রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০০ পূর্বাহ্ন

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী যুবসমাজ -প্রধানমন্ত্রী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

এফএনএস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী যুবসমাজ। পৃথিবীর অনেক দেশ রয়েছে যেখানে প্রবীণদের বসবাস বেশি। আমরা সে অবস্থায় যেতে চাই না। আমাদের তরুণ সমাজকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে চাই। এর জন্য বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেই নানা উদ্যোগ নিয়েছে যেখান থেকে তারা নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুবসমাজ যেন সহজে ঋণ নিতে পারে তার জন্য বিনা জামানতে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা নিয়েছি। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা কিংবা যারা বিদেশ যেতে চায় তারা তাদের জমি কিংবা সম্পদ বিক্রি করে যেন বিদেশ না যেতে হয় তার জন্য সহজে ঋণ পেতে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক তৈরি করেছি। করোনাকালে তরুণ সমাজের ভ‚মিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাকালে আমাদের যুবসমাজই এগিয়ে এসেছিল। তারা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে সব জায়গায় নানামুখী কাজ করছে। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবক বয়সেই জাতির পিতার সেবা করার মানমানসিকতা গড়ে ওঠে। যেটা তার পরবর্তী জীবনেও আমরা দেখেছি তিনি তা পালন করেছিলেন। জীবনের সবচাইতে সুন্দর সময় যুববয়সটা সংগ্রামের মধ্যদিয়েই কাটিয়েছেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং মানুষকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। যার ফসল আমাদের স্বাধীনতা। মানুষকে সুসংগঠিত করা এবং যুবকরা যে পরিবর্তন চায় এবং পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চায় সেটা বুঝতে পেরেই যুবকদের সংগঠিত করেছিলেন। তিনি সবসময় চাইতেন আমাদের যুবসমাজ সুশিক্ষাই শিক্ষিত হবে, কারিগরি শিক্ষা, বিজ্ঞান শিক্ষা, বিভিন্ন শিক্ষার মাধ্যমে মনমানসিকতা গড়ে উঠবে এবং তাদের মেধাবিকাশের সুযোগ পাবে। তিনি মনে করতেন যুবস¤প্রদায় হচ্ছে আসল সম্পদ যারা তাদের শক্তি দিয়ে মেধা দিয়ে একটি জাতিকে সঠিক পথে নিয়ে যেতে পারে এবং দেশকে গড়তে পারে। তিনি সবসময় যুবকদের ওপর আস্থা রাখতেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়তে সোনার ছেলে চেয়েছিলেন। আমি মনে করি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে তিনি যে ডাক দিয়েছিলেন এদেশের যুবসমাজই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সত্যিই যার যা কিছু আছে তা নিয়েই তারা মুক্তিযুদ্ধ করে। যুবকরাই বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল এদেশের স্বাধীনতায়। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুপ্রেরণা বুকে ধারণ করে দেশের মানুষের জন্য কিছু করার অদম্য বাসনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এ দেশের লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবী তরুণ। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিবছর আয়োজিত হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’। ২০২০ সালে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের এবং বৈশ্বিক যুবাদের সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডের অবদানের স্বীকৃতি দিতে ‘ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল’ এর অধীনে প্রধানমন্ত্রীর নামে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয়েছিল ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০’। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৯৬০ জন এবং জাতীয় পর্যায়ে তিন হাজার ২৫৬ জন অংশ নেন এই আয়োজনে। গত আসরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এ বছর আবারও আয়োজিত হয় ‘শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২২’। এই আয়োজনের মাধ্যমে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে মোট ১২ জন তরুণ-তরুণীকে তাদের স্বেচ্ছাসেবী ও মানবিক অবদানের জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে। সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ১১ জনের হাতে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত ১১ জনের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা এবং সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান ক্যাটাগরিতে অসাধারণ অবদানের জন্য এ বছর সম্মাননা পেয়েছেন শরীয়তপুরের বাসিন্দা মাসুম আলম এবং নেত্রকোনার কামরুন নাহার লিপি। শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি ও কারিগরি ক্যাটাগরিতে অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন জাগো ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক করভি রাকসান্দ দ্রুব এবং পেন ফাউন্ডেশনের মেঘনা খাতুন। দেশপ্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন রাঙ্গামাটির এন কে এম মুন্না তালুকদার এবং ল²ীপুরের রাজু আহমেদ। জ্যেষ্ঠদের প্রতি আদর্শ সেবা বা সমাজকল্যাণে অবদানের জন্য বরিশালের মিল্টন সমাদ্দার এবং সুনামগঞ্জের কাস্মিরুল হক সম্মাননা পেয়েছেন। আর ক্রীড়া, কলা (চারু ও কারু) ও সংস্কৃতিতে উলে­খযোগ্য অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শেরপুরের মেয়ে নিগার সুলতানা জ্যোতি এবং রাজশাহীর মোস্তফা সরকার। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল­াহ আল জ্যাকব ও যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন, মন্ত্রিসভার সদস্য, সিনিয়র সচিবসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। পুরস্কার প্রদান শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com