মাছুদুর জামান সুমন \ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে চিংড়ী। সাদা সোনা খ্যাত এই চিংড়ী শিল্প উৎপাদনে আমাদের দেশ যেমন বিশ্ব ব্যবস্থায় স্বীকৃতি লাভ করেছে অনুরুপ ভাবে বাংলাদেশ চিংড়ীর কল্যানে বিশ্বের দেশে দেশে পরিচিতি পেয়েছে আলোকিত হয়েছে। অপার সম্ভাবনাময় এই শিল্প গত কয়েক দশক যাবৎ দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে এবং দেশের অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে দেশের অপারসম্পদ চিংড়ী শিল্প বর্তমান সময় গুলোতে এক অসুস্থ ও কঠিন সময় অতিক্রম করছে। এক শ্রেনির অসাধু চিংড়ী ব্যবসায়ীরা চিংড়ীর ওজন কৃত্রিম ভাবে বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে চিংড়ীতে নানান ধরনের অপদ্রব্য পুশ করছে। ভাতের মাড়, জেলি, পানি সাগু সহ এই জাতীয় তরল অথচ ওজন বর্ধক পানীয় পুশের মাধ্যমে চিংড়ীর ওজন ঠিকই বৃদ্ধি হচ্ছে কিন্তু পুশ করা চিংড়ী স্বাস্থ্যহানীর কারনে পরিনত হচ্ছে। দেশের সর্বাধিক চিংড়ী উৎপাদন হয় সাতক্ষীরা জেলাতে বিধায় পুশের ক্ষেত্রও অধিকতর এই এলাকায়, বিধায় রপ্তানী যোগ্য চিংড়ীর সিংহভাগ পুশে পরিনত হচ্ছে। বিশ্ব বাজারে বরাবরই বাংলাদেশের চিংড়ীর গুনগত মান উন্নত হওয়ায় চাহিদার ক্ষেত্র ও ব্যাপক ভিত্তিক বিস্তৃত। পুশকরা চিংড়ী স্বাস্থ্য সম্মত নয় এবং মানব দেহের জন্য বিশেষ ক্ষতির কারন। ইতিপূর্বে আমদানী কারক দেশ গুলোর পক্ষ হতে আমাদের চিংড়ীর মান নিয়ে সতর্কতা ও করা হয়েছে। চিংড়ীতে যদি অপদ্রব্য পুশ অব্যাহত থাকে তাহলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের মোক্ষ্যম মাধ্যম টি যে কোন সময়ে রপ্তানী বন্ধ হতে পারে এমন আশঙ্কা অমুলক নয়। সাতক্ষীরার বাস্তবতায় মাঝে মাঝে চিংড়ীতে পুশ বিরোধী অভিযান পরিচালিত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও বন্ধ হচ্ছে না চিংড়ীতে পুশ। দেশ বিরোধী পুশ বিরোধী অভিযানে সাধারনত ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং ভ্রাম্যমান আদালত অর্থদন্ড সহ স্বল্পমেয়াদী কারাদন্ড সহ অপরাপর ব্যবস্থা গ্রহন করে। দেশের অর্থনীতি এবং দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় চিংড়ী শিল্প। এই শিল্পের কল্যানে আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি সুদৃঢ় হয়েছে এবং হচ্ছে বিধায় চিংড়ীতে পুশ কারীদের কে শুধুমাত্র ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা শেষ কথা হওয়ার সুযোগ নেই। অনৈতিক, অবৈধ পুশ কে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ হিসেবেই চিহিৃত করার সময় এসেছে। আইনের সংশোধন, সংযোজন, পরিবর্তন, পরিবর্ধনের মাধ্যমে পুশ কারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রনয়ন করতে হবে। দেশের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগোপোযোগী আইন প্রনয়ন এবং নির্বাহী বিভাগ সহ অপরাপর প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে অপরাধ প্রবনতা রোধ করার ঘটনা চিংড়ীতে পুশ বিরোধীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগের সময় এসেছে যে চিংড়ী শিল্পের কল্যানে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে, সাতক্ষীরার প্রেক্ষিতে বলাযায় চিংড়ী নির্ভর অর্থনীতি সেই আলোকিত, সম্ভাবনাময় চিংড়ী শিল্পের ক্ষতি সাধনে যারা জড়িত অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। অতীতের সোনালী আশ পাট হারিয়ে গেছে, কর্তৃপক্ষ যদি সতর্ক না হয় এবং পুশ বিরোধী কঠোর আইন প্রয়োগ না করে তাহলে চিংড়ী শিল্প ধ্বংস হবে না এমনটি বলা যাবে না।