তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭৩ রানের ব্যবধানে পরাজিত করল নিউজিল্যান্ড। আগে ব্যাট করে মার্ক চ্যাপম্যানের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ আব্বাসের বিশ^রেকর্ডে ৩৪৪ রান করে স্বাগতিকরা। জবাবে দারুণ সূচনার পরও পাকিস্তান অলআউট হয় ২৭১ রানে। নেপিয়ারে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের সূচনা ভালো হয় না। ১১ বলে ১ রান করে বিদায় নেন কিউই ওপেনার উইল ইয়ং। নাসিম শাহের শিকার হন তিনি। আরেক ওপেনার নিক কিলি আউট হন দলীয় ২৯ বলে ১৫ রান করে আকিফ জাবেদের বলে বোল্ড হয়ে। ৩৩ রানে দুই ওপেনারকে হারায় নিউজিল্যান্ড। হেনরি নিকোলসকেও দ্রুতই সাজঘরের পথ দেখান আকিফ। ২৫ বলে ১১ রান করে বিদায় নেন নিকোলস। ৫০ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। তবে তারপরই দলটি পায় বিশাল জুটি। মার্ক চ্যাপম্যান ও ড্যারিল মিচেল ১৯৯ রানের জুটি গড়ে দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে বিশাল সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান। ১৭৪ বলে ১৯৯ রানের জুটি গড়েন চ্যাপম্যান ও মিচেল। মিচেলকে আউট করে অবশেষে এই জুটি ভাঙেন ইরফান খান। ৮৪ বলে ৭৬ রান করেন মিচেল। তার ব্যাট থেকে আসে চারটি করে চার ও ছক্কা। তারপর ক্রিজে নামেন অভিষিক্ত অলরাউন্ডার মোহাম্মদ আব্বাস। আব্বাস নেমেই আরো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন। মাত্র ২৪ বলে হাঁকান অর্ধশতক আর এতেই করে ফেলেন বিশ^রেকর্ড। অভিষেকে দ্রুততম সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ডটি এখন আব্বাসের দখলে। আগে এই রেকর্ড যৌথভাবে ছিল ভারতের ক্রুনাল পান্ডিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যালিক অ্যাথানজের দখলে। চ্যাপম্যান ও আব্বাসের জুটিতে আসে মাত্র ১২ বলে ৩১ রানের ক্যামিও জুটি। এই জুটি ভাঙে চ্যাপম্যান আউট হয়ে গেলে। তার আগে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেন তিনি। ৯৪ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন চ্যাপম্যান। তিনি থামেন ১৩২ রানে। ১১১ বলের ঝড়ো ইনিংসে হাঁকান ১৩টি চার ও ছয়টি ছক্কা। বিশ^রেকর্ড গড়ার পর আব্বাস থামেন ৫২ রান করে। ২৬ বলে ২০০ স্ট্রাইকরেটে এই ক্যামিও ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে তিনটি করে চার ও ছক্কা। ইনিংসের শেষ বলে ক্যাচ আউট হন আব্বাস। নির্ধারিত ৫০ ওভারে নিউজিল্যান্ড সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ৩৪৪ রান। পাকিস্তানের পক্ষে তিনটি উইকেট পান ইরফান। দুইটি করে উইকেট পান আকিফ ও হারিস রউফ। বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানকে দারুণ সূচনা এনে দেন উসমান খান ও আবদুল্লাহ শফিক। ৭৬ বলে ৮৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তারা। উসমানকে শিকার করে এই জুটি ভাঙেন নাথান স্মিথ। বিদায়ের আগে উসমান করেন ৩৩ বলে ৩৯ রান। চারটি চার ও দুইটি ছক্কা হাঁকান তিনি। খানিকবাদেই আরেক ওপেনার শফিকও বিদায় নেন ৪৯ বলে ৩৬ রান করেন। ৮৮ রানে দুই ওপেনারকে হারায় পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে ৭৯ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়েন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। পাকিস্তান অধিনায়ক রিজওয়ানকে শিকার করে এই জুটি ভাঙেন আব্বাস। ৩৪ বলে ৩০ রান করেন রিজওয়ান। চতুর্থ উইকেটে ঝড়ো জুটি পায় পাকিস্তান। ৫৯ বলে ৮৩ রান যোগ করেন বাবর ও আগা সালমান। বাবর আউট হওয়ার মাধ্যমে ভাঙে এই জুটি। ২০১৬ সালের পর প্রথম নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অর্ধশতক হাঁকান বাবর। তার ব্যাট থেকে আসে মোট ৭৮ রান। ৮৩ বলের ইনিংসে পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কা হাঁকান বাবর। এই জুটির পর আর কোনো বড় জুটিই পায়নি পাকিস্তান। ২৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর ২৭১ রানেই অলআউট হয়ে যায় দলটি। অর্থাৎ মাত্র ২২ রানে শেষ সাতটি উইকেট হারায় সফরকারীরা। সালমান সতীর্থদের উইকেট দেখতে দেখতে হাঁকান অর্ধশতক। ৪৮ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। পাকিস্তান ২৭১ রানে অলআউট হওয়ায় ৭৩ রানের দাপুটে জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। নাথান স্মিথ নিয়েছেন চারটি উইকেট। দুইটি উইকেট নিয়েছেন জ্যাকব ডাফি।