জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র সংশোধন ও হালনাগাদকরণ বিষয়ক খুলনা বিভাগীয় স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন কর্মশালা সোমবার সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র এনএসডিএস ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট প্রজেক্ট এই কর্মশালার আয়োজন করে। পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মহাপরিচালক মোঃ মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পরিসংখ্যান ছাড়া সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা যায় না। তাই পরিসংখ্যানভিত্তিক তথ্য-উপাত্তের ব্যবহার অতীতকাল থেকে হয়ে আসছে। অতীত-বর্তমানের তথ্য যাচাই করেই ভবিষ্যতের করণীয় নির্ধারণ করা সম্ভব। নির্ভুল পরিসংখ্যানের জন্য বিভিন্ন দপ্তর কাজ করে। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিসংখ্যান ব্যুরো সরকারি তথ্য-উপাত্তের নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। বিবিএস এর পরিসংখ্যান থেকে তথ্য নিয়ে বিভিন্ন দপ্তর তার পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারে। সভাপতির বক্তব্যে মহাপরিচালক বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরো কেবল জনশুমারি নয় বরং কৃষি ফসলের উৎপাদন, মানুষের আয়-ব্যয়, শিল্পখাতভিত্তিক শুমারিসহ বিভিন্ন শুমারি করে থাকে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, ডেল্টাপ্ল্যান বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরণে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এ প্রতিষ্ঠান। শুমারিতে পাওয়া তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করা হলে অনুমান নির্ভর সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার হয়না। ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রায় নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্রের আলোকে বিগত ১০ বছরে কী কাজ হয়েছে এবং এর ধারাবাহিকতায় নতুন করে কী করা যেতে পারে তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। অনেক দিন পরে পুনরায় জেলা গেজেটিয়ায় প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনার লক্ষ্যগুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বিশে^র ১৩৬টি নিম্নআয়, নিম্নমধ্যম আয় বা উচ্চ মধ্যম আয়ের ১১৭টি দেশ একই সাথে অনুরূপ জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র বাস্তবায়নে কাজ করছে। ফলে দেশগুলোতে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে পরিসংখ্যানের তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান মানসম্মত উপাত্তের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত ও কার্যকর উপাত্ত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রয়োজন। বিদ্যমান কৌশলপত্রের আলোকে নির্ভুল পরিসংখ্যান নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন উপাত্ত ব্যবহারকারীদের কাছে তথ্য পৌঁছানোর প্রক্রিয়া আরও সহজ হতে হবে। পরিসংখ্যান ব্যুরো সফলভাবে দেশে প্রথম বারের মতো ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ সম্পন্ন করেছে। আগামীতে জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্ট্রার বাস্তবায়ন হলে জনসংখ্যার তথ্য পেতে জনশুমারির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এখন বাস্তবতার নিরিখে ও চাহিদা অনুযায়ী জাতীয় পরিসংখ্যান উন্নয়ন কৌশলপত্র সংশোধন ও হালনাগাদ হওয়া প্রয়োজন। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জয়দেব চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। স্বাগত বক্তৃতা করেন বিভাগীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের যুগ্মপরিচালক মো: আক্তার হোসেন। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনএসডিএস ইমপ্লিমেন্টেশন সাপোর্ট প্রজেক্টের উপপ্রকল্প পরিচালক-১ মোহাম্মদ সেলিম সরকার। কর্মশালায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ ফিরোজ শাহ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খানসহ বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক-গবেষক ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ গ্রহণ করেন।-তথ্য বিবরণী