রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন

চোখ রাঙাচ্ছে শীত \ বাড়ছে তীব্রতা হচ্ছে বিস্তৃত \ জনজীবনে ছন্দপতন ছড়িয়ে পড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগ বালাই

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৫

দৃষ্টিপাত রিপোর্ট \ আসি আসি করে এসেই গেছে শীত। বলা যায় পুরোপুরি জেকে বসেছে শীত। হীমেল হাওয়া শীতকে কেবল বিস্তৃত করেনি রিতীমত কনকনে শীতে কাহিল জনজীবন। গতকাল দিনব্যাপী উত্তরের হীমশীতল অতি ঠান্ডা বাতাসের তীব্রতা যত বেশী পরিলক্ষিত হয় শীত ততোবেশী বিস্তৃত ঘটেছে। আবহাওয়া দপ্তর অবশ্য পুরো জানুয়ারি মাস পর্যন্ত শীতের তীব্রতার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে চলতি মাসে তিন অথবা চারটি শৈত প্রবাহের দেখা মেলবে। গত দুই দিন যাবৎ দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে এবং দক্ষিণ পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায় শীতের ব্যাপক উপস্থিতি বিষয়টি ছিল বিশেষভাবে আলেখ্য। শীতের পাশাপাশি ঘনীভূত কুয়াশার চাদরে রাত হলে সকাল এগারটা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকার খবর প্রকাশিত হয়। দেশের কোথাও কোথাও দশ/বার ডিগ্রী তাপমাত্রা দেখা যায়। দেশের অন্যান্য এলাকার ন্যায় সাতক্ষীরাতেও শুরু হয়েছে শীতের চোখ রাঙানি বলা যায় রীতিমত শীত তান্ডব। এই শীতে জনজীবনের স্বাভাবিক জীবন যাপনে কেবল ছন্দ পতন ঘটেনি, খেটে খাওয়া মানুষগুলো বিশেষ করে দিন আনা দিন খাওয়া কায়িক পরিশ্রমী মানুষ গুলো গত দুই দিন শীতের তীব্রতা আর হীমশীতল বাতাসের কল্যাণে মাঠে ঘাটে কাজ করতে পারেনি। বর্তমান সময়ে সাতক্ষীরার চিংড়ী ঘেরগুলোর অধিকাংশ ছেচামারা স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ঘাট করা হচ্ছে এ ক্ষেত্রেও শীতের তান্ডব শ্রমজীবী মানুষগুলোকে কর্মবিমুখ করে তুলেছে তার প্রভাব পড়ছে জীবন জীবিকায়। তীব্র শীতে হতদরিদ্র, দুঃস্থ সহায়সম্বলহীন মানুষগুলো শীত কষ্টেও দিনাতিপাত করছে। অবশ্য সরকারিভাবে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে শীতবস্ত্র অর্থাৎ কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। সরকারিভাবে কম্বল দেওয়ার পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান তথা ধনীক শ্রেণিদেরকেও শীতবস্ত্র বিতরণে এগিয়ে আসা এখনই উপযুক্ত সময়। শীত কষ্ট লাঘবে গ্রামীন জনপদের চিরায়ত পদ্ধতি খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টাও দেখা যাচ্ছে। শীতের তীব্রতার সাথে সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে শীত ও ঠান্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। সাতক্ষীরার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, সর্দি, কাশি, এ্যালার্জি, হাঁপানি ঠান্ডাজনিত জ্বরের প্রাদুর্ভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শনুযায়ী ঠান্ডাজনিত রোগের ঔষধ সেবন করা উচিৎ। অতি শীত থেকে পরিত্রান পেতে অবশ্যই গরম পোশাকের বিকল্প নেই। দিনের বেলাতে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ রাখাই ভাল কারণ ঘরের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস যেন প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়টি বিশেষভাবে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা হতে বিরত থাকাই শ্রেয় কারণ ঠান্ডা পানি এই শীতে শরীরে নানা ধরনের ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কুসুম গরম পানি পান এবং একই ধরনের পানির সাহায্যে গোসল সারা উত্তম, হাত মোজা, পা মোজার বিকল্প নেই। রাতে সকালে শিশির বৃষ্টি ও কুয়াশার পানি হতে বিরত রাখতে হবে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন প্রতঙ্গ। শীতের সময়গুলো বৃদ্ধ ও শিশুদের জন্য বিশেষ পরিচর্যাও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। বৃদ্ধ ও শিশুদের শরীর রোগ প্রতিরোধী ধারণ ক্ষমতা কম এমন বলেছেন চিকিৎসকরা বিধায় অতি শীত আক্রান্ত বৃদ্ধ ও শিশুর জন্য নিউমোনিয়া আক্রান্তের আশাংকা অমূলক নয়। শীতের রাতে শিশু ও বৃদ্ধদের শরীর থেকে গরম কাপড় বিশেষ করে লেপ, কাঁথা, কম্বল সরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। কোন অবস্থাতেই শীত কাতর এবং শীত আক্রান্ত হওয়া যাবে না। শীত প্রতিরোধী এবং মোকাবিলাই শীত যন্ত্রণা ও ঠান্ডা জনিত রোগ বালাই হতে রক্ষার একমাত্র সমাধান।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com