দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ শীতের তীব্রতা কিছুটা হ্রাস পেলেও অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ধেয়ে আসছে শৈত প্রবাহ। গত দুই, তিন দিনে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় সাতক্ষীরার প্রকৃতি, সন্ধ্যা নামতে না নামতেই কুয়াশা বৃষ্টি বড় বড় শিশির বিন্দু যেন বৃষ্টির মত অবিরাম ঝরছে তো ঝরছে। রাত যত গভীর কুয়াশার ডালা ততই বিস্তৃত হচ্ছে সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। চালকরা অনেকটা দুর্ঘটনাকে সঙ্গী করেই যানবাহন চালাচ্ছে। নদী পথ যাত্রা তো রীতিমত হুমকির মুখে পড়েছে। শীতের এই সময়গুলোতে কুয়াশা স্বাভাবিক বিষয় কিন্তু অতি কুয়াশা জনজীবনের শীত অপেক্ষা অধিকতর বিপর্যস্থতায় নিচ্ছে। গত দুই তিন দিনে সাতক্ষীরার আকাশে দশটা বা তারও পরে সূর্য দেখা গেছে। কর্মব্যস্ত লোকজন সকালে ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে ঘরের বাইরে বের হতে পারছে না যে কারণে কাজকর্ম হতে বিরত থাকতে হচ্ছে। সকালের কুয়াার ক্ষেত্র এতটুকু ঘন এবং অন্ধকারাচ্ছন্ন দুই হাত দুরেও চোখ মেলে দেখা কষ্টকর। আবহাওয় দপ্তর শীত এবং কুয়াশা উভয় নিয়ে ভাল কোন খবর দিতে পারছে না। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে দুই এক দিনের মধ্যেই শৈত্য প্রবাহের মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশ এবং সপ্তাহব্যাপী তার স্থায়ীত্ব থাকতে পারে। উত্তরের হীমেল হাওয়া ক্রমাগত বইতে থাকবে যা শৈত্য প্রবাহের অংশীদার। গত দুই দিনে সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ সড়কে ভোর ৫টা হতে সকাল ৯/১০ টা পর্যন্ত যানবাহনের উপস্থিতি ছিল যৎসামান্য। ঢাকা—সাতক্ষীরা শ্যামনগর যাতায়াত করা পরিবহনগুলোর আগমন ও প্রস্তান থাকলেও হাইভোলটেস হেট লাইটের মাধ্যমে চলাচল করছে এবং অতি ধীর গতিতে। ব্যাটারী ভ্যান, ইজি বাইক মহেন্দ্র এবং সবজিবাহী মিনি ট্রাক গুলোর যাতায়াত হ্রাস পেয়েছে। সাতক্ষীরার কলারোয়া, পাটকেলঘাটা, তালা, খুলনার চুকনগর হতে সবজিবাহী মিনিট্রাক গুলো ভোর ৫/৬ টার মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা শহরসহ অপরাপর উপজেলায় পৌছালেও কুয়াশার কারণে সবজি দেরীতে পৌছাচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহনে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কায়িক পরিশ্রমী মানুষরা অর্থাৎ যারা দিন আনে দিন খায় তারা শীত আর কুয়াশার প্রাচীর ভেদ করে কাজ করতে পারছে না। অতি কুয়াশা সবজি, রবিশস্য সহ অপরাপর কৃষি উৎপাদনে সমস্যার সৃষ্টি করছে। সাতক্ষীরার পারুলিয়া এলাকার সবজি চাষী একরামুল কবির জানান শীতে সবজি চাষে এবং অপরাপর কৃষি উৎপাদনে খুব বেশী ক্ষতি না হলেও ঘন গাঢ় কুয়াশা সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি করছে। বিশেষ করে কুয়াশার পানির স্পর্শে বীজতলা পুড়ে যাচ্ছে। সবজি গাছ এবং বীজতলা হলুদাভাব হচ্ছে। চাষীরা কুয়াশার কবল হতে রক্ষা করতে বীজতলা ও সবজি বাগানের উপর পলিথিন সহ অপরাপর প্রতিরোধক দিচ্ছে। ইজি বাইক চালক হযরত আলী জানান গত কয়েকদিনের কুয়াশার কারণে সকালে গাড়ী চালাতে পারছি না যে কারণে আয় রোজগার হচ্ছে না। বর্তমানে সাতক্ষীরার চিংড়ী ঘের গুলোতে ছেচা মারা চলমান। অতি কুয়াশার কারণে ঘের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা ঘের ছেচা মারা করতে হিমসিম খাচ্ছে। সড়কে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে ঘন কুয়াশার কারণে। নিরাপদে চলাচল এবং ঘন কুয়াশার মধ্যে ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা আর কুয়াশার মধ্যে বের হলেও নিরাপত্তা, সতর্কতার সাথে চলাচল করাই উত্তম।