এফএনএস আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথিদের বিরুদ্ধে মার্চ মাসে চালানো এক হামলার বিস্তারিত তথ্য ব্যক্তিগত সিগন্যাল চ্যাট গ্রæপে শেয়ার করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে অবগত একটি সূত্র রোববার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, হেগসেথ তার স্ত্রী, ভাই এবং ব্যক্তিগত আইনজীবীসহ একটি গ্রæপ চ্যাটে এই তথ্য শেয়ার করেছিলেন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। দ্বিতীয় সিগন্যাল চ্যাটের এই তথ্যফাঁসের ঘটনা হেগসেথের অননুমোদিত মেসেজিং অ্যাপে অত্যন্ত স্পর্শকাতর নিরাপত্তা তথ্য শেয়ার করার বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ইয়েমেনে হামলার ছক শেয়ার করার অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগে বলা হয়, হোয়াইট হাউসের ‘গ্রæপ চ্যাটে’ তিনি ভুল করে এক সাংবাদিক দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক জেফ্রি গোল্ডবার্গকে যুক্ত করেছিলেন। ফলে ইয়েমেনে হামলা সংক্রান্ত যাবতীয় আলোচনা ওই সাংবাদিক আগে থেকেই জেনে যান এবং তা দ্য আটলান্টিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। ঘটনাটি ব্যাপক বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। ঘটনাটি এমন এক সময়ে সামনে এসেছে, যখন ওই তথ্যফাঁস তদন্তের অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে পেন্টাগনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। পরিচিত ওই সূত্রটি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দ্বিতীয় চ্যাটটি মূলত হেগসেথের নিয়োগ নিশ্চিত হওয়ার সময় তৈরি হয়েছিল প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য। কিন্তু তাতে সেনা হামলার পরিকল্পনার কিছু তথ্যও যুক্ত ছিল। চ্যাটে বিমান হামলার সময়সূচির বিস্তারিত উল্লেখ ছিল বলে তিনি জানান। প্রতিবেদনে বলা হয়, যে সময়ে সাংবাদিককে গ্রæপে যোগ করেছিলেন হেগসেথ, প্রায় একই সময়ে তিনি স্ত্রী, বন্ধুদের সঙ্গেও মার্কিন সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। এর ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের গোপনীয়তা এবং কর্তাদের বিশ^াসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পেন্টাগনের প্রকাশিত কিছু ছবিতে দেখা গেছে, হেগসেথের স্ত্রী জেনিফার রাউচেট, যিনি ফক্স নিউজ-এর সাবেক প্রযোজক, বিদেশি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংবেদনশীল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মার্চ মাসে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পেন্টাগনে হেগসেথের এক বৈঠকে দেখা যায়, তার পেছনে বসে আছেন তার স্ত্রী। হেগসেথের ভাই পেন্টাগনে নিযুক্ত মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের লিয়াজোঁ কর্মকর্তা। ট্রাম্প প্রশাসন আগ্রাসিভাবে তথ্য ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। আর এই প্রচেষ্টাকে পেন্টাগনে উৎসাহের সাথে গ্রহণ করেছেন হেগসেথ। এদিকে দ্বিতীয় এ ঘটনার পর, ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলছেন, হেগসেথ আর তার পদে থাকতে পারেন না। পেন্টাগনের এক মার্কিন কর্মকর্তা প্রশ্ন তোলেন, ‘এই নতুন তথ্য সামনে আসার পর কীভাবে হেগসেথ তার পদে থাকতে পারেন?’