রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
শান্তি আলোচনার পর ইউক্রেনে বৃহত্তম ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া সিরিয়ায় পুনরায় কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বিশ্বব্যাংক অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মন্তব্য, ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক গ্রেফতার সৌদি আরবে অবৈধদের ধরতে অভিযান, গ্রেফতার ১৫ হাজার হায়দরাবাদের চারমিনারের কাছে ভবনে আগুন, শিশুসহ নিহত ১৭ যে কারণে ব্যর্থ হলো ভারতের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ ভারতের জন্য আকাশসীমা আরও এক মাস বন্ধ রাখবে পাকিস্তান: রিপোর্ট ইরানে শিয়া মাজারে হামলার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ—মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ টর্নেডোয় ২৭ জনের প্রাণহানি যে কারণে পেনাল্টি নেননি হালান্ড

জয়শঙ্করের বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

এফএনএস: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের একটি বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ‘বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা ভারতের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়’— জয়শঙ্করের এমন মন্তব্যের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। আশপাশ থেকে দু’চারজন কী বললো না বললো সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে আমরা বরং আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জয়শঙ্করের বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন তিনি। গত রোববার নয়াদিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য উৎসবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশ বিষয়ে নানান কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা নয়াদিল্লির সঙ্গে কোন ধরনের সম্পর্ক চায়। এই দুই প্রতিবেশী দেশ খুবই বিশেষ ইতিহাস ধারণ করে, যার শিকড় ১৯৭১ সাল। মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, তিনি (জয়শঙ্কর) বলেছেন, কেমন সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ, সেটা বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অবশ্যই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। একইভাবে ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। এটা দুই পক্ষেরই বিষয়, এটা বলাতে দোষের কিছু নেই। নয়াদিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্কের সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আছে এ ব্যাপারে। আমরা ভারতের সঙ্গে গুড ওয়ার্কিং রিলেশনস, সেটা চাই এবং একটা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ; যার যার আগ্রহের বিষয় আছে। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো অস্পষ্টতা নেই। তৌহিদ হোসেন বলেন, তবে তিনি (জয়শঙ্কর) বলেছেন যে, বাংলাদেশের বিভিন্নজন বিভিন্ন আপত্তিকর কথা বলছে, সরকারের ভেতর থেকে। আমি এটা নিয়ে ন্যায়—অন্যায় উচিত—অনুচিত বিচার করতে চাই না। কিন্তু আমার কথা হলো, এ রকম কথা আমাদের এখান থেকে বলছে, ওনাদের ওখান থেকেও বলছে। পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রস্তাবের প্রসঙ্গ টেনে উপদেষ্টা বলেন, ওনাদের মুখ্যমন্ত্রী তো পারলে এখানে জাতিসংঘের ফোর্স পাঠায় দেয়। ওনাদের একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অহরহ বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো চলতে থাকবে ধরে নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি, সম্পর্ক ভালো করা যায় কিনা, কাজেই আমোদের অবস্থান সেটাই। আশপাশ থেকে দু’চারজন কী বললো না বললো সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে আমরা বরং আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি। ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ঢাকা—দিল্লির সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সম্পর্ক ভালো করতে গেলে বরং আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী যে ওখানে ভারতীয় আতিথেয়তায় থেকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছেন, এগুলো আসলে সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। ওনার বক্তব্য আগুনে ঘি ঢালছে, এটা তো স্বীকৃত ব্যাপার, এটা সবাই জানে। ভারতের ভিসা প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভিসা তাদের অধিকার। তারা কাউকে ভিসা না দিলে আমাদের কিছু বলার নেই। যখন ভিসা দেওয়া হচ্ছে না তখন আমরা তো বিকল্প খুঁজে নিবই। কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের বিকল্প দেখতেই হবে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংখ্যালঘু নিযাতনের অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু সম্পর্কে উনি আবার বলেছেন। এই অভিযোগ প্রধানত ভারতীয় মিডিয়া যে তথ্যপ্রবাহ সৃষ্টি করেছে তার ভিত্তিতে এইগুলো বিভিন্নজন বিভিন্নখানে বলে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভারতের বিষয় হতে পারে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বাংলাদেশের বিষয়। ভারতের সংখ্যালঘুর বিষয়টি আবার তাদের বিষয়। কাজেই এ ব্যাপারটি অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ। এদিকে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা বলেছেন। তবে এই অর্থ কাদের দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য জানা নেই। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে কোনো স্পষ্ট তথ্য নেই কাকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কে সেটা খরচ করেছে। আমরা এখনো জানি না। আমরা জানি না বিষয়টা কে করেছে এবং আমাদের যে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো তারা বলেছে, এ রকম কোনো এন্ট্রি তাদের নাই। একটি এনজিওতে কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তৌহিদ হোসেন বলেন, কোনো টাকা এনজিও ব্যুরোর অ্যাপ্রুভাল ছাড়া ক্যাশ করা সম্ভব না। কাজেই ২৯ মিলিয়ন ডলারের ব্যাপারে এনজিও ব্যুরো কিছু দেখতে পাচ্ছে না। তাহলে আমাদের আপাতত তাদের (এনজিও ব্যুরো) কথা মেনে নিতে হবে। তারপরে যদি কোনো তথ্য বের হয় সেটাকে আমরা দেখব। এর আগে বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন নিয়ে স¤প্রতি দুই দফা কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে ২৯ মিলিয়ন ডলার এমন এক সংস্থার কাছে গেছে, যে সংস্থার নাম আগে কেউ শোনেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com