শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ন

চব্বিশ ঘন্টায় সাত শত ফিলিস্তীনিকে হত্যা করল ইসরাইল

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

গাজায় হামলা বন্ধ না করলে ইসরাইলে সাথে আলোচনায় বসবে না হামাস ঃ কাতার হতে ফিরে গেছে ইসরাইলের কর্মকর্তারা ঃ কাতারে পৌছেছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ঃ ইসরাইল এবার হত্যা করলো ফিলিস্তিন বিজ্ঞানীকে ঃ গাজা সীমান্তের বহুতল ভবনে চলছে হামলা ঃ হামাসের দূর্ভেদ্রঘাটি ধ্বংস করতে এবার ব্যানকার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করছে দখলদাররা ঃ লেবাননে হামলা চালানো ইসরাইল
দৃষ্টিপাত ডেস্ক ॥ গত চব্বিশ ঘন্টায় বর্বোরিত ইসরাইলী বাহিনী গাজায় বোমা হামলা চালিয়ে সাতশত নিরীহ ফিলিস্তীনিকে হত্যা করেছে। ইসরাইল হামাস যুদ্ধ বিরতির আয়োজন পুরোপুরি ভেস্তে গেছে। হামাস স্পষ্ট ভাবেই ইসরাইলকে জানিয়ে দিয়েছে গাজায় হামলা বন্ধ না করলে ইসরাইলের সাথে কোন ধরনের যুদ্ধ বিরতির আলোচনা হবে না। কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতির আলোচনায় যোগ দিতে ইতিমধ্যে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন কাতারের পৌছেছেন। উল্লেখ্য ফ্রান্স ইসরাইলের হামলা ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশেষ ভাবে সোচ্চার অবস্থান নিয়ে আছে। গতকাল পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে হামাসের সাথে কাতারে আলোচনায় রত ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা কাতার ছেড়ে ইসরাইলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান সালেহ আল আরোরি এক টেলিগ্রাফ বার্তায় জানিয়েছে ইসরাইল হামলা বন্ধ না করলে তাদের সাথে হামাস কোন ধরনের আলোচনায় না বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি টেলিগ্রাফকে আরও জানিয়েছে ইসরাইল হামাসের হাতে আটক তাদের সেনা সদস্যদের মুক্তি চাইছে এবং হামাসের পক্ষ হতে বলা হয়েছে তাদের কারাগারে আটক হামাস যোদ্ধাদের মুক্তির বিনিময়ে কেবলমাত্র হামাস ইসরাইলি সেনাদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারে। হামাসের পক্ষ হতে আরও বলা হয়েছে ছয় দিনের যুদ্ধ বিরতি ও বন্দীবিনিময়ের দিন গুলোতে ইসরাইল যে সকল ফিলিস্তীনিদের তাদের কারাগার হতে মুক্তি দেয় তার একটি বড় অংশ এবং অন্যান্য ফিলিস্তীনিদের কে গ্রেফতার করেছে এবং যুদ্ধ বিরতির দিনগুলোতে গাজার পশ্চিম তীরে গুলি বর্ষন করে অন্তত ছয় জন ফিলিস্তীনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে গত শুক্রবার হতে ইসরাইলের বিমান বাহিনীর বিমান গুলো গাজার উত্তর অঞ্চলকে সর্বাধিক তার্গেটে পরিনত করেছে। গতকাল পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে রবিবার দিনব্যাপী ইসরাইলের ঝাকে ঝাকে উড়ে আসা বিমানগুলো ইসরাইল সীমান্ত সংলগ্ন গাজার বহুতল ভবন গুলোতে হামলা চালিয়ে উক্ত ভবন গুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। এবারের হামলাতেও নারী ও শিশুরা নিহত হচ্ছে। আবারও বর্বর ইসরাইলি বাহিনী গাজাকে শিশু হত্যার নগরীতে পরিনত করেছে। গতকাল বিমান হামলায় ফিলিস্তীনিরা হারিয়েছে তাদের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ডঃ সুফিয়ান তায়েহকে। গাজা বিশ্ব বিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের এই বিজ্ঞানীর ইসরাইলের বোমা হামলার ঘটনায় নিহত হওয়ার পর পুরো গাজায় শোকাহত পরিবেশ বিরাজ করছে। গাজাবাসি তাদের সম্পদ এবং প্রিয় বিজ্ঞানীকে হারিয়ে শোকে মুখ্যমান। গাজায় ইতিমধ্যে চল্লিশ হাজার ভবন ধ্বংস করেছে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী জাতিসংঘের এক সমিক্ষায় বলা হয়েছে গাজায় যেভাবে ইসরাইলি বাহিনী বোমা হামলা তথা বিমান হামলা পরিচালনা করছে তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে গাজা নিশ্চিহৃ হতে বাধ্য। ইসরাইলি বাহিনী গাজার শরনার্থী শিবির গুলোতে বোমা হামলার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিনত করে চলেছে। তাদের ধারনা শরনার্থী শিবিরে বোমা হামলা পরিচালনা করলে এক সাথে অধিক সংখ্যক ফিলিস্তীনিকে হত্যা করা সম্ভব আর বাস্তবেও ঘটছে তাই। হাসপাতাল গুলো স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে হাত গুটিয়ে বসে আছে। গাজার বিখ্যাত হাসপাতাল আল সিফা দৃশ্যতঃ ইসরাইলের সেনাদের দ্বারা অবরুদ্ধ। হাসপাতালটি বিভিন্ন অংশে এখনও পর্যন্ত ফিলিস্তীনিদের লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। গতকালও গাজার একাধিক হাসপাতাল সহ ধ্বংস হওয়া বসতবাড়ীর অভ্যন্তর হতে লাশ সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। হামাসের দৃঢ় উচ্চারন তাদের অজেয় শক্তিকেই জানান দিচ্ছে এমন মন্তব্য পশ্চিমা বিশ্বের, এদিকে ইসরাইলের বিমান বাহিনীর অত্যাধুনিক বিমান এবং প্রযুক্তি নির্ভর রাডার ব্যবস্থা ও হামাসের ঘাঁটি খুজে ব্যর্থ হয়েছে যে কারনে ইসরাইলির সরকার চরম ভাবে হতাশ আর তাদের হতাশার কারনে দিনে দিনে হামাসের শক্তি ও সামর্থ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইসরাইল হামাসের দূর্ভেদ্য ঘাঁটির সন্ধান এবং তা ধ্বংস করতে এবার ব্যবহার করছে ব্যানকার বাস্টার বোমা। উক্ত ব্যানকর বাস্টার বোমা ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে পেয়েছে। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থা গাজায় ব্যানকার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ মানবতার জন্য বিশেষ করে মানবদেহের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুকিময়। এদিকে জাতিসংঘ আবারও ইসরাইলকে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেছে ইসরাইল যদি গাজায় গণহত্যা, ধ্বংস স্তুপের ঘটনা ঘটায় তাহলে তা হবে পুরোপুরি যুদ্ধাপরাধের সামিল। তুরস্ক এবং জর্দান আবারও জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। দুই দিন যাবৎ ইসরাইল হিজবুল্লাহর হামলার বিপরীতে লেবাননে হামলা চালাচ্ছে। যে কোন সময়ে লেবানন এবং ইসরাইল ভয়াবহ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com