলনবী (রহঃ) এর আওলাদ পীরজাদা খাজা মোহাম্মাদ আছরারুল্লাহ (গোল্ডেন), পীরজাদা খাজা মোহাম্মাদ আজীজ আহম্মেদসহ আওলাদবৃন্দ, সাইদুল্লাহ চৌধুরী, গুনাকরকাটি খাইরিয়া আজিজীয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নূর ইসলাম, উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু তাহের, প্রধান মুফাচ্ছির মাওলানা রবিউল ইসলামসহ শিক্ষকবৃন্দ, প্রাক্তন ও নতুন ছাত্রবৃন্দ এবং সর্বস্তরের নবীপ্রেমিক মুসলমানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে জুলুসে অংশ নিতে ভোর থেকেই নবীপ্রেমী মানুষ বিভিন্ন স্থান থেকে মহানবী (সঃ) এর শান ও মান সম্বলিত ব্যানার এবং ফেস্টুন সহকারে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে এসে জড়ো হতে থাকেন মাদ্রাসা মাঠে। এবার জুলুসে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছেন। এসময় জুলুসের শৃঙ্খলা রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও কঠোর পরিশ্রম করতে দেখাগেছে। জুলুসে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রতি বছরই জশনে জুলুসে অংশ নিই। ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উপলক্ষে হামদ-নাত পড়ি। এতে অন্যরকম এক প্রশান্তি আসে মনে। এদিকে, জুলুস দেখতে সড়কের পাশে জড়ো হন বহু সংখ্যক মানুষ। জুলুস চলাকালে পুরো এলাকা জুড়ে ছিল সাজ সাজ রব। মহানবী (সঃ) এর এই পৃথিবীতে আগমনের দিনে নবী প্রেমিকদের মনে ছিলো এক অন্য রকম প্রশান্তি। জুলুসের পতাকা, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, তোরণের পাশাপাশি সবার মুখে ছিল হামদ, নাত, দুরুদ আর শ্লোগান। অন্যদিকে, বুধবার দিবাগত রাতে গুনাকরকাটি দরবার শরীফের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উপলক্ষে ওরছ ও ফাতেহা শরীফ এবং বিশ্বনবী (সঃ) এর জীবনী নিয়ে আলোচনা করা হয়। এরপর মীলাদ শরীফ শেষ করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। সবশেষে আগত মুরিদান, আশেকান ও ভক্তবৃন্দকে দরবার শরীফের খায়ের এবং বরকত মিশ্রত তাবারক বিতরণ করা হয়। এদিকে, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সঃ) উদযাপন উপলক্ষে বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ ও স্থানে নানাবিধ কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।