সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

জামিনে মুক্তি পেলেন টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী

দৃষ্টিপাত ডেস্ক :
  • আপডেট সময় রবিবার, ১১ মে, ২০২৫

এফএনএস বিদেশ : গ্রেপ্তারের প্রায় ছয় সপ্তাহ পর লুইজিয়ানার একটি অভিবাসী আটককেন্দ্র থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুমিয়াসা অজটুর্ক। এ সময় তার মুক্তির জন্য কাজ করেছেন কিংবা সমর্থন দিয়েছেন, এমন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার তাকে মুক্তির আদেশ দেন একটি ফেডারেল আদালত। ছাড়া পাওয়ার পরদিনই গত (শনিবার) বোস্টনে ফিরে এসেছেন রুমিয়াসা। ৩০ বছর বয়সী রুমিয়াসা তুরস্কের নাগরিক। তিনি টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের পিএইচডি গবেষক ছিলেন। গত শনিবার বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের রুমিয়াসা বলেন, ‘অত্যন্ত কঠিন একটি সময় অতিবাহিত করার পর লেখাপড়ায় ফিরে যেতে চাই।’ ‘গত ৪৫ দিনে আমার স্বাধীনতা ও শিক্ষা দুটিই হারিয়েছি আমি। তবে যারা আমাকে সমর্থন, সহায়তা কিংবা এই খারাপ সময়ে খোঁজ নিয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ’-বলেন তিনি। এর আগে গত ২৫ মার্চ ম্যাসাচুসেটসের সামারভিলে নিজের বাসা থেকে বের হলে তাকে অনেকটা ‘অপহরণের’ কায়দায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তার ঘনিষ্ঠরা। অ্যাসোসিয়েটস প্রেসের (এপি) ভিডিওতে দেখা যায়, মুখঢাকা সাত ব্যক্তি তাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন তিনি চিৎকার করছিলেন। এরপর তাকে নিউ হ্যাম্পশায়ার ও ভার্মন্টে নিয়ে যান ম্যাসাচুসেটসে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। পরে লুইজিয়ানার বাসিলের একটি আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয় রুমিয়াসাকে। তার ভিসাও বাতিল করা হয়। পরে তার আটকের বিরুদ্ধে মামলা করেন রুমিয়াসা। মামলাটি বর্তমানে ভার্মন্টের বার্লিংটনে ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ উইলিয়াম সেশন্সের কাছে বিচারাধীন রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, গত বছর ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধ সম্পর্কে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে আরেকজন লেখকের সঙ্গে মিলে একটি কলাম লিখেছিলেন তিনি। একারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে সাংবিধানিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতার ভয়াবহ লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করেন রুমিয়াসা। রুমিয়াসার এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার দাবির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তুরস্কের এই শিক্ষার্থী জানান, তিনি আদালতে তার মামলা চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি আমেরিকার ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় ওপর তার ভরসা রয়েছেন বলেও মত দেন তিনি। এদিকে রুমিয়াসার জামিনের খবরে উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেন ম্যাসাচুসেটসের ডেমোক্র্যাট সিনেটর এড মার্কি। তিনি বলেন, ‘এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তোমাকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত রুমিয়াসা। তোমার লড়াই আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষকে গর্বিত করেছে।’ এর আগে জামিন শুনানিতে ভিডিওর মাধ্যমে উপস্থিত হয়ে নিজের হাঁপানির সমস্যা বাড়ার কথা এবং সোশ্যাল মিডিয়া ও শিশুদের নিয়ে তার ডক্টরেট সম্পন্ন করার কথা জজকে বর্ণনা করেন তিনি। পরে কোনো ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই তাকে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন জজ সেশন্স। তিনি বলেন, রুমিয়াসা সমাজের জন্য কোনো ঝুঁকি নন। তাছাড়া তার পলায়নের ঝুঁকিও নেই। তবে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) পরামর্শে মুক্তির শর্তাবলিতে যেকোনো পরিবর্তন আনতে পারেন জজ। সেশন্স বলেন, একটি কলাম লেখা ছাড়া রুমিয়াসারর গ্রেপ্তারের কারণ হিসেবে অন্য কোনো প্রমাণ দেয়নি সরকার। এছাড়া তার অভিবাসনের বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য ই-মেইল পাঠানো হলেও তার কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। গত বছর ফিলিস্তিনি গণহত্যা স্বীকার করতে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত কোম্পানিগুলো থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করার আবেদন জানিয়েছিল টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করে ক্যাম্পাস পত্রিকা ‘দ্য টাফটস ডেইলিতে’ কলাম লেখেন রুমিয়াসাসহ চার শিক্ষার্থী। সূত্র: ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2013-2022 dainikdristipat.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com