দেবহাটা অফিস \ বৃহস্পতিবার সকাল দশটা অন্যান্য দিনের ন্যায় গতকালও পারুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানে রত। এমন সময় হাতে লাঠি ভর করে বিদ্যালয় আঙ্গিনায় প্রবেশ করলেন সাদা পাঞ্জাবী পরা এক বৃদ্ধ। আগে প্রবেশ করেই অফিসে অবস্থান করা শিক্ষকদের সামনে উপস্থিত হলেন, লাঠির সাহায্যে চলাচল করা এবার নিজের পরিচয় জানালেন, এভাবে আমি মো: আবুল কাসেম এক সময় সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ছিলাম, অনেক বছর পূর্বে অবসর নিয়েছি। সময় পেলেই অসুস্থ শরীর নিয়ে বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে যেয়ে কোমলমতি সোনামনিদের সাথে মিলিত হয়। পড়ালেখা শেখানোর চেষ্টা করি খোজ খবর নিই। ততোক্ষনে পরম শ্রদ্ধেয় অতিথির পরিচয় জেনে শিক্ষকরা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন আতিথেয়তায়। প্রধান শিক্ষক অসুস্থ থাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মলিককে অনুরোধ জানান সোনামনিদের ক্লাসে যাওয়ার ইতিমধ্যে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু তালেব মোল্যা উপস্থিত হয়ে জেলার শিক্ষার বিস্তরের এক সময়ের আলোকিত ব্যক্তিত্বকে পরম শ্রদ্ধায় স্বাগত জানান। শ্রেনি শিক্ষক সাহানুর নাহারের অনুমতি নিয়ে শ্রেনি কক্ষে প্রবেশ করলেন, শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার অনুমতি প্রার্থনা পরবর্তি তিনি প্রতিজন শিক্ষার্থীর নাম পরিচয় জানলেন, পাঠদান চলছিল বাংলা তিনি বর্ণমালা, সরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ, অক্ষর লেখার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তর আলোচনা করলেন, নিজেই চক পেন্সিল নিয়ে ব্লাক বোডে লেখার মাধ্যমে পাঠদান করলেন। বয়স্ক শরীর, সুস্পষ্ট বার্ধক্যের ছোয়া বয়স সত্তর উর্ধ কিন্তু চমৎকার পাঠদান পদ্ধতি, স্পষ্ট উচ্চারন, দীর্ঘ সময় পাঠদান করলেন ক্লান্তিহীন ভাবে। অবসর জীবন যাপন করলেও তিনি যে শিক্ষাকে ত্যাগ করেন নি, প্রাথমিক শিক্ষা অন্তঃকরনে তা যেন আলোর বিচ্ছুরন ঘটাচ্ছিলেন। উপস্থিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সহ শিক্ষকরা। বিস্ময়ে আর অতি মনোযোগ দিয়ে প্রত্যক্ষ করছিলেন পাঠদান। শিক্ষার্থীদের মুহুর্তে অতি আপনজনে পরিনত করলেন শিক্ষাবীদ আবুল কাসেম বারবার আসেনা, সারা দেশে এমনই আলোকিত আবুল কাসেমের জন্ম হোক।