বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
সুন্দরবনে বিএসএফের রেখে যাওয়া ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর দেবহাটা বিএনপির সদস্য নবায়ন উদ্বোধনী আয়োজনে জেলা বিএনপির আহবায়ক রহমাতুল্লাহ পলাশ বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন যুবদলের প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত কলারোয়ায যুবদল নেতার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ মুন্সীগঞ্জে তাপদাহে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ শ্রীউলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ভাড়াশিমলায় ২৫০ প্রান্তিক কৃষানের মধ্যে সবজির বীজ বিতরণ খুলনার সাবেক মহিলা কাউন্সিলর গ্রেফতার বসন্তপুর ফকিরপাড়া জামে মসজিদে বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল

চলছে তফসিল ঘোষণার জোর প্রস্তুতি ॥ নির্বাচনী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৩

জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে ॥ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া সংক্রান্ত ‘নির্বাচনী অ্যাপ’ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর আলোকে অ্যাপটির আগামী ১২ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এর উদ্বোধনের কথা রয়েছে। নির্বাচন ভবনের বেইজমেন্টে অবস্থিত কমফারেন্স রুমে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যে এটির যাত্রা শুরু হবে। এর আগে বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে এই কর্মযজ্ঞের উদ্বোধনী কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য চিন্তা করেছিল কমিশন; পরে সিদ্ধান্ত বদালানো হয়। প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার এই পদ্ধতির নামকরণ হয়েছে, – ‘স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ও অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন সিস্টেম’। পদ্ধতিটি চালু করতে সাংবিধানিক সংস্থার ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২১ কোটি টাকা। যার মধ্যে সফটওয়্যারের পেছনে ৯ কোটি ১১ লাখ এবং হার্ডওয়ারের পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এদিকে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরেই। নির্বাচনে কি ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে তার সার্বিক কর্মপরিকল্পনার খসড়া তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা শাখা-১ ও ২। আগামী ৯ নভেম্বর মহামান্যের সঙ্গে তফসিল ঘোষনা পূর্ববর্তী সাক্ষাত উপলক্ষ্যে নেয়া হচ্ছে ওই প্রস্তুতি। নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে যাতে অ্যাটেগ্লার্সে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করতে পারেন তার সু্িবধার্থে এই তোড়জোড় বলে জানা গেছে। কমিশন সূত্র বলছে, আগামী ১৩ নভেম্বর খুলনায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভার জন্য সময় নির্ধারণ করা আছে। তাই এদিনের আগে তফসিল ঘোষনার সুযোগ কম। এর পর যেকোন সময় ঘোষনার প্রস্তুুতি রয়েছে কমিশনের। ভোটগ্রহণ ৯ জানুয়ারি করার বিষয়ে কমিশনের মধ্যে একটা ঐক্যমত হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ হিসেবে এবার তফসিল থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত ৫৫দিন হতে পারে বলে নির্বাচনী কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন। তবে তফসিল ঘোষনার সময় দু-একদিন পেছলে ভোটগ্রহণ ১১ জানুয়ারি যেতে পারে; সেটাও রাষ্ট্রীয় ও সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বলেও জানা গেছে। অতীতের মতো এবারও তফসিল ঘোষণা করা হবে রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিভিশনের (বিটিভি) মাধ্যমে। জাতির উদ্দেশ্যে দেয়ার জন্য সিইসির এই ভাষণের খসড়া প্রস্তুতির কাজও চলছে সমানতালে। ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতিতে তফসিল সংক্রান্ত সার্বিক কার্যক্রম অবহিত করে কমিশনে ফেরার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রেকডিংয়ের সময় নেয়া হবে বলে ইসির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিশেষভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার ক্ষেত্রে এ দ্বন্দ্বটা প্রকট। দু’জন কমিশনার ও সচিব চান ডিসিরাই সব আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হোক। তবে সিইসিসহ দু’জন কমিশনার চাইছেন ইসির অনেক যোগ্য কর্মকর্তা রয়েছে তাদের মধ্যে থেকে কিছু আসনে রিটার্নিং কর্মকর্তা করার। দু’চারদিনের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলেও জানা গেছে। এ ছাড়া তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি সংক্রান্ত নির্বাচনী সামগ্রী ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। দৈনিক ইসির স্টোর থেকে মিনি ট্রাকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী এ্যাপে বিশেষ ধরণের চারটি সুবিধা রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, – যেকোন নির্বাচনে ঘরে বসে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। ভোটারগণ তার ভোটকেন্দ্রটি এই এ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন; সঙ্গে সুবিধা পাবেন কোন পথ দিয়ে তাকে কেন্দ্র পৌছাবেন তার পথনিদের্শনা, নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তারা প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর কত ভোট পড়লো তার একটি তথ্য-পরিসংখ্যান বা হিসাব দেখতে পারবেন এবং স্থানীয় সরকারের যে নির্বাচনগুলো হয় তার বিস্তারিত তথ্য যেমন,- কবে নির্বাচনটি হয়েছিল, ভোটার কত ছিল এবং নির্বাচনের মেয়াদ কবে শেষ হবে সেটিও জানা যাবে এর সহায়তায়। তবে চতুর্থ এই স্তরটি ফ্যাংশনাল হতে একটু বিলম্ব হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসির সংশ্লিষ্টরা। তবে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য এই অ্যাপটি কিছুটা ভোগান্ত্রি হতে পারে। কারণ মনোনয়নপত্র অনলাইনে সাব-মিশন করার পর আসনওয়ারী ভোটার সংখ্যানুপাতে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংবলিত বিশাল ভলিউম হবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে স্বাক্ষর সংবলিত নথির প্রথম ও শেষ পৃষ্টাসমূহ শুধু অ্যাপে আপলোড করতে পারা যাবে। অ্যাপের সক্ষমতা ও ধারণ ক্ষমতা বিবেচনায় ইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে হার্ড কপি বার্তা বাহকের মাধ্যমে রিটানিং কর্মকর্তার কাছে পৌছালেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর দায় শেষ হবে। এ ছাড়া আর আগে প্রার্থীর হলফনামা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থিত থেকে স্বাক্ষর করলেও এখন আগে স্বাক্ষর করানো হলফনামা আপলোড করলেই মনোনয়নপত্র বৈধ হবে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাংলাদেশ ইলেকশন এ্যাপে সাত ধরণের ব্যক্তির প্রবেশাধিকার থাকবে। যাদের মধ্যে ভোটার, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, রিটার্নিং কর্মকর্তা, সচিব এবং কমিশনসহ সকলের। সুিবধা থাকবে ৯ ধরণের এগুলো হচ্ছে, নির্বাচনী এলাকার নাম ও নম্বর; প্রার্থীর নাম, পরিচিতি, ছবি, দলীয় পরিচয় ও মার্কা, হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য; ভোট কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য (কেন্দ্রের নাম ও কেন্দ্রের নম্বর); কেন্দ্র ও ভোটারদের তথ্য (ভোটারগণ যাতে এ্যাপে দেখতে পারেন তাকে কোন কেন্দ্রে ভোট দিতে হবে); কোন কোন আসন, ভোট কেন্দ্রে ইভিএম ও কোন কোন আসন-ভোট কেন্দ্রে ব্যালট ভোট হবে; কেন্দ্র ও আসন ভিত্তিক মোট ভেটার সংখ্যা (পুরুষ ও মহিলা ভিন্ন ভাবে); নির্বাচন শেষে অঅসন-কেন্দ্র ভিত্তিক কোন প্রার্থী কত ভোট পেয়েছে তা সংখ্যায় ও চার্টের মাধ্যমে প্রদর্শণ; দল ভিত্তিক প্রাপ্ত আসন সংখ্যা ও নিকটতম প্রার্থীর পরিচিতি ও প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা। একজন কর্মকর্তা বলেন, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা সংক্রান্ত অ্যাপটির কার্যক্রম চূড়ান্ত। এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা অর্থাৎ উদ্বোধনের অপেক্ষা। আগামী ১২ নভেম্বর সম্ভাব্য সময় ধরে উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। কারণ তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এই কার্যক্রমটি চালু হয়ে যাবে। কোনো ধরণের ত্রুটি নেই। যত ধরণের সমস্যা ছিল ট্রেয়াল বেইজ সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইসির তথ্যমতে, অলনাইনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র ব্যাপক পরিসরে শুরু হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে। এর আগে ঢাকা-১৭ আসনে সীমিত পরিসরে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমার বিধান রেখেছিল ইসি; যা ছিল পরীক্ষমূলখ (টেস্ট কেস)। এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান নির্বাচনী বিধিমালায় সংযুক্ত করা হয়। দশম সংসদ নির্বাচনে এই সুযোগ থাকলেও তা কার্যকর ছিল না।সেটি পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক ছিল না। অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সেটির কাগজপত্রও (হার্ড কপি) রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হয়। এখন বিষয়টি পুরোপুরি অনলাইননির্ভর করায় ওই ঝামেলা শেষ হলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com