শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন

জাতীয় ভোটের সময় ও তফসির পেছানোর ইঙ্গিত ইসির

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩

জি এম শাহনেওয়াজ ঢাকা থেকে ॥ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ও ভোটের সময় পেছানোর ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। নিবাচন কমিশনের (ইসি) একাধিক সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সঙ্কট তৈরি থেকে চাপ, সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও অবাদ ভোট আয়োজনে বিদেশিদের নানামূখী চাপ এবং দেশীয় নানামহলের চাপ ইসিকে একতরফা তফসিল ঘোষণার অবস্থানে পরিবর্তন আনতে এক রকম বাধ্য করা হয়েছে। ইসিসহ নানামহল বলছে, বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ভোট থেকে ব্যতিক্রমি পরিবেশ বিরাজ করছে দেশে।
বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের একক ইচ্ছে নয়, দেশের সাধারণ মানুষসহ বিদেশি রাষ্ট্রগুলোও বাংলাদেশে সুষ্ঠু ভোট দেখতে তৎপর। নানা সমীকরণ কষে ইসির কঠোর অবস্থান থেকে একটু একটু করে সরতে শুরু করেছে। ইসির নিভরযোগ্য সূত্র বলছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পযবেক্ষণ করতে আসতে ইচ্ছুক বিদেশি সংস্থাগুলো ইসির ভুমিকা ও নিবাচনের পরিবেশ দুটি নিয়েই প্রশ্ন তোলে। জুলাইয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর প্রাক- পযবেক্ষক দল এবং অক্টোবরের ১০ তারিখটা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এনডিআই ও আইআরআই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। সবাইর একটাই চাপ অংশগ্রহণমূলক নিবাচন আয়োজনের। কিন্তু কমিশন এসব দাবি অগ্রাহ্য করে নিবাচনে কে এলো না এলো এসব বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একতরফা তফসিল ঘোষণার দৃড়-অবস্হান নেয়। কিন্তু হঠাৎ রণভঙ্গে ইসি। রবিবার (২৩ অক্টোবর) কমিশন সচিব বিদেশী পযবেক্ষক সংস্হাকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় আসার আহবান জানিয়ে পত্র দিয়েছে। ওই চিঠিতে, ভোটের সময় নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং ভোটের সময় মধ্য জানুয়ারি সম্ভাব্য সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। এতোদিন তফসিল নভেম্বরের এক -থেকে দশ তারিখের মধ্যে এবং ভোট ডিসেম্বরের শেষ অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট সম্পন্নের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। সূত্র বলছে৷ এক তরফা ভোট আয়োজন করলে নানা মহলের সমালোচনার মুখোমুখি হতে পারে কমিশন। কোনো একপক্ষকে খুশি করে জাতীয় বেইমানের তকমা লাগতে পারে ব্যক্তি কমিশনের। আবার বিএনপিবিহীন নিবাচনও আন্তর্জাতিক মহলে কম গ্রহণযোগ্যতা পেতে পারে। এসব নানা ভাবনা থেকেই একটু সময় দিয়ে হলেও সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে তৎপর কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন। মন্তব্য কোড না করার শতে একজন নিবাচন কমিশন সোমবার জানিয়েছেন, তফসিল ও ভোটের সময়ে পরিবতন আসছে। সম্ভাব্য সময়ের বিষয়ে ইঙ্গিত করে আমলা থেকে নিবাচন কমিশনার বলেন, ভোটের সময় পিছিয়ে মধ্য জানুয়ারির মধ্যে করা এবং নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের পর তফসিল। বিদেশি পযবেক্ষকদের লেখা কমিশন সচিবের চিঠিতে ওই সময়ের কথা উল্লেখ রয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। কমিশনের শীর্ষ দুজন ব্যক্তির বক্তব্যের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে। এদিকে আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপি ঢাকায় বড় শোডাউন করার কমসূচি ঘোষণা করেছে। এটাকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’দলের মধ্যে বিরাজ করছে চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠা। সাধারণ মানুষও ওই কমসূচির দিকে নিবদ্ধ দৃষ্টি। ওইদিন কি ঘটতে যাচ্ছে দেশে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বড় দু’দল চায় তফসিল বিলম্বে ঘোষণা হোক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দল হিসেবে কিছুটা সুসংগঠিত থাকলেও তাদের দলীয় কমীদের কিছুটা নেতিবাচক কমকান্ড সাধারণ মানুষ থেকে কিছুটা দূরে আছে। এই দুবলতা কাটাতে তফসিল ঘোষণার আগ পযন্ত কিছু উন্নয়ন মূলক প্রকল্প উদ্বোধন করে আস্হায় ফেরানো মানুষকে। অপরদিকে দশ নভেম্বরের পর তফসিল হলে ভোটের মাঠে আরও সুশৃঙ্খলভাবে নামতে পারবে দলটি। ফলে তফসিল ও ভোটের সময় পেছানোর মাধ্যমে সবাইকে নিয়ে একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে সক্ষম হবে ইসি। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে। আগামী ২৯ জানুয়ারি এই সংসদের ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হবে। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে, সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। সে অনুযায়ী, আগামী পহেলা নভেম্বর থেকে নির্বাচনের ণগননা শুরু হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com