আবু তালেব মোল্যা \ ওরা অপেক্ষায় থাকে! প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে থাকে। এই বুঝি জোয়ারের পানি নামলো! নদীতে ভাটা হতে চলেছে। দুরন্ত কৈশোরের দুর্দান্ত আর স্বভাব সুলভ মনন এর গতি ধারায় এভাবেই পারদ এর পুর্ণতা পায়। এক সময় নদীতে ভাটা শুরু হয়, জোয়ারের পানি নামতে থাকে। অন্যদিকে উজ্জ্বল, টগবগে, তরতজা, স্থান কাল পাত্র সম্পর্কে যথাযথ ধারনা না থাকা কিশোরের দল লবনাক্ত পানি আবছা স্বচ্ছতা ছায়া আর সদ্য পানি নেমে যাওয়া কাদামাটি সম্পৃক্ত অসমতল অনাড়ি ভূমিতে নেমে পড়ে ফুটবল নিয়ে। প্রানের উচ্ছ¡াসে ভরপুর কিশোররা মুহুর্তে একে অপরের প্রতিপক্ষ কে কাকে ছাড়িয়ে বল পায়ে প্রতিপক্ষের গোলপোস্ট নিশানা করে গোল দিয়ে জগৎ জয়ী আনন্দস্রোতে ভাসবে। কাদা মাটি এবং পানিতে বল যেন যেতে চায় না, কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নয় নিয়ম না মানা ক্ষুদে ফুটবলাররা। একদিকে চরম প্রতিদ্বন্দিতা অন্যদিকে পশ্চিম আকাশে সূর্য ডুবডুব মুহুর্ত সেই সাথে চিন্তার শেষ নেই… যে কোন সময় আবারও নদীতে জোয়ার আসতে পারে… তাদের এই মৌসুমী ফুটবল মাঠ পানিতে তলিয়ে যাবে। তাই যতটুকু সময় আছে খেলছে তুমুল, লড়ছে প্রাণপনে, কাদামাটির মাঠে কলাকৌশল, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা আর নিজের দলকে জয়ী করতে গোল করতেই হবে। দর্শকের উপস্থিতিও কম নয়, অতি ক্ষুদ্রাকার অনাবিস্মৃত মাঠটিতে অস্থায়ী গোলপোস্ট, থাকলেও ফুটবল মাঠের অন্যান্য উপকরণ, নিয়ম নীতি অনুপস্থিত। সট, পাসিং, হ্যান্ড বল, ফাউল যেনই নিয়ম। তাই বলে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগও নেই। আনন্দ, উৎসব, প্রানের সঞ্চার হৈ-হুলোর, চেচামেচি আবার কখনও বল কুমড়োখালি নদীতে। দর্শকের উপস্থিতিও কম নেই। অশৈশব দামাল ছেলেদের সরব উপস্থিতি, অপেক্ষা, প্রতিক্ষার প্রহর আর ফুটবল খেলারও অপ্রস্তুত ফুটবল মাঠের যে বর্ণনা তা হলো দেবহাটার ইছামতি নদীর শাখা পারুলিয়ার কোমরপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমড়োখালি খাল সংলগ্ন। গ্রাম বাংলার চিরায়ত দৃশ্যের পাশাপাশি কিশোর মন যেন, অপ্রতিরোধ্য, দুর্বার, দুর্দান্ত অনুরূপ ঘন বসতিপূর্ণ ঐতিহ্যের অধিকারী গ্রামটিতে ফুটবল মাঠের অভাব জানান দিচ্ছে। তবুও থেমে নেই কিশোর দল প্রতিদিনই যেন রাজ্য জয়ের আনন্দস্রোত, আনন্দ আয়োজন, আনন্দ যাত্রা।