এফএনএস স্পোর্টস: ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর। বাংলাদেশের ক্রিকেটে নেমে আসে ঘোর অমানিশা। জুয়াড়ির তথ্য গোপনের অভিযোগে এমন একজন ক্রিকেটারকে নিষিদ্ধ করে আইসিসি, যাকে বলা হয়- ‘বাংলাদেশের জান সাকিব আল হাসান’! ভারতীয় জুয়াড়ির থেকে প্রস্তাব পেয়েও তা আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিট আকসুকে না জানানোয় তাকে দুই বছর (এক বছর স্থগিতসহ) নিষিদ্ধ করা হয়। তিন বছর পর সেই সাকিব ফের আলোচনায় আসলেন জুয়াকে কেন্দ্র করেই! স¤প্রতি ‘বেটউইনার নিউজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ‘অফিসিয়াল পার্টনারশিপ’-এর চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন সাকিব। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এই সংক্রান্ত পোস্টও করা হয়েছে। সাকিবের সঙ্গে চুক্তির কথা নিশ্চিত করেছে ‘বেটউইনার নিউজ’ নামের ওই ওয়েবসাইটটি। এমনিতে ‘বেটউইনার নিউজ’ খেলাধুলার সংবাদবিষয়ক ওয়েবসাইট হলেও এটি মূলত ‘বেটউইনার’ নামের একটি বেটিং কম্পানির সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এ কারণেই বিষয়টি নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে তীব্র উত্তেজানার সৃষ্টি হয়। ভক্তদের প্রশ্ন, যেহেতু বাংলাদেশে জুয়া নিষিদ্ধ এবং সাকিব জুয়া সংশ্লিষ্ট কারণে নিষিদ্ধও হয়েছিলেন, তাই সাকিব কেন এমন একটি কম্পানির শুভেচ্ছাদূত হবেন? প্রশ্নটি তুলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারাও। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে বিসিবি। তদন্তে চুক্তির প্রমাণ মিললে সাকিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন গতকাল বলেছেন, ‘সাকিবের সঙ্গে কথা বলে দেখি। বাংলাদেশের আইনও এটির অনুমোদন দেয় না। অবশ্যই সিরিয়াস একটি ইস্যু। এটি সত্যি হয়ে থাকলে যা যা করার দরকার, করব আমরা। ‘বিসিবি সভাপতি নিশ্চিত করেছেন যে, সাকিব এই কম্পানির সঙ্গে চুক্তির আগে বিসিবির অনুমতি নেয়নি। কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সাকিব চুক্তি করেছেন কিনা, সেটা তারা নিশ্চিত হতে চান। শুধু ফেসবুক পোস্টে ভরসা রাখছে না বোর্ড। ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হতেই বাংলাদেশ থেকে বেটউইনারের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না, কারণ সেটি ব্লক করা। সাকিব এমন একটা সময়ে বেটিং সাইট নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন, যখন তাকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করার কথা ভাবা হচ্ছে। কিছুদিন আগে তিনি টেস্ট অধিনায়কও হয়েছেন। এর আগেও টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হওয়ার পরপরই জুয়াড়ির তথ্য গোপন করে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন সাকিব। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাকিব নিষিদ্ধ হয়েছিলেন মোট ৪ বার। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে চলার সময় টিভি ক্যামেরায় অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হন সাকিব। একই বছর তখনকার প্রধান কোচ চন্দিকা হাতুরুসিংহের সঙ্গে বাজে ব্যবহারের জন্য সাকিবকে ৬ মাস নিষিদ্ধ করা হয়। এরপরই ২০১৯ সালের সেই লজ্জার ঘটনা। গত বছর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে মেজাজ হারিয়ে ফের তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। এবার বিসিবির তদন্তের পরই জানা যাবে, সাকিবের ভাগ্যে কী আছে।